দু:সময়ে বেদনার্ত ফিলিস্তিনিদের সাথে সমব্যাথী বাংলাদেশের জনগন ও বিএনপি– মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মে ১৬, ২০২১
0

মুসলমানদের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইবাদতস্থল আল আকসা মসজিদসহ ফিলিস্তিনি বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান থেকে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ইতোমধ্যে অসংখ্য ফিলিস্তিনি হতাহত, আল জাজিরা ও এপি’র ব্যুরো কার্যালয়সহ অগনিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ ফিলিস্তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের বর্বরতম ও অমানবিক ঘটনায় গভীর শোক এবং উদ্বেগ প্রকাশ করে এধরণের নৃশংস সন্ত্রাসী ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে আমি মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসা মসজিদসহ গাজা এবং অন্যান্য এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ ব্যাপক বোমা হামলা ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। ইসরায়েলের এই বর্বরোচিত হামলা বিশে^র কোটি কোটি মুসলমানের অনুভুতিতে চরম আঘাত হেনেছে। শুধু মুসলমান নয়, মানবিক বিবেকসম্পন্ন যেকোন ধর্মের মানুষের মনে এই অমানবিক হামলা তাদের হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। এই হামলা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ফিলিস্তিনিদের এই দুঃসময়ে তাদের বেদনার্ত জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিও সমব্যাথী ও ক্ষুব্ধ।

বিশ্বব্যাপী চলমান অতিমারী করোনার এই কঠিন সময়ে পবিত্র রমজানে শবে কদর, জুমাতুল বিদা ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনসহ এখনও ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের ন্যাক্কারজনক ও নৃশংস হামলা মানবতার বিরুদ্ধে এক জঘন্যতম অপরাধ। এই ঘটনা বিশ^ব্যাপী চলমান বর্বরতার আরেকটি ঘৃন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে। ইসরায়েলের সর্বগ্রাসী এই হামলায় ফিলিস্তিন আজ এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে।

শরণার্থী শিবির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আল জাজিরা, এপিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কার্যালয়-কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না এই সর্বগ্রাসী হামলার ছোবল থেকে। রকেট হামলার মাধ্যমে গণমাধ্যমের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইসরায়েলি সেনাদের নৃশংস হামলার সংবাদ যেন বিশ্ববাসী অবগত হতে না পারে। ইসরায়েলি বাহিনী স্থল ও আকাশ পথে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নারী-শিশু, কিশোর-যুবক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে নির্বিচারে নির্মমভাবে হত্যা করছে। এমন বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসী স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ।

এই শোকাবহ ঘটনার সময়ে বাংলাদেশের জনগণ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করছে। বিএনপি ও বাংলাদেশের জনগণ প্রথম থেকেই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সমর্থন দিয়ে আসছে।

বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সবসময় সোচ্চার ছিলেন এবং এখনও বিএনপি সেই নীতিতে অটল আছে। ইসরায়েলি বাহিনীর এই অমানবিক হামলা ও হত্যাযজ্ঞ ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। আমরা মনে করি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকার ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য ও জন্মগত অধিকার।

তাদের এই অধিকার হরণের ধৃষ্টতা কোনভাবেই সহ্য করবে না বিবেকবান মানুষ ও বিশ^ মুসলিম সম্প্রদায়। এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহ’র ইস্পাতকঠিন ঐক্য এখন সময়ের দাবি। ঐক্যবদ্ধ মুসলিম উম্মাহকে আন্তর্জাতিক ফোরামে এক ও অভিন্ন ভাষায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিদের হামলার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা, হত্যা, নির্যাতন এবং তাদের জমি ও বাড়ীঘর থেকে উচ্ছেদসহ বিভিন্ন স্থাপনা দখল ইসরায়েলিদের নিয়মিত কর্মে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই হামলার নিন্দা জানালেও তা যথেষ্ট নয় বলে বিএনপি মনে করে। ইসরায়েলকে এধরণের হামলা, নৃশংসতা ও উস্কানিমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখাসহ ঘৃন্য ও বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে এবং ইসরায়েলের দখলদারিত্ব থেকে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বাস্তবসম্মত স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে আমরা জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোর আহবান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ইসরায়েলিদের কর্তৃক বোমা হামলায় নিরপরাধ অসংখ্য ফিলিস্তিনিদের হতাহত ও আল জাজিরা, এপিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ব্যুরো কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের ঘটনায় নিন্দা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তাদের শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছে।”