কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, কুড়িগ্রাম সদর ও নাগেশ্বরী এই তিন উপজেলার মোট ২৭ ইউপির তৃতীয় ধাপের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়ে। রোববার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল চারটা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহন। পরে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে আওয়ামীলীগ ১০ বিএনপি সমর্থিত ৬ জাপা ৫ ই,আ,১ ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪ জন প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। একটি ইউনিয়নের ফলাফল ঘোষনা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্হগিত রয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিস সুত্রের তথ্যমতে কুড়িগ্রাম সদরের ৮ টি ইউনিয়নের মধ্যে কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর একজনের প্রার্থীতা অবৈধ ঘোষণার পর ভোটের দুদিন আগে ওই ইউনিয়নের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থী রেদওয়ানুল হক দুলাল। পরে আব্দুল হক তার প্রার্থীতার বৈধতা নিয়ে আদালতে যান। আদালতে বিষয়টি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি বলে জানা গেছে।
সদরের বাকি ৭ ইউনিয়নের মধ্যে বেলগাছা ইউনিয়নে আ.লীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থী লিটন মিয়া। মোগলবাসা ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী এনামুল হক। পাঁচগাছি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা মার্কার প্রার্থী আব্দুল বাতেন সরকার। হলোখানা ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী লাঙ্গল মার্কার রেজাউল করিম। ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুর রহমান এবং ঘোগাদহ ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মালেক বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতিপুর এলাকার ঝুনকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোমবার পর্যন্ত উদ্ধার না হওয়ার ওই ইউনিয়নের ফলাফল এখনও ঘোষণা করেননি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এদিকে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী হাসেন আলী, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী হারুণ-অর-রশিদ, ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী শেখ ও বড়ভিটা ইউনিয়নের নৌকা মার্কার প্রার্থী আতাউর রহমান মিন্টু। শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের মোটরসাইকেল মার্কা আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র শরিফুল ইসলাম সোহেল ও কাশিপুর ইউনিয়নের মোটরসাইকেল মার্কা আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মানিক নির্বাচিত হয়েছেন।
নাগেশ্বরী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে একটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ শে ডিসেম্বর। অনুষ্ঠিতব্য ১৩ ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন আওয়ামীলীগ থেকে
প্রথমবারের মতো ইভিএম ভোটে সন্তোষপুরে টানা তৃতীয়বার আওয়ামীলীগীগ মনোনীত প্রার্থী লিয়াকত আলী লাকু, রামখানায় জাতীয়পার্টির জালাল উদ্দিন, রায়গঞ্জে আনারস প্রতীক নিয়ে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুজ্জামান দীপ মন্ডল, বামনডাঙ্গায় আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান রনি, বেরুবাড়িতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সোলায়মান আলী, কালীগঞ্জে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে বিএনপি সমর্থিত রিয়াজুল হক প্রধান, ভিতরবন্দে আনারস প্রতীক নিয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও বিএনপি সমর্থিত শফিউল আলম শফি, নুনখাওয়ায় আওয়ামীলীগের আমিনুল ইসলাম, হাসনাবাদে জাপার নুরুজ্জামান সরকার, নারায়নপুরে চশমা প্রতীক নিয়ে রংপুর মহানগর বিএনপি সদস্য বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, কেদারে জাপার আ.খ.ম ওয়াজেদুল কবির রাশেদ, কচাকাটায় জাপার শাহাদৎ হোসেন মন্ডল, বল্লভেরখাস ইউনিয়নে চশমা প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি
আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এস.এম আব্দুর রাজ্জাক বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
উল্লেখ্য ৩য় ধাপের নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ২৭ টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১৩৬ জন প্রার্থী। সাধারণ সদস্য পদে ৬শ ১৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯শ ২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বতা করেন।
উক্ত নির্বাচনে ৩ উপজেলায় ২৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৫ লাখ ৬০ হাজার ৭শ ৪১ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৮০ হাজার ৮শ ২জন এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৭৯ হাজার ৮শ ৩৯ জন। ২৭টি ইউনিয়নের মোট ২শ ৮৬টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।
###
