দেশের যুমনা নদী সংকোচিত করার ভয়াবহ ক্ষতিকর পরিকল্পনা বাতিলের দাবী বিএনপির

আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৩
0

পরিবেশ ও জলবায়ুর মারাত্মক ক্ষতিকর ‘যমুনা নদী সংকোচন প্রকল্প’ অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘‘ বাংলাদেশের যুমনা নদী সংকোচিত করবার একটি ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রকল্প নিয়ে গতকাল জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। সভা মনে করে এই প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রকৃতি, জনগনের জীবিকা, জলবায়ুর মারাত্মক ক্ষতি করবে।”

‘‘ এই ধরনের আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি দাবি জানাচ্ছি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ যুমনা নদী সংকোচিত প্রকল্প নামে একটি পাইলট প্রকল্প সরকার করছে। ইতিমধ্যে কিছু টাকাও তারা বরাদ্ধ করা হয়েছে। এটা একটা ভয়াবহ সুইসাইডাল প্রকল্প।”

‘‘ সরকারের সমস্যাগুলো এই জায়গায় যে, যেগুলো প্রয়োজন সেখানে তাদের দৃষ্টি নেই। বুড়িগঙ্গা নদীর দুষণ মুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেই, কোনো প্রকল্প নেই, শীতালক্ষা নদীর দুষণমুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেই, কোনো প্রকল্পন নেই। কোথায় যমুনা নদী একটা আবহামান কাল ধরে হাজার বছর ধরে প্রবাহমান বিভিন্ন নদী সব আবর্জনা নিয়ে গিয়ে তলিয়ে ফেলছে … পলি তৈরি করছে, সেই নদীকে সংকোচিত করতে চায় কার স্বার্থে।”

‘‘ স্বার্থ একটাই। এক নম্বর এই যমুনা নদীকে অকোজো করে ফেলা ও দুই নম্বর হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে তাদের সম্পদ বৃদ্ধি করা। এই প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে জনগনকে পরিস্কার ধারণা দিতে হবে।”

যুমনা নদীর তীর রক্ষা এবং ঝুঁকি প্রশমনে টেকসই অবকাঠামো শীর্ষক যমুনা নদীকে সংকোচিত করার একটি প্রকল্প করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের খরচ ধরা হয়ে ১ হাজার ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

গতকাল সোমবার তদলে তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ এই সরকার বিদ্যুত খাতকে প্রধান দুর্নীতি খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং এখান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে ফেলেছে। একেক জন সিঙ্গাপুরে গিয়ে সিআইপি হচ্ছে, নাম্বার টু, নাম্বার থ্রি হয়ে যাচ্ছে তারা।। এতো বেশি টাকা তারা বাংলাদেশ থেকে লুট করে নিয়ে গেছে।”

বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ফলে জনগনের দুর্ভোগ এবং নিজের উত্তরার ভাড়া বাসায় বিদ্যুতের সম্পর্ট কার্ডের বিলের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘‘ আপনারা বিশ্বাস করেন আমি রীতিমতো হিমহিম খাচ্ছি। আমার ওয়াইফের সাথে ডেইলি কথা হয় যে, বিদ্যুতে এতো পয়সা দেবো কেনো? দিতে হচ্ছে। অবাক হবেন শুনলে কোনো মাসে আমার ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল আসে। আমি এসি খুব কম চলে। বাসায় আমরা দুইজন মানুষ। কি করে মানুষ বাঁচবে?”

‘‘ তাদের(সরকার) তো এসব বিল দিতে হয় না, সরকার দেয়, জনগনের পয়সা থেকে নেয়। আমাদের তো জনগনকে নিজের পকেট থেকে দিতে হয়।”

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণ ‘ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, পায়রা থার্মাল বিদ্যুত কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র ও আদানির বিদ্যুত প্রভৃতি বিষয়ে দেশ যে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করার বিভিন্ন তথ্যচিত্র তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

চলতি অর্থ বছরের ৬ মাসে রেন্টাল ও আইপিপি কেন্দ্রগুলোতে ৭০% উতপাদন বন্ধ থাকার পরেও সরকার ক্যাপাসিটি চার্জের পেছনে ২১৬ কোটি ডলার প্রদান করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল অবিলম্বে ক্ষতিকর রেন্টাল ও আইপিপি চুক্তি এবং আদানির গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুত আমদানি চুক্তি বাতিলের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন উপস্থিত ছিলেন।