গণতন্ত্রের প্রতি সরকারের নূ্ন্যতম আস্থা নাই — ডা .জাফরুল্লাহ চৌধুরী

আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২১
0

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের দায় আমলাদের। মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্টরি পরিদর্শক যে বিভাগ আছে তারা কী করেছে? তাদের তো উচিত ছিলো ওই ফ্যাক্টরিতে সকল নিয়ম মানা হয়েছে কী-না, তাদের লাইসেন্স আছে কী-না এবং ফায়ার এক্সিট আছে কী-না, সর্বপরি ফ্যাক্টরি চালানোর অনুমোদন আছে কী-না এসব দেখা।

তিনি বলেন, সব থেকে মজার ব্যাপার হলো এই অগ্নিকাণ্ডে যাদের অবহেলায় হয়েছে এবং যারা এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে পরোক্ষভাবে দায়ী তাদেরই জয়েন সেক্রেটারিকে এই ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এই তদন্ত কিমিটির থেকে আমরা কী আশা করতে পারি?

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিতি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক হত্যা এবং সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ ’নাগরিক সংবাদ সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়।

গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত।

উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি যদি সরকারের ন্যূনতম নাই ।যদি আস্থা থাকতো তাহলে একজন সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ কিংবা সাংবাদিকদ অথবা বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে এই তদন্ত কমিটি গঠন করত। যারা নিরপেক্ষ হবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতেন।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, একটা বড় ট্রাজেডি ঘটার আগে কেউ দেখে না। যখন খবর এসে যায় তখন আমাদের সরকার বলে ওমুকে দোষ, তমুকের দোষ। একজন আরেকজনকে দুষছেন।

নারায়ণগঞ্জের রুপঞ্জের অগ্নিকাণ্ডের কতজন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে তা যথাত্যভাবে প্রকাশ করা দাবি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বলা হচ্ছে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডিএনএ ও অন্যান্য আলামত দেখে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়ছে। স্থানীয়দের দাবি সেখানে আরো অনেক বেশি শ্রমিক মারা গেছে।

তিনি বলেন, প্রত্যেক মৃত শ্রমিকের শ্রমিকের পরিবারের ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের একটা মানদন্ড তৈরির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণের যে মানদণ্ড আছে তা পরিবর্তন হওয়া দরকার। ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হবে কোনো শ্রমিক যদি কর্মক্ষেত্রে মারা যান তাহলে তার এক জীবনের আয়ের সমান। মৃত্যুকালীন বয়স থেকে স্বাভাবিক নিয়মে অবসরে সময়কাল পর্যন্ত শ্রমিকের সম্ভব্য যে আয় সেই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হোক নূর বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে নাগরিকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। করোনাকালে যাদের প্রাণ চলে গেছে, এটাকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করা যায়। যার জন্য সরকার দায়ী থাকবে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে করোনাকালিন সময়ে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন বেড়েছে। সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি যে মাদরাসা ও ইসলামি মাইন্ডের মানুষদের বেশি গুম করা হচ্ছে। এটার কারণ আমরা বলতে পারছি না। প্রত্যেকটি গুম-খুনের সঙ্গে রাষ্ট্রিয় বাহিনী জড়িত। যদি রাষ্ট্রিয় বাহিনী জড়িত না থাকে তাহলে তারা খুঁজে বের করুক এই গুম কারা করেছে। তাদের তো এটা দায়িত্ব।