দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
0

তেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ১০ সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। চলমান কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করে ঢাকায় মহাসমাবেশ করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের এক বৈঠকে এসব কর্মসূচির বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়। পরে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়।

কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচি সফল করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা। পাশাপাশি দল পুনর্গঠনের কাজও সেরে নিচ্ছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠন এবং জেলা কমিটিগুলোও গঠন করা হচ্ছে। বিভাগের সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে সমাবেশের তারিখ ঠিক করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা নিজেরা আলোচনা করে তারিখ চূড়ান্ত করে কেন্দ্রকে জানাবেন।

একইসঙ্গে তৃণমূলকে আরও চাঙা রাখতে শীর্ষ নেতাদের এলাকায় অবস্থান নিশ্চিত করতে চায় দলটি। এজন্য ঢাকায় অবস্থানরত তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তৃণমূলের থানা-উপজেলা-পৌর-ইউনিয়ন পর্যায়ে চলমান কর্মসূচি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।

তবে ঢাকা,কুমিল্লাহ সহ কয়েকটি জেলায় নতুন করে নেতা-কর্মীদের ওপর মামলা-হামলার কারণে শঙ্কার কথাও জানিয়েছেন তারা। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় ভার্চুয়াল বৈঠক করে দলটির হাইকমান্ড। নীতিনির্ধারকরা জানান, এখনই তারা কঠোর কোনো কর্মসূচিতে যেতে চান না। নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে কর্মসূচির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান।

জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি চলতেই থাকবে। ঘোষিত কর্মসূচি শেষ হলে এরপর আবার নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। এই আন্দোলন চলবে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত।

এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটে নয় বরং জোর করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় ক্ষমতাসীন দল। বিএনপির জনপ্রিয়তা এবং সভা-সমাবেশে বিপুল জনসমাগম দেখে আওয়ামী সরকার হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। এজন্যই তারা বিএনপির শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশকেও বরদাশত করছে না। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট-এই সরকারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে। সরে গিয়ে নিরপেক্ষ একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো আন্দোলনে নামার যে পরিকল্পনা করছে,সেই আন্দোলন যাতে সফল হতে না পারে সে লক্ষ্যেই সারাদেশে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। নতুন করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। সরকার বোঝাতে চাইছে যে, এই দাবিতে মাঠে নেমে কাউকে সংঘবদ্ধ হতে দেওয়া হবে না। অথচ এই দেশে নজির আছে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনই ব্যর্থ হয়নি। সফলতার জন্য সময়টা কম বেশি হতে পারে।’

চলমান কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ের লড়াই করে যাচ্ছি। তবে আমরা গান্ধীবাদী মতবাদে বিশ্বাস করি না আমরাও প্রতিবাদ করতে জানি। সময়ের প্রয়োজনে জ্বলে উঠতে জানি, আমরা প্রতিরোধ করতে জানি। আমাদের অনেক রক্ত ঝরিয়েছে। চৌদ্দ বছরে অনেক প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। অনেককে পঙ্গু করেছে।শেখ হাসিনার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ২২ আগস্ট থেকে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে অন্ধ করেছেন। একটি অভিশপ্ত সমাজ গড়তে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’