দেশের দলীয় বিচার বিভাগে এখন ন্যায় বিচার পাওয়াটা অসম্ভব–মীর্জা ফখরুল

আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১
0

-দেশের বিচার ব্যবস্থাকে সরকার পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করা হয়েছে, প্রশাসনকে ধবংস করা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ করে ফেলা হয়েছে। এখানে এখন বিচার পাওয়াটা একটা প্রায় অসম্ভব, ন্যায় বিচার পাওয়াটা। কারণ তারা যেখানে প্রধান বিচারপতিকে(সা্বেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা) সেখানে আপনার ১১ বছর সাজা দেয়া হয়েছে।”

‘‘ এটাকে আইনজীবীরা, পুরনো আইনজীবীরা বলছেন যে, এটা কখনই কাম্য হতে পারে না। এটা কখন বিচার ব্যবস্থাকে সন্মানজনক অবস্থায় নেবে না। মানুষের যে আস্থা আছে বিচার ব্যবস্থার ওপরে, সেই আস্থাকে ধবংস করে দেবে, সেটাই দিয়েছে।”

‘আজকে আর কোনো বিচারক সাহস পাবেন না যে, সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে, জনগনকে ন্যায়ের পক্ষে কোন রায় প্রদান করার যেটা সরকার চাইবে না সেই রায় দেয়া তাদের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়াবে।’ -আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে সংকটটা অত্যন্ত গভীর। এই সংকটটা আমাদের অস্তিত্বের। যেটা ৭ নভেম্বরে ১৯৭৫ সালের পূর্বে ছিলো সেই সংকট আজকে এখানে দেখা দিয়েছে।আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভেমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে, আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের যা কিছু অর্জন ছিলো আমরা সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি।”

‘‘ এই যে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট একটা সরকার আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আমাদের সমস্ত অর্জনগুলো ধবংস করে দিচ্ছে। এর হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের সমস্ত মানুষকে নিয়ে, সকল রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে, সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের এই ভয়াবহ সরকারকে পরাজিত করতে হবে এবং এখানে সত্যিকার অর্থেই আইনের শাসন, একটা মুক্ত অর্থনীতি, একটা মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা এবং জনগন যে ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থা চায়, সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের সমস্ত ভালো জিনিসগুলো, শুভ জিনিসগুলো, সুন্দর জিনিসগুলো এই সরকার ধবংস করে ফেলে্ছে। আজকে দেখুন কোথাও নিরাপত্তা নেই। আজকে দেখুন যে, আইন আক্ষরিত অর্থে মানুষের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে।ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করে মানুষের কথা স্বাধীনতার সম্পূর্ণ ভাবে দমন করা হয়েছে। গতকাল আমি দেখেছি, ফটোগ্রাফার কাজল তাকে আবার সিকি্উরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়েছে। চার চার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দেয়া হয়েছে।”

‘‘ অর্থাত ভয় দেখিয়ে, ত্রাস সৃষ্টি করে সমাজে একটা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে মানুষকে কথা বলা, প্রতিবাদ করার যে স্বভাবজাত যে বোধ আছে তাকে ধবংস করে দেয়া হচ্ছে। সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নাই।”

ঢাকা সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুস সালাম,পরিচালনায় সঞ্চালনায় আলোচনা সভা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।