তুমি এলে

আপডেট: মার্চ ২০, ২০২৩
0

এমারান আহমেদ রোজী

তুমি এলে,
এতো দেরিতে,
আমার একমাত্র চাওয়া, সেই ভালোবাসার তুমি।
সেই আসলেই প্রিয়, তবে কেন এতো দেরিতে
সময় যে বয়ে গেলো
অসুস্থ আমি
শরীরে, বাসা বেধেছে, মরণব্যাধি ক্যান্সার।
সোনা রঙে ক্যামথেরাপীর কালো কুচকুচে দাগ পড়েছে,
প্রাণহীন,অনুভ’তিহীন একটি জীবন্ত লাশ।
বেলা শেষে না এলে হয়তো, সমুদ্রের বিশালতায়, বাঁধভাঙা আচঁরে পড়া ঢেউয়ে ভালোবাসা না’য়ে ভেসে যেতে পারতাম,
সীমাহীন আকাশে মেঘের পালকে ভর করে ভেসে বেড়ানো যেতে,
কোনো এক নির্জণ বিকেলে তোমার কাঁধে মাথা রেখে পড়ন্ত বিকেলে পশ্চিম আকাশের সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারতাম,
তোমার শক্ত দু’টি হাতের নির্ভরতায় প্রকৃতির সতেজ নিঃশ্বাস নেয়া যেতো। তুমি-আমি, ভরা পূর্ণিমায় চন্দ্র বিলাসে মেতে থাকতে পারতাম।
জানো প্রিয়তম কত অপেক্ষার প্রহর গুনেছি, কত র্নিঘূম রাত কাটিয়েটি, আমি তোমার অপেক্ষায়,
তুমি কি তবে কখনো ভালোবাসনি আমায়, আমায় নিয়ে কি? বুনোনি কোনোদিন স্বপ্নের জ্বাল।
সময়ে আসতে যদি তুমি,
প্রাণখোলা,আনন্দঘন জীবন কাটানো যেতো।
জীবন যে একটাই, সময়ও আর ফিরে আসে না।
সময়ে আসতে যদি তুমি,
আর কিছু না হোক, জীবনখাতার স্বরলিপিতে এ সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্তগুলো তো স্মরণীয় করে রাখা যেতো।
বুড়ো বয়সে, আমরা দু’জন ধরে রাখা এই সুন্দর মুহূর্তগুলোতে ফিরে যেতাম, আনমনে হাসতাম,
চোখ ভিজে আসতো জলে,
স্মৃতি বেদনার।
সময় ও নদীর ¯্রােত নিষ্ঠুর। সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে এলোমেলো করে দিয়ে চলে যায়, সময়ের লাগাম কেউ টেনে ধরতে রাখতে পারে না, কেউ তাকে থামাতেও পারে না।
বরফের মতো মুহূর্তেই গলে নি:শ্বেষ হয়ে যায়। নিষ্ঠুর এ সময়ই বিধাতার অসীম ক্ষমতার একটি অনন্য নিদর্শন।
মৃত্যু পথযাত্রী আমি,
স্বান্তনা, এতটুকুই
অসময়ে হোক, তবুও তো এসেছো, আমার ভালোবাসার তুমি।
বিদায় বেলায়, আমার কষ্টটুকু
তোমার মনের গর্হিণে আমার অনুপস্থিতিতে নিষ্ঠুর স্মৃতি হয়ে তোমায় কাঁদাবে বলেই হয়তো, বিধাতা তোমায় আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন।
তোমার জীবন থেকে অযতেœ-অবহেলায় হারিয়ে যাওয়া তোমার প্রিয়তমাকে অনুভব করবে।
চোখ ভিজবে জলে,
মানুষ ভুল করলেও বিধাতার খাতায় ভুল বলে কিছু নেই, আছে তাঁর প্রিয় সৃষ্টিকে সংশোধন করার মহা কৌশল।
ভালো থেকো সব সময় প্রিয়তম।
বিদায় বেলায় এই প্রার্থণা রইল আমার।

কবি — সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক আমার দেশ