গাজীপুর সিটি নির্বাচন দল থেকে বহিষ্কার হয়েও বিএনপির ১৫ নেতা কাউন্সিলর নির্বাচিত

আপডেট: মে ২৮, ২০২৩
0

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হয়। আর কাউন্সিলর পদে ভোট হয় নির্দলীয় প্রতীকে। তবে কাউন্সিলর পদে নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হলেও জয়ী কাউন্সিলররা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৭টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ৪৪জন ও বিএনপির ১৩ জন জয়ী হয়েছেন। আর ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ১৭ জন ও বিএনপির ২ জন জয়ী হয়েছেন। সবমিলিয়ে বিএনপির ১৫জন জয়ী হয়েছেন। যাদেরকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় গত ১৬ মে মহানগর বিএনপির ২৯ নেতাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বহিষ্কারের এ নোটিশ পেয়ে গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপির সভাপতি হাসান আজমল ভূইয়া গত ১৯ মে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দঁাড়ানোর ঘোষণা দেন। এর পর তাকে নির্বাচনি কোনো প্রচারণায়ও দেখা যায়নি। তিনি নিজেও কেন্দ্রে ভোট দিতে যাননি বলে জানা গেছে। কোনো কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টও নিয়োগ দেননি। এর পরও তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেন। অপরদিকে মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ সরকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। 
পূবাইল থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান বিকি ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে দিগুণ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। ঘুড়ি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৩২ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ২৯৩ ভোট। টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মো. সফি উদ্দিন সফি ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৩৮ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী মঈনুল ইসলাম লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৫৫ ভোট। মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. আবুল হাসেম ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪২৬ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. সেলিম হোসেন রেডিও প্রতীকে পেয়েছেন দেড় হাজার ৬০ ভোট। বহিষ্কৃত পূবাইল থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব সুলতান উদ্দিন আহমেদ ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৬০২ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুস সালাম ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৯০৯ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে রেডিও প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৬০০ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জান্নাতুর রহমান ঘুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ২৪৩ ভোট। গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি মো. হাসান আজমল ভূইয়া লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ১৬ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাহিদ হোসেন ঘুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ২৯ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) মো. হান্নান মিয়া হান্নু ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ২৪ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাহির হোসেন ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৪৯৭ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. মজিবুর রহমান ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৪ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শওকত আলম টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৫৫৭ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. মাহবুবুর রশীদ খান শিবু ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৮২ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ আসাদুজ্জামান ঘুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ২১ ভোট। সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. খোরশেদ আলম রিপন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৪১ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুনজুর হোসেন ট্রাক্টর প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৩৯০ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মোহাম্মদ ছবদের হাসান ২২নম্বর ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৯৮০ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মোশারাফ হোসেন রেডিও প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৭০২ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম ২০ নম্বর ওয়ার্ডে লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৬২৫ ভোট, তার নিকটতম মো. নজরুল ইসলাম ঘুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ২৭২ ভোট। সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মোহাম্মদ শাহীন আলম ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে করাত প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৮৮৮ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদর মেট্রো থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মো. তানভীর আহমেদ লাটিম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৫১২ ভোট। মহানগর শ্রমিক দলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক ফয়সাল আহম্মেদ সরকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহানগর মহিলা দলের বহিষ্কৃত সহসভাপতি কেয়া শারমিন ১৫ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে চশমা প্রতীকে ২৫ হাজার ৭৬৯ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোসা. মর্জিনা আক্তার হেলিকপ্টার প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ২০৪ ভোট। ৭ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে মোসা. রিনা সুলতানা আনারস প্রতীকে ২০ হাজার ৫২৯ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পারভীন আক্তার হেলিকপ্টার প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৭৮ ভোট। ৬ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে তানিয়া আক্তার চশমা প্রতীকে ১২ হাজার ৫৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রোকসানা আহমেদ বই প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৫ ভোট।  

আওয়ামী লীগের যারা কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন ঃ সংরক্ষিত ওয়ার্ড-১, পারভীন আক্তার, সংরক্ষিত ওয়ার্ড -২ মাহমুদা আক্তার, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নং -৩ : ইশরাত জাহান শিল্পী, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নং- ৪ : তাছলিমা নাসরিন, সংরক্ষিত ওয়র্ড নম্বর-৮ : আফসানা আক্তার, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর- ৯ : নাসেরা সুলতানা বেবী, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নং ১০ : মোসা. আয়শা আক্তার, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর-১১ : মোসা. সালেমা খাতুন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর-১২ হাসনা হেনা, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর ১৩ : মোসা. শিরিন আক্তার, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর-১৪ : হোসেনে আরা সিদ্দিকী, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর- ১৫ : ফেরদৌসাী জামান ফিরু, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর-১৬ : হামিদা বেগম, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর-১৭ : সেলিনা আক্তার, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর-১৯ : মোসা. রাখি সরকার।

আওয়ামী লীগের সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলররা হলেন, ওয়ার্ড নং-১ : আব্দুস সালাম আহাম্মেদ আব্বাস, ওয়ার্ড নং- ২ : মো. মনির হোসেন, ওয়র্ডি নং- ৩ মো. শাহীন মোল্লা, ওয়ার্ড নং- ৪ : আতাউর রহমান, ওয়ার্ড নম্বর-৫ : দবির উদ্দিন সরকার, ওয়ার্ড নম্বর-৬ : আসাদুজ্জামান তুলা, ওয়ার্ড নং-৭ : মো. কাউছার আহাম্মেদ, ওয়ার্ড নং-৮ : মো. সেলিম রহমান, ওয়ার্ড নং- ৯ : শফিকুল আমিন, ওয়ার্ড নং-১০ : মো. খলিলুর রহমান, ওয়ার্ড নং-১১ সনজিত সরকার, ওয়ার্ড নং-১২ : আব্বাস উদ্দিন, ওয়ার্ড নং- ১৩ : খোরশেদ আলম, ওয়ার্ড নং-১৪ : এস এম আলতাব হোসেন, ওয়ার্ড নং-১৬ : আবু সাঈদ, ওয়ার্ড নং-১৭ : মো. রফিকুল ইসলাম, ওয়ার্ড নং-১৮ : মো. আবদুল কাদির, ওয়ার্ড নং-২১ : মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন (বাদল), ওয়ার্ড নং-২৭ : মো. জাবেদ আলী জবে, ওয়ার্ড নং-২৯ : শাহজাহান মিয়া, ওয়ার্ড নং- ৩১ : আলমাস মোল্লা, ওয়ার্ড নং- ৩২ : রফিকুল ইসলাম, ওয়ার্ড নং-৩৩ : মিজানুর রহমান, ওয়ার্ড নং- ৩৪ : মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ওয়ার্ড নং-৩৫ : ওসমান গণি কাজল, ওয়ার্ড নং-৩৬ :  মো. ইকবাল হোসেন মোল্যা, ওয়ার্ড নং-৩৭ : মো. রাশেদুজ্জামান জুয়েল, ওয়ার্ড নং-৩৮ : মো. মনিরুজ্জামান, ওয়ার্ড নং-৩৯ : মো. মাসুদুল হাসান বিল্লাল, ওয়ার্ড নং-৪১ : মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা, ওয়ার্ড নং-৪৩ : খালেদুর রহমান রাসেল,  ওয়ার্ড নং-৪৪ : মো. মাজহারুল ইসলাম দীপু, ওয়ার্ড নং ৪৫ : শাহিন আলম রিপন, ওয়ার্ড নং- ৪৬ : মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, ওয়ার্ড নং-৪৭ : মো. হেলাল উদ্দিন, ওয়ার্ড নং-৪৯ : মো. আমির হোসাইন, ওয়ার্ড নং-৫০ : কাজী আবু বক্কর সিদ্দিক, ওয়ার্ড নং-৫১ : মো. আমজাদ হোসেন, ওয়ার্ড নং- ৫২ : মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ওয়ার্ড নং- ৫৩ : মো. সোলেমান হায়াদার,  ওয়ার্ড নং-৫৪ : মো. বিল্লাল হোসেন মোল্লা, ওয়ার্ড নং- ৫৬ : মো. আবুল হোসেন ও ওয়ার্ড নং-৫৭ : মো. গিয়াস উদ্দিন সরকার।