ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (DNCC) ও ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (BIGRS) মধ্যে সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

আপডেট: মার্চ ১১, ২০২১
0

আজ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি(BIGRS/বিগ-আরএস) কার্যক্রমের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে সড়ক সংঘর্ষ ও মৃত্যু কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০২৫ সাল পর্যন্ত একটি সহযোগিতা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা সূচিত হয়েছে। সারা বিশ্বে সড়ক সংঘর্ষের অন্যতম প্রধান কারণ, গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে এ কার্যক্রমে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস-এর পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ’র আওতাভুক্ত সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রমের সহযোগী হিসেবেও ডিএনসিসি কাজ অব্যাহত রাখবে। এই আনুষ্ঠানিক ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র জনাব মোঃ আতিকুল ইসলাম ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস-এর প্রতিনিধি কেলি লার্সন এবং অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান। ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এআরআই)-এর প্রতিনিধিরাও সভায় অংশগ্রহণ করেন। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও বিগ-আরএস কার্যক্রমের কারিগরি প্রধান ড. তারিক বিন ইউসুফ ঢাকা উত্তর সিটির সার্বিক সড়ক নিরাপত্তার বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। সড়কে সংঘর্ষ সারাবিশ্বে মৃত্যুর ৮ম প্রধানমৃত্যুর কারণ এবং ৫-২৯ বছর বয়সীদেরমৃত্যুর প্রধান কারণ। বাংলাদেশে৫ থেকে ১৪ বছর বয়সীশিশুদের মৃত্যুর ৪র্থ প্রধানকারণ এটি এবং সংঘর্ষেরশিকার মানুষের ৬৭ ভাগেরবয়স ১৫ থেকে ৪৯ বছরেরমধ্যে। নিরাপদ সড়ক চাই-এর তথ্যমতে, ২০১৯সালে ৪,৫০০-এর বেশিসংঘর্ষে ৫,০০০-এরও বেশিমানুষ নিহত এবং প্রায়৭,০০০ মানুষআহত হয়েছে। বিগ-আরএস কার্যক্রমেরঅংশ হিসেবে ঢাকা উত্তরসিটি কর্পোরেশন বিশ্বের বিভিন্নদেশের সরকার ও নগর কর্তৃপক্ষেরসমন্বয়ে গঠিত একটি নেটওয়ার্কেঅংশ নিয়েছে যেখানে বৈশ্বিকপর্যায়ের সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদেরসহায়তা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এ কার্যক্রমের আওতায় উপাত্ত সংগ্রহও পর্যবেক্ষণ, নিরাপদ সড়ক এবং নিরাপদচলাচল, পুলিশের আইনপ্রয়োগ এবং গণমাধ্যমও যোগাযোগে সহায়তা প্রদান করা হবে। সড়কে প্রাণ সুরক্ষায় তথ্য-উপাত্তনির্ভর ও পরীক্ষিত সমাধানবাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাগুলোডিএনসিসি-কে কারিগরি ও অর্থনৈতিকসহায়তা প্রদান করবে। সহযোগীসংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, ভাইটাল স্ট্যাটেজিস,গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ(জিআরএসপি), ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইন্সটিটিউট (ডব্লিউআরআই), জনস হপকিন্সইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরিরিসার্চ এবং দেশীয় পর্যায়েরসংস্থা (জিএইচএআই/বিশ্ব ব্যাংক/ বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা)। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস-এর প্রতিনিধি কেলি লার্সন বলেন, “সড়ক সংঘর্ষ ও হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি শীর্ষক আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে ঢাকা মহানগরীকে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। সারাবিশ্বে প্রতিবছর ১৩ লক্ষ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষসড়কে নিহত হয়। পরীক্ষিতও উপাত্ত-নির্ভর কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমেএই মৃত্যু সংখ্যার প্রায়পুরোটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রাণ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় এই পদক্ষেপনেয়ায় আমরা মেয়র ইসলামকেসাধুবাদ জানাই। তাছাড়াব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস পার্টনারশিপফর হেলদি সিটিজ-এর অংশ হিসেবে২০১৭ সাল থেকে ঢাকাউত্তর সিটি কর্পোরেশনের সড়ক নিরাপত্তাউন্নয়ন প্রচেষ্টারও প্রশংসা করি।” সূচনা বক্তব্যে ডিএনসিসি মেয়র জবাব আতিকুল ইসলাম বলেন যে, সড়ক নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই এয়ারপোর্ট রোডের কুর্মিটোলায় একটি বেপরোয়া গতির বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ফুঁসে ওঠা শিক্ষার্থীদের সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। শিক্ষার্থীরা সারা দেশের সড়কগুলো দখলে নিয়ে সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে টানা নয় দিন আন্দোলন চালিয়েছিলো। মেয়র বলেন, এ কার্যক্রমের লক্ষ্য হলো ট্রাফিক আইনপ্রয়োগ জোরদার করা, সড়কেরনকশা উন্নত করা,অবকাঠামো নির্মাণ, সড়কে হতাহতের ঘটনার নজরদারি ব্যবস্থা, এবং জনসচেতনতা বাড়াতে ও আচরণ পরিবর্তনে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো।বৃহত্তর সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীতে সড়ক সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য তিনি ডিটিসিএ, ডিএমপি, বিআরটিএ, বুয়েট-এর এআরআই-এর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমি আশা করি আগামী পাঁচ বছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী সড়ক নিরাপত্তা কৌশল ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা আরো বাসযোগ্য, নিরাপদ ও সহিষ্ণু ঢাকা গড়ে তুলতে পারবো। এ আশাবাদ ব্যক্ত করার মাধ্যমে তিনি এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পার্টনারশিপ ফর হেলদিসিটিজ’র পরবর্তী ধাপেরঅংশ হিসেবে সড়ক নিরাপত্তাউন্নয়নে ডিএনসিসি অবকাঠামো উন্নয়নেকাজ করবে। পরিপূরকহিসেবে এসকল কর্মকাণ্ড বিগ-আরএসকার্যক্রমের আওতায় পরিচালিত জীবনরক্ষাকারীকার্যক্রমকে আরো জোরদার করবে। বিগ-আরএস কার্যক্রমেরতৃতীয় ধাপে (২০২০-২০২২) যেসব দেশেরনগর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সেগুলোরমধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, ইথিওপিয়া, ভারত, উগান্ডা ও ভিয়েতনাম। বর্তমান নগরগুলোর মধ্যে আক্রাও কুমাসি (ঘানা), আদ্দিস আবাবা (ইথিওপিয়া), বোগোতা (কলম্বিয়া), ঢাকা (বাংলাদেশ), গুয়াদালাজারা (মেক্সিকো), হ্যানয় ও হো চি মিন সিটি (ভিয়েতনাম), কাম্পালা (উগান্ডা), মুম্বাই, বেঙ্গালুরুও নয়া দিল্লী (ভারত) এবং সাও পাওলো, সালভাদরও রেসিফ (ব্রাজিল)। ২০০৭ সাল থেকেসড়ক নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ব্লুমবার্গফিলানথ্রোপিস-এর বিনিয়োগের ফলে প্রায়৩১২,০০০ জীবনরক্ষা পেয়েছে এবং প্রায়১ কোটি ১৫ লাখ আঘাতেরক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে। বিগত ১২ বছরের সফলতারভিত্তিতে ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতেবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃকসুইডেনের স্টকহোমে আয়োজিত ৩য় গ্লোবালমিনিস্ট্রিয়াল রোড সেফটি সম্মেলনেব্লুমবার্গ

ফিলানথ্রোপিস তাদেরসহায়তা দ্বিগুণ করার ঘোষণাদেয়। সে অনুযায়ী২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে সারাবিশ্বের নিম্ন ও মধ্যমআয়ের দেশগুলোতে আরো ৬০০,০০০ জীবনবাঁচানো ২ কোটি ২০ লক্ষআঘাতের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধে আরো ২৪০ মিলিয়নডলার বরাদ্দ নিশ্চিত করে। সড়ক সংঘর্ষে হতাহতেরঘটনা প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী কার্যক্রমগুলোতে সড়ক নিরাপত্তার প্রধান চারটিঝুঁকির কারণসহ (গতিবেগ, মদ পান করে গাড়িচালানো, হেলমেট না পরা এবং সিট বেল্টও শিশুর সুরক্ষায় বিশেষ আসন ব্যবহারনা করা) প্রধানতম ঝুঁকিহিসাবে গতিবেগ বিষয়ে পরীক্ষিতকার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীবনবাঁচাতে দেশীয় অংশীদারদের সাথেসহযোগিতা স্থাপন করছে বিগ-আরএসকার্যক্রম। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস ইনিশিয়েটিভ অপর গ্লোবাল রোড সেফটি সম্পর্কেব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিসইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (BIGRS) সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং দেশীয় পর্যায়ে সরকারী ও বেসরকারী অংশীদারদের সাথে সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বদানকারী সড়ক নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করে। ইতিবাচক ফলাফল অর্জন এবং অব্যাহত অগ্রগতি পরিমাপের লক্ষ্যে উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতির ওপর বিশের গুরুত্ব দিয়ে থাকে বিগ-আরএস। আরো তথ্যের জন্য দেখুন: https://www.bloomberg.org/program/public-health/road-safety/ পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ সম্পর্কেপার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ অসংক্রামক রোগ (NCDs) ও আঘাতের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধের মাধ্যমে জীবন বাঁচাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নগরগুলোর একটি মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক। ব্লুমবার্গফিলানথ্রোপিস-এর অর্থায়নে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও ভাইটালস্ট্র্যাটেজিস-এর সাথে সহযোগিতারভিত্তিতে এই কার্যক্রমটি উচ্চ প্রভাবসম্পন্ন নীতিমালা বা কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ননগরকে তাদের জনসমাজে অসংক্রামক রোগ (NCDs) ও আঘাতের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। আরো তথ্যের জন্য দেখুন:https://partnershipforhealthycities.bloomberg.org/ ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস সম্পর্কেব্লুমবার্গ ফাউন্ডেশনসারা বিশ্বের ১২০টিরও বেশিদেশের ৪৮০টি নগরীতে যথাসম্ভববেশি সংখ্যক মানুষের জন্যউন্নত ও দীর্ঘজীবন নিশ্চিতকরার লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনাকরে। টেকসই পরিবর্তননিশ্চিত করতে সংস্থাটি পাঁচটিপ্রধান বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েথাকে যেমন, শিল্পকলা, শিক্ষা, পরিবেশ, সরকারী উদ্ভাবনাও জনস্বাস্থ্য। মাইকেল আর. ব্লুমবার্গেরফাউন্ডেশন ও ব্যক্তিগত দানসহতাঁর সকল দাতব্য কর্মকাণ্ডেরব্যয়ভার বহন করে ব্লুমবার্গফাউন্ডেশন। ২০১৮ সালেব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস ৭৬৭ মিলিয়নডলার অর্থ বিতরণ করেছে। আরো তথ্যের জন্য দেখুন: bloomberg.org অথবা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ও টুইটারেআমাদের ফলো করুন।