গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক গণসংহতির নিন্দা ও ক্ষোভ

আপডেট: জুন ৭, ২০২২
0

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের অযৌক্তিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই জনজীবনে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার ওপর সরকার আবারো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে। গার্হস্থ্য খাতে শতকরা ৪৫ ভাগ বৃদ্ধি জনগণের উপর অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে সরকার সাধারণ মানুষের স্বার্থকে প্রতিটি ক্ষেত্রে চরমভাবে উপেক্ষা করে চলেছে, এটি তারই আরেকটি উদাহরণ মাত্র।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে আমরা গত কয়েক বছর ধরে বহুবার বলে এসেছি- অলস বসিয়ে রেখে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে সরকার ইতিমধ্য ৭০০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে কিংবা কাতার থেকে আর্থিক মূল্যে এল.এন.জি আমদানি করে যেভাবে গ্যাসের চাহিদা পূরণ করেছে তা পুরোটাই লুটপাট নির্ভর। অথচ সরকার ইতিমধ্যে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস না তুলে, গভীর সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলন না করে যে আমদানিনির্ভর নীতি নিয়েছে যা একটা লুন্ঠন-দুর্নীতি প্রক্রিয়ারই অংশ। প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠনের মাধ্যমে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের যে তৎপরতা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো হবে।

তাই আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ এর নামে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে ভর্তুকি দেয়া বন্ধ করতে হবে। দেশীয় সংস্থাকে আধুনিকায়ন করে তাদের মাধ্যমে সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলন করতে হবে। যা ইতিমধ্যেই পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার শুরু করেছে। এরকম উদ্যোগের ফলে আরও সাশ্রয়ী মূল্যে শিল্প-কলকারখানাসহ গার্হস্থ্য কাজে সরকারের উদ্যোগে দেয়া সম্ভব হতে পারে।

গার্মেন্ট শ্রমিকদের ওপর পুলিশী হামলা, লাঠিচার্জ, গ্রেফতার বন্ধ কর
অবিলম্বে নতুন মজুরী কাঠামো ঘোষণা করতে হবে

এক পৃথক বিবৃতিতে চলমান মিরপুরে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশে ভয়াবহ লুটপাট ও দুর্নীতির মধ্য দিয়েই সরকার দেশের বাজার ও অর্থনীতিকে এ জায়গায় নিয়ে এসেছে । নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সরকারের যেমন দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার আকাক্সক্ষা নেই তেমনি সামর্থ্যও নেই। এখানে সরকার ও সিন্ডিকেট কার্যত একসূত্রে গাথা।” এরকম পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী নি¤œ আয়ের মানুষদের অধাবেলা খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ বাধ্য হয়ে তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন। আজকে মিরপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকরা রাস্তায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। অথচ পুলিশ লাঠিচার্জ, হামলা, গ্রেফতার চালিয়ে এ আন্দোলন বন্ধ করতে চাইছে। মানেটা হচ্ছে সরকার-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শ্রমিকদের ন্যায্য আন্দোলন দমন করতে চাইছেন। ‘কোন ন্যায্য আন্দোলন দমন করা যায় না’- অতীতের এ শিক্ষা থাকলে সরকার কল্পনাবিলাসে ঢুকতেন না, শ্রকিদের ওপরও নির্মমতা দেখাতেন না। অবিলম্বে হামলা, আটক বন্ধ করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, “শ্রমিকদের নায্য দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে নতুন মজুরী কাঠামো ঘোষণা করুন, নতুবা এই শ্রমিক আন্দোলন আরো বৃহত্তর রূপ নিবে।”