দর কষাকষি করে লাভ হবে না বিএনপির: কাদের

আপডেট: মে ১০, ২০২২
0

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেছেন, বিএনপির নেতারা ভাল করেই জানেন, দলের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের নির্বাচনে আসতেই হবে৷ তাদের হাতে কোনো বিকল্প নেই। তাই বিএনপিকে বলবো, দর কষাকষি করবেন না। কোনো লাভ হবে না।

মঙ্গলবার (১০ মে) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমন্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দর কষাকষিতে সরকার সংবিধান থেকে লড়বে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে। বিএনপি যেসব কথা বলছে, দর কষাকষির জন্য বলছে।

বিএনপির উদ্দেশ্য তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন, নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের আর কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনে যদি জনগণ আপনাদেরকে ভোট দেন, নির্বাচিত করলে আমরা যদি হেরেও যাই, তারপরও নির্বাচন কমিশনের এই নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে সব সময়।

জনগণকে আস্থায় নিয়ে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল নির্বাচন আমরা করব। জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। বিএনপিকে আমরা বলব, এদিক সেদিক দর কষাকষি না করে, নির্বাচনে আসুন।

কুমিল্লায় এলডিপির মহাসচিব এর উপরে হামলার প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লায় এলডিপির মহাসচিব এর উপরে হামলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব একটি বিবৃতি দিয়েছেন। আমরা প্রথমত বলতে চাই, এ হামলার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবেন। শেখ হাসিনার আমলে কোনো ধরণের অপকর্মকারীদের ছাড় দেননি। এখানেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এতে কোনো সন্দেহ নাই।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ ঘটনাকে অভিযুক্ত করে ফখরুল সাহেব অন্ধ সমালোচনা বিষেদগার করেছেন। স্বভাবসুলভ বরাবরের মতোই। লক্ষণীয় বিষয় হলো এলডিপির মহাসচিব নিজ হাতে আমাদের কৃষক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুজন কর্মীকে গুলিবিদ্ধ করেছেন। তারা এখনো হাসপাতালে। এ বিষয়ে ফখরুল সাহেব একটি শব্দও বলেন নি। পুরোপুরি চেপে গেছেন। এটা কি রাজনৈতিক সততা? এটা কি গণতন্ত্র? এ ধরণের সত্য গোপনের, হত্যা, সন্ত্রাসের রাজনীতি প্রশয় দেন এবং লালনের কাজটি তারা করে আসছেন তাদের জন্মলগ্ন থেকে। ক্ষমতায় থাকা কালেও তারা এটি করেছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব আজকাল সব কিছু এক চক্ষু হরিণের মত দেখেন। না হলে এলডিপির মহাসচিবের গুলি ছোড়ার বিষয়টি তিনি দেখতে পেতেন। তার বিবৃতি জনগণ প্রত্যাখান করেছে। সত্য লুকিয়ে শীবের গীত গাওয়ার জন্য। তিনি বিবৃতিতে আরেকটি বিষয় আবিষ্কার করেছেন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নাকি এগুলোর বিষয়ে ইন্ধন জোগানো হচ্ছে৷

বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের বিষয়ে কাদের বলেন, জনগণের ধারণা ক্ষমতার লিন্সায় বিএনপির মহাসচিব পলিটিক্যাল হ্যালোসিনেশনে ভুগছেন। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হামলার পরিকল্পনা করা, সন্ত্রাস চালানো, গ্রেনেড হামলা, আগুন সন্ত্রাস এসব তাদেরই চর্চা। আওয়ামী লীগ এসব অপচর্চা, অপরাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসের পথ তারাই বেছে নেয়, যারা ব্যালটে আস্থা হারিয়ে বির্বাচন বিমুখ হয়। ষড়যন্ত্র তাদের হাতিয়ার, তারা গণতন্ত্রের পথে না হেটে ক্ষমতায় যেতে চোরা গলি খুজে বেড়ায়। বিএনপির রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখান করেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের পদত্যাগ নয়, সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধিনে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার কমিশনকে সহায়তা করবে। নির্বাচনে সরকারের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। কর্তৃত্ব থাকবে নির্বাচন কমিশনের। সরকারের যে সব ডিপার্টমেন্ট নির্বাচনের বিষয়টা ডিল করবে সবকিছুই তখন নির্বাচন কমিশনের অধিনে চলে যাবে৷ সরকারের নির্দেশনায় তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও চলবে না। তারাও নির্বাচন কমিশনের অধিনে থাকবে৷

‘ফখরুল সাহেব বলেছেন, ইভিএম তো পরের ব্যাপার, আগে পদত্যাগ। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। তারপর নির্বাচন।’ বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএম পরের ব্যাপার কেন? আপত্তি কোথায়? পৃথিবীর বহু দেশে ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে। আপনারা কি নির্বাচনে কারচুপি করতে চান? কারচুপি, জালিয়াতি এড়ানোর জন্যই ইভিএম ব্যবস্থা হচ্ছে। এছাড়া আধুনিক আর কোনো পদ্ধতি নেই, নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতি ঠেকানোর। এখানে আপত্তি কেন থাকবে? পদত্যাগ কেন করতে হবে? কি কারণে, আমরা কি অন্যায় করলাম? আমরা বলতে চাই জনগণের কথা। দেশের মানুষ ১৩ বছর বিএনপি ও তাদের জোটের হাকডাক শুনেছে। কিন্তু পানি ঘোলা করে অবশেষে তারা ডায়লগেও এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। এবারও সেই একই কথা নতুন করে বলছেন।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দলগতভাবে ৩০০ আসনে ইভিএম চায়। নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে৷ তারা যদি না পারে, সেটা ভিন্ন কথা।