চোরের ওপর বাটপারি

আপডেট: মার্চ ২, ২০২১
0

রুদ্র অয়ন

একদিন একদল ডাকাত ব্যাংকে ডাকাতি করতে ঢুকলো। উপস্থিত গ্রাহক আর কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ডাকাতদের বাঁধা দেবার চেষ্টা করলে ডাকাতের সর্দার তখন পিস্তল উঁচিয়ে শূন্যে গুলি ছুড়ে বললো, ‘ভাইসব, টাকা গেলে সরকারের যাবে, আর প্রাণ গেলে যাবে আপনারই । কেউ বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে গুলি করতে বাধ্য হবো। এবার আপনারাই ভেবে দেখুন নিজের জীবন বাঁচাবেন নাকি গুলি খেয়ে মরবেন।’
এই কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলো । কেউ আর বাঁধা দিতে গেলোনা।
ডাকাতদল নির্বিঘ্নে টাকা লুট করে চলে গেলো ।
বাক্স ভর্তি টাকা নিয়ে ডাকাতদল তাদের আস্তানায় গেলো। এক ডাকাত বললো, আমরা কতো টাকা লুট করেছি তা গুনে দেখা দরকার।
ডাকাত সর্দার বলল, ‘ধুর, এতো টাকা গুনতে তো অনেক কষ্ট হবে। একটু পরেই টিভিতে বলবে কতো টাকা লুট হয়েছে ।

এদিকে, ঘটনা শুনে জনৈক মন্ত্রী মহোদয় ব্যাংক পরিদর্শনে গেলেন। সব দেখে শুনে মন্ত্রী ব্যাংক কর্মকর্তাদের গোপনে বললেন : ডাকাতেরা শুধু এক বাক্স টাকাই তো মাত্র নিয়েছে। বেশির ভাগ টাকা তো রয়েই গেছে, আর সেফ ডিপোজিট বক্সগুলোও তো আছে। আসুন ভাইসব, আমরা এসব টাকা কড়ি নিজেদের মাঝে ভাগ করে নিই। কেউ বুঝতেও পারবেনা।
মন্ত্রী মহোদয়ের কথায় সকলেই বেজায় খুশি!
আসলে যে যত উপরে, সে যদি অসৎ হয় তবে তার চুরি ততো বড় এবং তা ধরা ছোঁয়ারও বাইরে।
রাতে টিভিতে সংবাদ এলো, ব্যাংক থেকে পঁচিশ কোটি টাকা সহ হাজার ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট ।
ডাকাতদল খবর শুনেতো মহা ফাঁপড়ে পড়ে গেলো! হাজার বার গুনেও তাদের বাক্সে ১ কোটি টাকার বেশি হলোনা। আর স্বর্ণালঙ্কার তো তারা নেয়-ই নাই!
অবশেষে এক সময় ডাকাতদল ধরা পড়লো, রিমান্ডে গিয়ে স্বীকারও করতে বাধ্য হলো যে তারাই সব ডাকাতি করেছে! সব ডাকাতের সাজাও হয়ে গেলো। যাবজ্জীবন জেল।
এদিকে মন্ত্রী মহোদয়েরতো আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। এই বুঝি সেয়ানে ডিজিটাল চুরি! অবশ্য মন্ত্রী মহোদয়ের ইচ্ছেই ছিলো ভোটে দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় গিয়ে বৈজ্ঞানিক ভাবে ডিজিটাল উপায়ে চুরি করা। ডিজিটাল ধান্দাবাজ চোরদের ধরা সহজ কথা নয়।

অণুগল্প