গাজীপুর থেকে অপহৃত শিশু চাঁদপুরে উদ্ধার, অপহরণকারী ও ক্রেতা গ্রেফতার

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
0

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর \ গাজীপুর গার্মেন্টস কর্মী এক দম্পতির শিশু সন্তানকে (১৭ মাস) দেখাশুনা করার (লালন পালন) কথা বলে অপহরণ করে নিয়ে বিক্রি করেছে প্রতিবেশী যুবক। প্রায় ছয় সপ্তাহ পর ওই শিশুকে চাঁদপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশু বিক্রির টাকা নিয়ে পতিতা পল্লীতে ফুর্তি করার সময় অপহরণকারী এবং ক্রেতাসহ দুইজনকে এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার কোদালিয়া এলাকার মোঃ শফিউল আলম ওরফে হকা মিলিটারীর ছেলে শরিফুল আলম লিটন (৪৫) এবং চাঁদপুর জেলার মতলব থানাধীন চর মাছুয়া এলাকার আক্কাছ আলী মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৯)। এদের মধ্যে লিটন ওই শিশুটির অপহরণকারী এবং জাহাঙ্গীর অপহৃত শিশুটির ক্রেতা। অপহৃত শিশু রুহান মোস্তফা (১৭ মাস) রংপুরের হারাগাছ উপজেলাধীন চালকুঠি গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে।

জিএমপি’র সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহে (১ জানুয়ারি) একমাত্র শিশু সন্তান রুহানকে নিয়ে কাজের সন্ধানে গাজীপুর আসেন আজিজুল ইসলাম ও রুলিয়া আক্তার দম্পতি। তারা মহানগরীর বিলাশপুর এলাকার সামাদের বাড়ীতে ভাড়া বাসায় উঠেন এবং স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। একই বাড়ির ওই দম্পতির পাশের ঘরে ভাড়া থাকে অপহরণকারী শরিফুল আলম লিটন পাশাপাশি ঘর হওয়ায় শিশুর বাবা-মা’র সঙ্গে সক্ষ্যতা গড়ে তোলে অপহরনকারী শরিফুল। সুসম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগে শিশু রুহানকে কাছে রেখে দেখাশুনা করার প্রস্তাব গার্মেন্টসকর্মী ওই দম্পতিকে দেয় শরিফুল। শিশুটির বাবা-মা শরীফুলকে বিশ্বাস করে তার প্রস্তাবে রাজী হয়ে মাসিক ৩ হাজার টাকা বেতনে শিশুটিকে দেখাশুনা করার দায়িত্ব দেন।
তিনি জানান, গত ১২ জানুয়ারি সকালে শরিফুলের কাছে শিশুটিকে রেখে তার বাবা-মা নিজেদের কর্মস্থলে চলে যান। এ সুযোগে শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে স্থানীয় দুলালের বাড়ির ভাড়াটিয়া জাহাঙ্গীরের কাছে ৩০হাজার টাকায় বিক্রি করে পালিয়ে যায় শরিফুল। এদিকে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও আজিজুল ও রুলিয়া আক্তার দম্পতি তাদের শিশু সন্তান রুহান এবং শরিফুলের সন্ধান পান নি। বুধবার এ ব্যাপারে তারা পুলিশের সহযোগিতা চান। এরপ্রেক্ষিতে পুলিশ নিখোঁজ শিশুটির সন্ধানে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দঘাট উপজেলার পতিতাপল্লী এলাকা থেকে শরীফুলকে গ্রেফতার করে। সে শিশু বিক্রির টাকা নিয়ে ওই পতিতা পল্লীতে আত্মগোপন করে ফুর্তি করছিল। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ভিকটিম শিশুকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার চরমাছুয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় শিশুটির ক্রেতা জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।