গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকসহ এলাকাবাসীদের।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে বিআরটি প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরে সড়ক ও ড্রেন-সুয়ারেজ লাইনের নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ চলছে। এ ছাড়াও ফ্লাইওভার ও সেতু নির্মাণের কাজও চলছে ঢিলেঢালাভাবে। এ কাজ চলমান থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকা থেকে চান্দনা চৌরাস্তা এবং ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের শিববাড়ি পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কারনে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়ক, সুয়ারেজ লাইন ও ব্রীজ-ফ্লাইওভারের নির্মণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সোমবার রাতের টানা বৃষ্টির কারণে ওই মহাসড়ক-সড়কের গাজীপুর অংশের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস, চৌধুরী বাড়ি, তারগাছ, চেরাগআলী, নলজানী, তিনসড়ক, স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণে চালকদের ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হয়।
আবার কিছু গাড়ি সড়কের উপর বিকল হয়ে পড়ে। এছাড়াও সড়কের উভয়পাশের বিভিন্নস্থানে ফুটপাত না থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে পথচারীরা সড়কের মাঝ দিয়ে চলাচল করেন। ফলে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলতে না পারায় মহাসড়কের উভয়দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ১৪ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে যাত্রীদের তিনঘন্টারও বেশী সময় লেগেছে। অথচ স্বাভাবিকভাবে ওই পথ পাড়ি দিতে আধাঘন্টা সময় লাগে। এতে চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকসহ এলাকাবাসীদের।
পরিবহন শ্রমিকসহ স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিআরটি প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরে সড়ক ও ড্রেন-সুয়ারেজ লাইনের নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ গত কয়েক বছর ধরে শুরু হয়েছে। কিন্তু ঢিলেঢালা ভাবে কাজ করায় তা এখনো শেষ হয়নি। ফলে গত কয়েক বছর ধরেই বর্ষা মৌসুমে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সড়কের বিভিন্নস্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন হয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি ছিটিয়ে কাজ না করায় পুরো এলাকা ধুলোয় আচ্ছন্ন থাকে। এতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান জানান, সোমবার রাতের টানা বৃষ্টির কারণে মহাসড়ক ও সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে না পারায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং বিকেল পর্যন্ত তা অব্যহত রয়েছে।
গাজীপুর সওজ’র উপবিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মো. জামিল আক্তার লিমন ও বিআরটি প্রকল্পের প্রকৌশলী মোস্তফা মুন্সী বলেন, আমাদের লোকজন সকাল থেকেই রাস্তার পানি সরানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বিআরটি প্রকল্পে নালার কাজও সিংহভাগ শেষ হয়ে গেছে। কিছুটা বাকি থাকায় পানি সরানো সম্ভব হচ্ছে না বলে বৃষ্টি হলে সড়ক ও সড়কের পাশে পানি জমে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সাইনবোর্ড থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত সড়কের দুই পাশেই পাইপ বাসানোর অধিকাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি কাজ আগামী ১৫ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার আশা করছি। তখন আর এ এলাকায় পানি জমবে না।