ঢাকা ও নোয়াখালীতে জুমার নামাজের পর সংঘর্ষ, ১ জনের মৃত্যু চট্টগ্রামে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ

আপডেট: অক্টোবর ১৫, ২০২১
0

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবারই ২২টি জেলায় বিজিবি মোতায়েন করে সরকার। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।এদিকে শুক্রবার ভোর থেকে দেশজুড়ে মোবাইল ফোনে ফোরজি থ্রিজি ইন্টারনেট বন্ধ থাকার পর বেলা চারটার দিকে তা আবার চালু হয়েছে।

ঢাকায় যেভাবে সংঘর্ষ হলো

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের মোনাজাত শেষ হওয়ার আগে এক দল ব্যক্তি শ্লোগান দিতে শুরু করে।

তারা মিছিলসহ বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ মসজিদের গেইটে বাধা দিয়েও তাদের আটকে রাখতে পারেনি। মিছিলকারীরা বের হয়ে পল্টন মোড়ে আসলে সেখানে এবং আরো পরে বিজয়নগরেও বাধা দিয়ে পুলিশ তাদের আটকাতে পারেনি।
পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে তারা অগ্রসর হতে চেষ্টা করলে কাকরাইল মোড়ে তিন দিক থেকে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের ঘিরে ফেলে পুলিশ এবং সেখানেই সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষ চলাকালে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় এবং মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ও শটগান থেকে গুলি ছুঁড়ে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা অলিগলিতে ঢুকে পড়লে পুলিশ সেখানেও তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ছুঁড়তে থাকে।

ঢাকায় সংঘর্ষ

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, টানা ১০/১৫ মিনিট দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে আরও অন্তত আধা ঘণ্টা থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়েছে ওই এলাকায়।

সোয়া দু’টার পর র‍্যাব সদস্যরা এসে পুলিশের সাথে যোগ দেয় এবং এক পর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন হামলায় অন্তত পাঁচ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
নোয়াখালীর চৌমুহনীতে সংঘর্ষ

নোয়াখালী পুলিশের একজন কর্মকর্তা বেলা চারটার দিকে বিবিসিকে জানিয়েছেন যে তখনো তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চেষ্টা করছিলেন।

স্থানীয়রা বলছেন জুমার নামাজের পর ‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে সেখানে মিছিল শুরু হয় এবং মিছিলটি সেখানকার কলেজ রোডে একটি পূজামণ্ডপে হামলা করে।

তবে ওই মণ্ডপের প্রতিমা সকালেই বিসর্জন হয়ে গেছে বলে তখন সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ছিলো না।
পরে মিছিলকারীরা ওই হিন্দুদের কিছু দোকানপাট ও বাড়ি ঘরে হামলা করতে শুরু করলে পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করে।

টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে পুলিশ

হামলার সময় যতন কুমার সাহা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জেলার সহকারী পুলিশ সুপার শাহ ইমরান বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বেগমগঞ্জের ছয়ানি বাজার এলাকার একটি মণ্ডপে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আগুন ধরিয়ে দেয়।

এছাড়া এখলাসপুরে আরও একটি মন্দিরের ভেতরে ঢুকে মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুন নাহার।

চট্টগ্রামে কয়েকটি মন্দিরে হামলার চেষ্টা, প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ

চট্টগ্রামে কয়েকটি মণ্ডপ ও মন্দিরে হামলার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশ গুপ্ত।বিবিসিকে তিনি বলেন জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরীতে মিছিল বের হয় এবং মিছিলের একটা অংশ কয়েকটি মণ্ডপ এলাকায় আক্রমণ করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।