গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ : এনসিসি ব্যাংক’র ৫ জনের বিরুদ্ধে গাজীপুরে দুদকের মামলা

আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৩
0

 

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের এক কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অত্মসাতের অভিযোগে এনসিসি ব্যাংক নরসিংদী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপকসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। সোমবার (২৭ মার্চ) দুদকের গাজীপুর ও নরসিংদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী বাদি হয়ে ওই মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি রেকর্ড করেছেন কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সাইদুজ্জামান।

মামলার আসামিরা হলেন নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার কাশিপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ও এনসিসি ব্যাংক নরসিংদী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ, শরীয়তপুর সদরের রথখোলা গ্রামের মোতাহার হোসেনের ছেলে ও সাবেক উপ-ব্যবস্থাপক (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত) ফরহাদ হোসেন, ফেনীর দাগনভুঁইয়া উপজেলার দক্ষিণ নেয়াপুর গ্রামের বজলের রহমানের ছেলে ও এক্সিকিউটিভ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম (বর্তমানে-মাধবদী শাখায় কর্মরত), গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সোনাকর গ্রামের লাইচ উদ্দিনের ছেলে এবং নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাটুভাঙ্গা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে ও সাবেক কম্পিউটার অপারেটর সাইফুর রহমান ও সাবেক অফিসার নাজমুল ইসলাম (বর্তমানে নারায়নগঞ্জ শাখায় কর্মরত)।

দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, গাজীপুরের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী জানান, ওই আসামিরা একে অপরের সহায়তায় প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি, অপরাধমূলক বিশ^াসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অপরাধমূলক অসদাচারণের মাধ্যমে ব্যাংক তথা সরকারের এক কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা দÐবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

তিনি বলেন, অভিযোগের পর দুদকের নির্দেশনায় অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত/সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যসহ সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৭ জানুয়ারী হতে ২০১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, নরসিংদী শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ, উপ-ব্যবস্থাপক ফরহাদ হোসেন ও কম্পিউটার অপারেটর সাইফুর রহমান শাখায় বিভিন্ন গ্রাহকের নামে পরিচালিত বিশেষ সঞ্চয়ী হিসাব বা তাদের অজ্ঞাতসারে অন্যান্য গ্রাহকের হিসাব সংযুক্ত করে অথবা ভূয়া মেয়াদী আমানত জামানত দেখিয়ে ঋণ হিসাব খোলেন অথবা প্রকৃত ঋণ হিসাব সমন্বয় করার পরও হিসাবটি বন্ধ না করে সচল রেখে ভূয়াভাবে এসওডি ঋণের লিমিট মঞ্জুর দেখান। অতঃপর মঞ্জরীপত্র প্রস্তুত, এমনকি মঞ্জুরীপত্র ছাড়াই শাখা ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ, উপ-ব্যবস্থাপক ফরহাদ হোসেন, এক্্িরকিউটিভ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম ও অফিসার নাজমুল ইসলাম গ্রাহকের নামে অথবা অন্য কোন ব্যক্তির নামে প্রতারণা, জালিয়াতি, অপরাধমূলক বিশ^াসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অপরাধমূলক অসদাচারণের মাধ্যমে ২৫ জন ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে মোট এক কোটি ৬০ লাখ ৮৮ লাখ টাকার ৫১ টি পে-অর্ডার ইস্যু করেন। অতঃপর অর্থ আত্মসাতের অসৎউদ্দেশ্যে ব্যাংক ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ বা উপ-ব্যবস্থাপক ফরহাদ হোসেন উল্লেখিত পে-অর্ডারসমূহ একাউন্ট পেইয়ী বাতিল করে ক্যাশে পরিশোধের জন্য ব্যবস্থা করেন। পরিশেষে তা কম্পিউটার অপারেটর মোঃ সাইফুর রহমানের নিকট প্রদান করেন। এতে আসামী সাইফুর রহমান, অফিসার নাজমুল ইসলাম পে-অর্ডারের স্বাক্ষর যাচাইপূর্বক স্বাক্ষর দিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ ও উপ-ব্যবস্থাপক ফরহাদ হোসেন অথবা এক্্িরকিউটিভ অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের নিকট পে-অর্ডারসমূহ নগদায়নের নিমিত্ত উপস্থাপন করলে তারা পে-অর্ডারটি নগদ পরিশোধের নিমিত্ত পাশ করে ব্যাংকের কম্পিউটার অপারেটর সাইফুর রহমানের নিকট প্রদান করেন। অতঃপর কম্পিউটার অপারেটর সাইফুর রহমান পে-অর্ডারের অপর পৃষ্ঠায় নিজেই বিভিন্œ ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে ক্যাশ থেকে নগদে এক কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে পরষ্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন।
###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর