চরফ্যাশনে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে জমি বিক্রির অভিযোগ

আপডেট: জুলাই ১৭, ২০২১
0
ovijog

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি ॥
চরফ্যাশনে নিলাম জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৬ একর জমি বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ভোলার একটি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে কর্মরত জনৈক মো.ফরহাদ হোসেন’র নেতৃত্বে একটি ভূমিসন্ত্রাসী চক্র এই জালিয়াতির সাথে জড়িত বলে জানাগেছে।

কথিত নিলামের ষাট বছর পর ভূমিসন্ত্রাসী চক্র জামির দখল নিতে প্রকাশ্যে আসার পর জালিয়াতির বিষয়টি জমির মূল মালিকরা জানতে পেয়ে আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন। চরফ্যাশন সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এ বিষয়ে মো. ফরহাদ হোসেনসহ ১৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

জানাগেছে, চরফ্যাশনের সাবেক শশীভূষণ হালে রসূলপুর মৌজার এসএ ৬৬৩ খতিয়ানের ৩৯৭০,৩৯৭১ ও ৩৯৭৫ দাগ এবং দিয়ারা ৭৭২ খতিয়ানের ৪০৭৮ দাগের ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির মূল মালিক ছিলেন সাফিয়া খাতুন। সাফিয়া খাতুনের মৃত্যুর পর ওই জমির মালিক হন তার একমাত্র পুত্র বরিশালের সিএন্ডবি রোডের বাসিন্দা অবসর প্রাপ্ত চিকিৎসক কামরুজ্জামান ও একমাত্র কন্যা পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার হোসনাবাদ গ্রামের গোলাম মোস্তফার স্ত্রী সাহেদ আরা বেগম। মায়ের উত্তোরাধীকার সূত্রে প্রাপ্ত ওই জমি স্থানীয় চাষাদের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছিলেন তারা।

গত ফাল্গুন মাসে শশীভূষণ থানার উত্তর চর আইচা গ্রামের মৃত মো. মোস্তফার ছেলে শাহজাহানের নেতৃত্বে একটিচক্র এই জমি চাষে বাঁধা দেয় এবং মৃত পিতা মো. মোস্তফার উত্তোরাধীকার হিসেবে নিজেদেরকে ওই জমির মালিক বলে দাবী করেন। এই দাবীর পক্ষে মো. শাহজাহানগংরা তিনটি দলিল উপস্থাপন করেন। এই দলিলের সূত্রধরে অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০০০ সনের ২৬ অক্টোবর শশীভূষণ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ২৭৮০,২৭৮১ ও ২৭৮২ নং দলিলমূলে ওই ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির কথিত মালিক হন মো. মোস্তফা। একই দিনে এই তিনটি দলিলের দাতা ছিলেন ভোলার বোরহান উদ্দিন থানার কালমা গ্রামের সামিউল্যাহ মিয়ার ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন এবং দলিল তিনটির পরিচিত দেন চর মানিকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন মোল্লা। মো. ফরহাদ হোসেন বর্তমানে ভোলার একটি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে কর্মরত আছেন এবং রমিজ উদ্দিন মোল্লা এক যুগ আগে মারা যান বলে ¯থানীয় সূত্রে জানাগেছে ।

মো. ফরহাদ হোসেন ১৯৬০-১৯৬২ সনের ৬৬৩ নং নিলাম খরিদ করে ওই জমির মালিকানা অর্জন করেন এবং ১৯৬৪-১৯৬৫ সনের ৭৫ নং দখলনামা ও বয়নামা লইয়া সরেজমিনে ওই জমিতে দখলকার বিদ্যমান থাকিয়া চরফ্যাশন সহকারী কমিশনার(ভূমি)’র আদালতে ১৯৯৪-১৯৯৫ সনের ৬৫৬ নং নামজারী মোকদ্দমার মাধ্যমে ওই জমির সমূদয় অংশ মো. ফরহাদ হোসেন নিজ নামে রেকর্ড প্রাপ্ত হন বলে দলিলের তফসিল সূত্রে জানা যায়।
মৃত পিতা মো. মোস্তফার ছেলে মো. শাহজাহান ৬ একর ৩৯ শতাংশ জমির মালিকানা প্রশ্নে এই প্রতিনিধিকে জানান, তার পিতার নামীয় তিনটি দলিলমূলে তারা এই জমির মালিকানার দাবীদার। া মো. ফরহাদ হোসেন জানান, তিনি তখন ছোট ছিলেন।

তার খালু রমিজ উদ্দিন মোল্লা তাকে ডেকে জমির দলিল দিতে বলেন। খালুর কথায় তিনি তিনটি দলিল দিয়েছেন। তবে তিনি কি ভাবে এই জমির মালিকানা অর্জন করেছিলেন সে সম্পর্কে তার মোটেই ধারনা নেই। জমির দলিল দিলেও অর্থিক লেনদেন তার সাথে হয়নি, হয়েছে রমিজ উদ্দিন মোল্লার সাথ।

মো. সিরাজুল ্ইসলাম
চরফ্যাশন(ভোলা)প্রতিনিধি