চরফ্যাশনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রাণের উচ্ছ্বাস

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
0

মোঃ সিরাজুল ইসলাম,
চরফ্যাশন (ভোলা)প্রতিনিধিঃ

মুখে মাস্ক, চোখে আনন্দের ঝিলিক। মনে উচ্ছ্বাস! এই আনন্দ নিজের অতি প্রিয় ক্যাম্পাসে ফেরার, আবারও ক্লাস করতে পারার।

শুধু যে শিক্ষার্থীদের মধ্যেই এই উচ্ছ্বাস বিরাজমান, তা নয়। বরঞ্চ শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ভাসছেন অন্যরকম এক আবেগে।

দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর(৫৪৪)দিন পর আজ রোববার থেকে চরফ্যাশন উপজেলাসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গেল বছরের মার্চে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর গেল প্রায় এক সপ্তাহ ব্যস্ত সময় পার করেছেন চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা, স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা করা, করোনা বিষয়ক সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানোসহ বিভিন্ন কাজে তারা ব্যস্ত ছিলেন

আজ রোববার চরফ্যাশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরফ্যাশন টিবি স্কুল,নুরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরফ্যাশন সরকারি কলেজ, ফাতেমা মতিন মহিলা কলেজ, নীলিমা জ্যাকব কলেজ, দুলার হাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজ, চরফ্যাশন কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসা, নুরাবাদ হোসাইনিয়া ফাযিল(ডিগ্রি) মাদ্রাসা, আবু বক্কর পুর ফাযিল মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস ঠের পাওয়া গেছে।

মুখে মাস্ক পরে সকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকারা হাতে ফুল নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন শিক্ষার্থীদের। তারা আসার পর ফুল দিয়ে বরণ করা হয় তাদেরকে। একইসাথে মাপা হয় তাদের শরীরের তাপমাত্রা। ব্যবস্থা ছিল হাত ধোয়ারও।

লাইন ধরে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। শ্রেণিকক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদেরকে নতুন ড্রেস পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে দেখা গেছে। এমনকি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একই রঙের নতুন কাপড় পরিধান করতে দেখা গেছে।
আজ চরফ্যাশন কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন পরিদর্শন করেন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও শিক্ষার্থীরা সাস্হ্যবিধি মেনে ক্লাস করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
চরফ্যাশন কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসার(ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুজ্জামান বলেন, ‘উন্মুখ হয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরেছে। সরকারি সব নির্দেশনা মেনে আমরা মাদ্রাসা খুলেছি।’

উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকে ১৬টি নির্দেশনা মেনে ক্লাস চলবে। এ বিষয়ে সকল স্কুলের প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন বলেন, ‘আজকের দিনটি অন্যরকম। এতো দিন শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করেছে। আজ থেকে সবাই সশরীরে ক্লাসে ফিরেছে। তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন সিলেবাস ও রুটিন করা হয়েছে।’

তিনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে তদারকি করা হবে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, আপাতত স্বাস্থ্যবিধি মেনে থেকে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী, পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রতিদিন এবং প্রথম থেকে চতুর্থ ও ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে একদিন ক্লাস নেওয়া হবে।

চলতি বছরের শেষভাগে এসএসসি ও এইচএসসির পাশাপাশি পঞ্চমের প্রাথমিক সমাপনী, অষ্টমের জেএসসি-জেডিস এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।