দেশে এখন জঙ্গি শাসন চালাচ্ছে আ’লীগ- মীর্জা ফখরুল

আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২১
0

দেশে এখন জঙ্গি শাসন চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী দু:শাসন অব্যাহত রেখে দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে গুম, খুন ও অপহরণ, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাত্রা এতটাই তীব্র মাত্রা ধারণ করেছে যে, দেশে যেন এখন জঙ্গি শাসন কায়েম হয়েছে।

সরকারের দমণ-নিপীড়ণের ধারাবাহিকতায় পাবনা জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান শেখকে গত কয়েকদিন আগে গুম করা হয়, গতকাল তার লাশ উদ্ধার করে জনগণ। এছাড়া ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য হেলাল আহমেদ, হালিম ফকির এবং সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসানকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী দু:শাসন অব্যাহত রেখে দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে গুম, খুন ও অপহরণ, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাত্রা এতটাই তীব্র মাত্রা ধারণ করেছে যে, দেশে যেন এখন জংলী শাসন কায়েম হয়েছে। তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে নিষ্কন্টক করার জন্য বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে গুম ও হত্যার যে সংস্কৃতি চালু করেছে সেটির আরেকজন শিকার হলেন পাবনা জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান শেখ। তাকে ৩১ মার্চ ২০২১ থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বারংবার তার সন্ধানে সহযোগিতা করার আহবান জানানো হলেও তারা তা করেনি। গতকাল ৫ এপ্রিল স্থানীয় জনগণ তার লাশ উদ্ধার করে।

৩১ মার্চ ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য হেলাল আহমেদ ও হালিম ফকিরকে এবং ০৪ এপ্রিল গভীর রাতে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।
সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী তরুণ কন্ঠকে নিস্তব্ধ করতেই বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে গুম করে হত্যার সুদুরপ্রসারী নীল নকশা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে ভোটারবিহীন আওয়ামী সরকার।

প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ জোর করে ধরে রাখতে ক্ষমতাসীনরা এখন আরও বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে। ক্ষমতার দম্ভে আওয়ামী সরকার জুলুম নির্যাতন চালাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে নি:শব্দ ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে শুধুমাত্র দু:শাসন প্রলম্বিত করার জন্য।

এক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করে সরকার। ফলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঠিকানা করা হচ্ছে লৌহ কপাটের ভিতরে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের জরীপ এবং গবেষণায় দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে জনঅধিকার কেড়ে নেয়ার প্রেক্ষাপটে উদার গণতান্ত্রিক সূচক ও নির্বাচন ভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে।

ভয়াবহ দুঃশাসনে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিলুপ্তপ্রায়। দেশে আজ স্বেচ্ছাচারী মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে।
গণতন্ত্র হচ্ছে শান্তি ও সহাবস্থানের পূর্ব শর্ত। প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারলেই আইনের শাসন ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এখন বর্তমান আওয়ামী সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। তারা আর জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না। বর্তমান স্বৈরাচারী শাসকদের পতন ঘটাতে জনগণ এখন আরও বেশী ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে।”
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে পাবনা জেলা যুবদল নেতা শাহজাহান শেখকে গুম-খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।

এছাড়া ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য হেলাল আহমেদ, হালিম ফকির এবং সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসানসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।