চরফ্যাশনে মিঠা পানি ও খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে বন্যপ্রাণী

আপডেট: জুন ২৮, ২০২১
0

মো. সিরাজুল ইসলাম চরফ্যাশন(ভোলা)থেকে
চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা, তেতুলিয়া ও বঙ্গপোসাগর বেষ্টিত দ্বীপাঞ্চলগুলোর ম্যানগ্রোভ বন জোয়ারের লোনাপানিতে তলিয়ে আছে। ফলে খাদ্য ও মিঠাপানির তীব্র সংকটে চরের গরু, মহিষ, ভেড়া ছাগল ও হরিণসহ প্রাণ হারাচ্ছে হাজারো বন্যপ্রাণী। সাগরের লোনা পানিতে বিছিন্ন দ্বীপ ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চরনিজাম, বেশকিছু চরের ম্যানগ্রোভ বাগান ঝড়-জলচ্ছাস ও জোয়ারের প্রভাবে প্রায় সময়ই তলিয়ে যায়।
ফলে বিপাকে পড়ে বন ভোঁদর, শেয়াল, বানর,বিভিন্ন প্রজাতীর গুঁইসাপসহ সরিসৃপ প্রাণী ও চিত্রা হরিণের পাল। বাড়তে থাকা মিঠাপানির এ সংকটে হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী খাদ্য ও মিঠাপানির সন্ধ্যানে চলে আসছে লোকালয়ে। এতে করে প্রতিদিন অসাধু শিকারীদের হাতে মারা পড়ছে হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাতীর বন্যপ্রাণী।
ঘ ূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ২৭জুন চরনিজামের লোকালয়ে আসা দুইটি হরিণ জীবিত উদ্ধার করে বন বিভাগ। নজরুল নগর থেকেও একটি জবাইকৃত হরিণ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী মেঘনার বেতুয়া এলাকায় ভেসে আসে একটি মৃত হরিণ। বনাঞ্চলের এসব বন্যপ্রাণী ও চরের গৃহপালীত গরু,মহিষ ও ভেড়া ছাগলের জন্যে নেই পর্যাপ্ত মিঠাপানির উৎস।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পরবর্তী চরাঞ্চলগুলোতে মিঠাপানির সংকটে মারা যায় কয়েক শতাধীক গরু ও মহিষ। এসব চর ও বনাঞ্চলে ঝড় জলচ্ছাসের সময়ে বন্যপ্রাণী ও গবাদিপশু পাখির আশ্রয় নেয়ার জন্যেও নেই পর্যাপ্ত আশ্রয়স্থল। ভোলা সরকারী কলেজের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের প্রধাণ প্রফেসর মোমেন মিয়া বলেন,বন্যপ্রাণীসহ চরের গবাদিপশুর জন্য বনের মধ্যে স্থায়ীভাবে মিঠাপানির ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অভয়াশ্রম গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় দূর্যোগের সময় বন্যপ্রাণীকে বাঁচানো যাবে না। ঢালচর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার বলেন, এসব চরগুলোতে প্রায় ৭০হাজার গরু ও মহিষ রয়েছে প্রতিবছর এসব চর থেকে বিপুল পরিমাণে দুধ উৎপাদন হয়। এসব এলাকার গরু মহিষ ও ভেড়া ছাগলের জন্য মিঠাপানির পর্যাপ্ত সংকট রয়েছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, লবণাক্ত পানির কারণে গবাদিপশু ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে খামারীসহ গরু মহিষ পালনকারীরা লোকসানে পড়ছে। দ্রুত মিঠা পানির জন্য স্থায়ি ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
ঢালচর বনবিভাগের রেঞ্জার আতিকুল ইসলাম বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বনবিভাগের অধিকাংশই পানিতে তলিয়ে যায়। পানি গুলো লবক্ত। ফলে প্রাণি গুলো লোকালয়ে ছুটে যায়।
ছবি এটার্চ
ক্যাপশনঃ চরফ্যাশনের বিছিন্ন দ্বীপ কুকুরী মুকরি এই ভাবে প্রাণীগুলো মিঠা-পানির অভাবে ছুটা-ছুটি করে।
মো. সিরাজুল ইসলাম
চরফ্যাশন(ভোলা)প্রতিনিধি