দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি বাবুনগরীর

আপডেট: মে ১৪, ২০২১
0

দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে গ্রেফতারকৃত সব নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সদ্যগঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া ওলামায়ে কেরামের মধ্যে অনেকেই দেশের বড় বড় ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়াতেন। তারা কারাগারে থাকায় সেসব ঈদগাহে আজ তাদেরকে ছাড়া ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের আনন্দের সময় দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম জেলে বন্দি থাকা এটা বড়ই দুঃখজনক বিষয়। হেফাজত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমি সরকারের নিকট উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়ার আহ্বান জানিয়ে আমীরে হেফাজত আল্লামা বাবুনগরী বলেন, আমার পক্ষ থেকে দেশবাসীকে জানাই ঈদুল ফিতরের ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সব মুমিন মুসলমানের জীবনে ঈদুল ফিতর বয়ে আনুক সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি ও সফলতা।

বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক শুভেচ্ছা বাণীতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম ও শাশ্বত ধর্ম ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম রমজানুল মোবারকের রোজা। এই রমজানুল মোবারকে দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর পবিত্র ঈদুল ফিতর হলো মুমিন মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার।

তিনি বলেন, ঈদের দিন হলো মুসলমানদের জন্য আনন্দ এবং খুশীর দিন। শরীয়তের সীমারেখার মধ্যে ঈদের আনন্দ, খুশী উদযাপনে কোনো প্রকার বাধা নেই। তবে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড ও পশ্চিমা অপসংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে ঈদ আনন্দ উদযাপন করা সম্পূর্ণ হারাম।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের এই নাজুক পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে গরীব-দুঃখীরা বড় কষ্টে জীবন যাপন করছে। তাদের ঘরে আজ নেই ঈদের কোনো আনন্দ, খুশির আমেজ। তাই সেসব গরীব-দুঃখী, অসহায়দের মুখে হাসি ফোঁটাতে সমাজের ধনী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, পবিত্র রমজান মাস আমাদেরকে সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, একে অন্যের প্রতি সহনশীল এবং সংযত হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে। রমজান শেষ হলেও রমজানের শিক্ষাকে আমাদের বুকে ধারণ করে সামনের পথ চলতে হবে।

আল্লামা বাবুনগরী আরও বলেন, আজ আমরা যে মুহূর্তে ঈদের খুশি উদযাপন করছি, ঈদকে উপলক্ষ করে নানান আয়োজন করছি ঠিক সেই মুহূর্তে বিশ্বের আনাচে-কানাচে মুসলমানরা অমুসলিমদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তারা শান্তির জন্য হাহাকার করছে। ফিলিস্তিনে পবিত্র রমজান মাসেও মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে ইহুদিবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সন্ত্রাসী সেনারা। পবিত্র আল আকসায় নামাজরত মুসলমানদের উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে শহীদ করা হচ্ছে। মহিলা, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ কেউই তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। আমাদের উচিত ঈদে তাঁদের স্মরণ রাখা। তাঁদের জন্য বেশি বেশি দোয়া করা। সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া।

তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের খুবই প্রয়োজন। মুসলমানদের ঐক্য ছাড়া কখনো কাফের-মুশফিকদের মোকাবিলা করা সম্ভব না। মাহে রমযান ও ঈদুল ফিতর আমাদের ঐক্যের আহ্বান করে, তাই মাহে রমজান চলে গেলেও আমাদের মাঝে যেনো রমযানের শিক্ষা অটুট থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যারা এখনো যাকাত-ফিতরা আদায় করিনি তারা যেনো দ্রুত তা পরিশোধ করে দিই। যাদের সামর্থ্য রয়েছে সমাজের এতিম, গরীব-মিসকিনদের ঈদের পোশাক কিনে দিবো। ঈদের আনন্দ যেনো সবার মাঝে উপলব্ধি হয় সে ব্যবস্থা করবো। ইসলাম যে মানবতার ধর্ম তা আমরা প্রমাণ করে দিব।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আলেম ওলামারাসহ হেফাজতের শত শত নেতাকর্মী আজ কারাগারে। তারা কারাগারে থাকায় তাদের পরিবারে আজ ঈদ আনন্দ বলতে কিছুই নেই। শুধু তাদের পরিবারই নয় বরং ওলামায়ে কেরাম জেলে থাকায় ঈদের এই আনন্দের সময়েও পুরো দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ আজ মর্মাহত, ব্যথিত।