ডিএনসিসি মার্কেটে চালু হলো ক্যাশলেস লেনদেন ব্যবস্থা

আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩
0

সর্বজনীন কিউআর (QR) কোড ভিত্তিক ক্যাশলেস পরিশোধ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হলো গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেট। মঙ্গলবার (০৭ মার্চ ২০২৩) বিকালে গুলশান নগরভবনে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশের’ উদ্যোগে ডিএনসিসি মার্কেটকে সম্পূর্ণ ক্যাশলেস পরিশোধ ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ও মাস্টারকার্ডের অংশীদারিত্বে সেবা প্লাটফর্ম ‘বাংলাদেশের প্রথম ক্যাশলেস মার্কেট ডিএনসিসি-১, এক কিউআর (QR)- এ সব পেমেন্ট’ শীর্ষক এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ইতিমধ্যে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অনেকগুলো সেবাই এখন অনলাইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের জন্য এবং ট্রেড লাইসেন্সের জন্য এখন আর কাউকে ডিএনসিসির অফিসে যেতে হয় না। অনলাইনেই ঘরে বসে এই সেবা পাচ্ছে নগরবাসী। পর্যায়ক্রমে সকল সেবা অনলাইনের আওতায় আনা হবে। আমরা রিকশার কিউআর কোড ব্যবহার করবো এর ফলে অবৈধ রিকশা চলাচল বন্ধ হবে এবং নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। দ্রুতই স্মার্ট পার্কিংও চালু করা হবে।’

মেয়র বলেন, ‘আসলে এসব সেবাগুলো অনলাইনের আওতায় আনা এতোটা সহজ কাজ নয়। এনালগ পদ্ধতিতে সেবা প্রদানে একটি চক্র কাজ করে। তারা অবৈধ সুবিধা পেতে অনলাইনে সেবা প্রদান করতে চায় না। আমরা অনলাইনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে এ ধরনের চক্রকে অকেজো করে দিচ্ছি। এর মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘আমরা ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ চালু করেছি। এর মাধ্যমে যেকোনো অভিযোগ জানাতে পারবে নগরবাসী এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সেবা দেয়া হবে। আমরা উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেয়র মিলে নগর পরিবহন চালু করেছি। মেট্রোরেলের ই টিকেট ব্যবহার করেই নগর পরিবহনে চরার সুযোগ পাবে জনগণ। আমরা সেটি নিয়েও কাজ শুরু করে দিয়েছি।’

ডিএনসিসির মার্কেটগুলোতে ডিজিটাল বিলবোর্ডে দ্রব্যমূল্যের তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, সেবা প্লাটফর্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান রায়হান শামসি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ক্যাশলেস পেমেন্ট পদ্ধতি:

বর্তমানে অধিকাংশ মার্চেন্ট পয়েন্টে পণ্য বা সেবার মূল্য পরিশোধে Point of Sale (POS) ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে PoS মেশিনে কার্ড প্রবেশ করিয়ে কার্ডধারী গ্রাহক QR ব্যবহার করে লেনদেনটি সম্পন্ন করে। মার্চেন্ট পয়েন্টে ব্যবহৃত POS মেশিনের installation এবং maintenance সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কারণে ব্যাংকসমূহ সাধারণত বৃহৎ ও মাঝারি মার্চেন্টদের PoS সরবরাহ করে থাকে। অপরদিকে, ক্ষুদ্র/অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক পণ্যবিক্রেতাদের জন্য QR -কোড ভিত্তিক লেনদেন ও রক্ষণাবেক্ষণ অধিক সহজ ও নিরাপদ, তাই ব্যাংকসমূহ PoS এর বিকল্প হিসেবে QR কোড (কাগজ বা প্লাস্টিকে প্রিন্টকৃত) সরবরাহ করে ডিজিটাল পরিশোধ ব্যবস্থায় এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। QR কোড-ভিত্তিক লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহক তার স্মার্টফোনে ইস্যুয়িং ব্যাংক/প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহার করে মার্চেন্ট পয়েন্টে প্রদর্শিত QR কোডটি স্ক্যান করে পণ্য বা সেবার মূল্য পরিশোধ করবে। এক্ষেত্রে ইস্যুয়িং ব্যাংক/প্রতিষ্ঠানের অ্যাপে গ্রাহকের নির্বাচিত ব্যাংক হিসাব বা ডেবিট/ক্রেডিট/প্রিপেইড কার্ড বা গঋঝ-ওয়ালেট ডেবিট করে, মার্চেন্টের হিসাব ক্রেডিট করবে। তাছাড়া, ব্যাংক হিসাব ও MFS-ওয়ালেট ব্যবহার করেও লেনদেন সম্ভব হওয়ায় QR কোড-ভিত্তিক পরিশোধ ব্যবস্থায় অধিকতর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়।