গ্রেফতারের ৫ দিন পরও জামায়াত কর্মীকে আদালতে হাজির না করায় প্রতিবাদ

আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
0

রাজধানীর মগবাজার থেকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আবুল হোসেন রাজনকে গ্রেফতারের ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও আদালতে হাজির না করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো ওই যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘গত ২২ শে জানুয়ারি রোববার দুপুরে রাজধানীর মগবাজার কাজী অফিস লেন থেকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আবুল হোসেন রাজনকে গ্রেফতার করে রমনা থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পরে ২২ জানুয়ারি রাতেই তাকে রমনা থানা থেকে হাতিরঝিল থানায় নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও আবুল হোসেন রাজনকে গ্রেফতারের পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও আদালতে সোপর্দ করা হয়নি। এমনকি পরিবারের পক্ষ থেকে তার বাবা ও স্ত্রী থানায় যোগাযোগ করলে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করে তার কোনো সন্ধান দেয়া হয়নি। অথচ গ্রেফতার আবুল হোসেন রাজনকে থানা হেফাজতে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তার বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতজনদের অফিস ও বাসা-বাড়িতে হানা দিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার ও হয়রানি করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

তারা বলেন, এভাবে বিশিষ্ট ব্যাংকার খলিলুর রহমান ও মাওলানা আবু তাহেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। খলিলুর রহমান ও মাওলানা আবু তাহেরকে আদালতে হাজির করা হলেও রাজনকে এখনো আদলতে প্রেরণ করেনি। এতে আবুল হোসেন রাজনের পরিবার খুবই উদ্বিগ্ন। অপরদিকে ২৪ জানুয়ারি সকালে রাজধানীর বংশাল থানা পুলিশ জামায়াতকর্মী মোহাম্মদ কামরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে তাকেও গ্রেফতারের ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো আদালতে প্রেরণ করা হয়নি। আমরা এই অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন, গ্রেফতারের ৫ দিন পরেও আদালতে প্রেরণ না করা এবং নিরীহ মানুষদেরকে হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে হামলা-মামলা, গ্রেফতার, জুলুম-নিপীড়ন বন্ধ করে জামায়াতকর্মী রাজনসহ গ্রেফতার নিরীহ মানুষদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে সংবিধানের আলোকে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অথচ তারা প্রতিনিয়ত আইন ভঙ্গ করে জনগণের ওপর জুলুম করে চলেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের জনগণ তাদের সংবিধানিক অধিকার হারিয়ে ফেলবে এবং শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। আদালতে হাজির না করে থানা হেফাজতে ২৪ ঘণ্টার অধিক আটক করে রাখা এবং বর্বরোচিত নির্যাতন করার ঘটনা, স্বাধীন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। অথচ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতিনিয়ত এমন কর্মে লিপ্ত হচ্ছেন। মূলত জবাবদিহিতার অভাব ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে তারা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা বারবার ঘটাচ্ছেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এই অমানবিক আচরণ পরিহার করে পূর্ণ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি।

-প্রেস বিজ্ঞপ্তি