কোনো বিশেষ অঞ্চল নয় সারাদেশেই সুষম উন্নয়ন হচ্ছে: এলজিআরডি মন্ত্রী

আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০২১
0

কোনো বিশেষ অঞ্চলকে গুরুত্ব না দিয়ে সারাদেশেই সমভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি আজ পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন বোদা-ভাউলাগঞ্জ সড়কের জিসি সড়কের ১৪৭৭৫ মিটার চেইনেজে করতোয়া নদীর উপর আউলিয়া ঘাটে প্রস্তাবিত Y ব্রিজের স্থান পরিদর্শন উপলক্ষে মাড়েয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন সবজায়গাতেই করতে হবে। কাউকে বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন নয়। মন্ত্রী হলে নিজ এলাকায় উন্নয়ন বেশি হবে আর অন্য এলাকায় কম হবে এই নীতিতে আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে না। মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্যানিটেশন ও পানিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের উন্নয়নের সুফল যেমন সকল মানুষ পাবে। তেমনি সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে উন্নয়নের কর্মকান্ড শামিল হতে হবে।এ উন্নয়নের ফল ধনী-গরীব, কৃষক-শ্রমিক, রিক্সাচালক-কুলি সকল শ্রেণী পেশার মানুষ উন্নয়নের সুফল সমানভাবে ভোগ করবে। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ দেশটা সকলের। তাই সবার সহবস্থান নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

করতোয়া নদীর উপর আউলিয়া ঘাটে খুব শিগগিরই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ব্রীজ নির্মিত হলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিশাল পরিবর্তন আসবে। মানুষের বহুদিনের দুঃখ-দূর্দশা লাঘব হবে।

দেশের সকল খাতে সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্য তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার পাশে দেশের জনগণ আছে বলেই বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা বাধানোর মাধ্যমে দেশে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

মো. তাজুল ইসলাম জানান, বিএনপি’র পাশে এখন আর জনগণ নেই। জনগণের ভয়ে গুন্ডা-পান্ডা নিয়েও তারা মাঠে নামতে পারছে না। ক্ষমতা থাকা অবস্থায় নিজেদের আখের গোছানো ছাড়া দেশ ও মানুষের জন্য কিছুই করেননি। সেকারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন তারা নতুন ফন্দি করছে। ধর্মকে পুঁজি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

মন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে বাঙালি জাতি আর ভিক্ষুক-মিসকিনের জাতি হিসেবে পরিচিতি পায় না। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে। উন্নয়নের রোল মডেলে রুপান্তরিত হয়েছে।

আলোচনা সভায় রেল মন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মাজহারুল হক প্রধান, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে পঞ্চগড় জেলার সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভাগীয় উন্নয়ন পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

দেশের জিডিপি বৃদ্ধি, ফরেন রিজার্ভ, রেমিট্যান্স ও মাথাপিছু আয়সহ অর্থনৈতিক সূচকে অগ্রগতি চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। এটি কাল্পনিক কোনো কথা ছিলো না। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা তা প্রমাণ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক প্রচেষ্টার ফলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেল মন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় জেলা সফর করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উন্নয়ন বাস্তবায়নে সহযোগিতা কামনা করেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভাগীয় সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে, সকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এসময় মন্ত্রীকে বিজিবির পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।