দেশে ৬০%র বেশি ক্যাপাসিটি থাকতেও ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানি কেনো — প্রশ্ন মীর্জা ফখরুলের

আপডেট: আগস্ট ১৩, ২০২২
0

বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের বর্তমান অবস্থার জন্য সরকারের ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, আত্মঘাতি চুক্তি ও অপরিনামদর্শী পরিকল্পনা’কে দায়ী করেছে বিএনপি।

একসঙ্গে বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুত ও জ্বালানির দ্রুত সরবারহ বৃদ্ধি(বিশেষ বিধান) আইন, রেন্টাল-কুইক রেন্টাল কোম্পানির চুক্তি বাতিলসহ ১২ দফা পদক্ষেপ তুলে ধরেছে।

শনিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আজকে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি আর হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগনকে।এখন শহরে দুই-তিন ঘন্টা ও গ্রামাঞ্চলে পাঁচ-ছয় ঘন্টা লোডশেডিং জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।”

‘‘ একদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊধর্বগতিতে মানুষের জীবন নাভিশ্বাস উঠেছে, বিদ্যুতের লোডশেডিংজনিত জনদুর্ভোগ মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যুক্ত হয়েছে। মানুষ দিশেহারা হয়ে উঠেছে, চরমভাবে তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।”

ব্যর্থতার জন্য সরকারের পদত্যাগের পুনর্ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা বিদ্যুত খাতের এই বিপর্যয়, রিজার্ভের সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতিতে জনগনের নাভিশ্বাসের দায় নিয়ে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে জনগনই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে।”

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপি মহাসচিব।

‘ক্ষমতায় গেলে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বাতিল’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমাদের আশাবানী হচ্ছে, আমরা বিদ্যুতের এই সমস্যার সমাধান করব। আশারবানীটা বলি- আমরা বিদ্যুত ও জ্বালানি দ্রুত সরবারহ বৃদ্ধি(বিশেষ বিধান) আইনসহ সকল কালা কানুন বাতিল করব। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল করা হবে। স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলত আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে।”

‘‘ চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে। উতপাদনের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুত সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতিদ্রুত স্থাপন করা হবে। বাপক্সে ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। একই সাথে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।”

এছাড়া বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস/পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্য্করী ব্যবস্থা, বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের সকল দুর্নীতি-অনিয়মের সাথে জড়িতদের শাস্তি, জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উতপাদনের ৫০% নবায়নযোগ্য শক্তি নির্ভর জ্বালানি নীতি গ্রহন, বেইস লোড পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত উতপাদন গড়ে তোলা, বৃহত বিদ্যুত উতপাদন কেন্দ্রগুলোর সংস্কার এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঘোষিত ভিশন-২০৩০ তে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

ক্যাপাসিটি চার্জ: গচ্ছা ৯০ হাজার কোটি টাকা

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ ১৯টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে চালুর ২/৩ বছর পরই বন্ধ হওয়ার কথা থাকলে প্রয়োজন ছাড়াই এখনো চালু আছে। বেশ কিছু রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্র উতপাদন না করেও ক্যাপাসিটি ট্যাক্স বাবদ বিপুল অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুত ছাড়াই সরকারকে এই পর্যন্ত ৯০ হাজার কোটি টাকার গচ্ছা দিতে হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব ব্যবসায়ীদের পকেটেই গেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা।গত ১২ বছরে ক্যাপাসিটি ট্যাক্স বাবদ গেছে প্রায় ৮ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। গত তিন বছরেই গেছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা।”

‘‘ ক্যাপাসিটি চার্জ অযৌক্তিক, অনৈতিক, জনস্বার্থ বিরোধী এবং নীতিমতো অপরাধ।”

তিনি বলেন, ‘‘ বিদ্যুতের চাহিদা সঠিকভাবে নির্ধারণ না করে চাহিদার অনেক বেশি পাওয়ার প্ল্যান্টের সাথে চুক্তি করে দুর্নীতি পরায়ন ব্যবসায়ীদের অর্থ লুট করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সরকারের নীতি একটাই তা হচ্ছে জনগনের সম্পদ লুট করে নিজের সম্পদ বৃদ্ধি করা এবং বিদেশে সেই সম্পদ পাচার করা।”

‘অলস কেন্দ্র’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বর্তমানে দেশে মোট বিদ্যুত কেন্দ্রের মাত্র ৪৩% বিদ্যুত ব্যবহার করা হয়। অবশিষ্ট ৫৭% অলস বিদ্যুত বসিয়ে রেখে কেন্দ্রের ভাড়া দেয়া হচ্ছে।”

‘‘ বিদ্যুত না কিনে গত অর্থ বছরে বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা, তার আগে বছর করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। গত অর্থ বছরে এই খাতে ব্যয় হয়েছে ২১ হাজার ৬শ কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ বেড়ে হয়েছে ১৮%। ক্রমেই ক্যাপাসিটি চার্জের বিল বেড়েই যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ এখানেই শেষ নয়। বর্তমানে বাড়তি উতপাদন ক্ষমতার মধ্যে আরো বিদ্যুত কেন্দ্র আসছে। এতে অলস খরচ আরো বাড়বে। বর্তমানে ১৩ হাজার ৩৮৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৫টি কেন্দ্র নির্মাণাধীন। ২০২৬ সালের মধ্যে এসব কেন্দ্র উতপাদনে আসার কথা রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে ৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লা ভিত্তিক উতপাদনে আসতে পারে।”

‘‘ নির্মানাধীন কেন্দ্র গুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতে রয়েছে ৯ হাজার মেগাওয়াট। এই কেন্দ্রগুলোর উল্লেখযোগ্য গ্যাসভিত্তিক। এখনই গ্যাস সংকটে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উতপাদন করা যাচ্ছে না। আগামী ৪ বছরে আরো ১৩ হাজার মেগাওয়াটের কেন্দ্র উতপাদনে এলে বসে থাকার বিদ্যুত কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে। সব মিলে বিদ্যুত না কিনেও অতিরিক্ত টাকা পরিশোধের অংক অনেকগুন বেড়ে যাবে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ বাংলাদেশের বর্তমান জবাবদিহিহীন সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে অলস বিদ্যুকেন্দ্র রেখেছে প্রায় ৬০ শতাংশ। আর বসিয়ে বসিয়ে তাদেরকে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করে যাচ্ছে। এ অর্থ জনগণের অর্থ।এই ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুত খাত দেউলিয়া হচ্ছে।”

‘সরকার টাকা চুরির স্বার্থে মাল্টি ফ্যানান্সিং ইন্সটিটিউটের কম সুদের ঋণ উপেক্ষা করে বর্তমানে পারস্পরিক স্বার্থে উচ্চ সুদের ‘ বাইলেটারাল লোন’ বেশি আগ্রহী’ বলে এর সমালোচনা করেন্ বিএনপি।

সামিট গ্রুপ, এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল, এরদা পাওয়ার হোল্ডিং, ইউনাইটেড গ্রুপ, কেপিসিএল, বাংলা ক্যাট, ওরিয়ন গ্রুপ, হোসাফ গ্রুপ, মোহাম্মদী গ্রুপ, ম্যাক্স গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ ও এপিআর এনার্জি এই কোম্পানি গুলো কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের মাধ্যমে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, ‘‘ এ ছিলো কুইক রেন্টালের নামে কুইক লুটপাট।”

‘ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানি কেনো’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ এদিকে ভারত থেকে বিদ্যুতে কিনতে দিতে হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ। ভারত থেকে বর্তমানে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হয়। এ জন্য গত তিন অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে। আদানি গ্রুপের ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির কথা রয়েছে। বাংলাদেশে যখন প্রায় ৬০ শতাংশ ওভার ক্যাপাসিটি রয়েছে ঠিক সে সময় ভারত থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত আমদানি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”

‘‘ ১৬০০ মেগাওয়াটের আদানি গোড্ডা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র থেকে ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির জন্য বাংলাদেশ বছরে প্রায় ১১.০১ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করবে। এই বিদ্যুৎ আমদানির ৪০% যায় ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধে। বিদ্যুত কম এলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। চুক্তির ২৫ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে আদানি গ্রুপকে এক লক্ষ কোটি টাকারও বেশি পরিশোধ করতে হবে যা দিয়ে ৩টি পদ্মা সেতু, ৯টি কর্ণফুলী টানেল কিংবা ২ টি মেট্রোরেল নির্মাণের এর জন্য যথেষ্ট।”

তিনি বলেন, ‘‘ আদানির এই কোম্পানিকে প্রায় ৩ বছরে মোট ভাড়া দেয়া হয়েছে ৫৩ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।আর পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতিসহ খরচ পড়েছে ৩০ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। এ কেন্দ্রটি থেকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হচ্ছে না এবং হবে না। তাই এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বিরাট বোঝা হয়ে আছে যা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে।

‘জনগনের ওপর বোঝা চাপানো’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ গ্যাস উত্তোলনের সক্ষমতা বৃদ্ধি না করে আইপিপি-এর মাধ্যমে বিদ্যুত উতপাদন করে ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা অন্যায়ভাবে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দশ বছরে অফ-শোর গ্যাস উত্তোলনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগায়নি। এমনকি বিদ্যমান গ্যাস ফিন্ডের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের মাধ্যমেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০% অধিক গ্যাস সরবরাহ করা যেত, তাও করা হয়নি।”

‘‘ প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার ইতোমধ্যে অফ-শোর গ্যাস উত্তলনের মাধ্যমে দেশকে জ্বালানি সংকট হতে রক্ষা করছে। সরকার সমুদ্রবিজয় নিয়ে উতসব করলেও অফ-শোরে গ্যাস উত্তোলনে সম্পূর্র্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এভাবে গ্যাসের কৃত্তিম অভাব সৃষ্টি করে দুর্নীতির মাধ্যমে দলীয় ব্যবসায়ীদের আমদানিকৃত এলএনজি নির্ভর প্ল্যান্ট নির্মাণ করে অবারিত দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে সরকার। রক্ষক তথা জনস্বার্থ রক্ষা করার পবিত্র দায়িত্ব যাদের উপর, তারাই যখন ভক্ষক হয়ে সব লুটে-পুটে খায়। তখন পরিস্থিতি যা হবার তাই হচ্ছে। খেসারত দিতে হচ্ছে এখন নিরপরাধ জনগণকে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ ভোক্তাদের টাকায় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য গঠন করা গ্যাস উন্নয়ন তহবিল(জিডিএফ) থেকে এলএনজি আমদানিতে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে সরকার। এই টাকাটা আসলে ঋণের নামে নিয়ে নেওয়া হলো। ভোক্তারা এটিকে বৈধ মনে করে না।”

‘‘ আর্থিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে এই অবৈধ কাজটি করেছে সরকার।”

পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র প্রসঙ্গে

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই অদূরদর্শী পরিকল্পনার টিপ অফ দ্যা আইসবার্গ হচ্ছে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের দৃষ্টান্ত। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে উতপাদনে গেলেও সঞ্চালন লাইনের নির্মাণ শেষ না হওয়ায় কেন্দ্রটি সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুত উতপাদন করছে। কিন্তু কোন বিদ্যুৎ না দিলেও এ পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে চীনা ঋণে বাস্তবায়নাধীন পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রটিকে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি পরিশোধ করা হয়েছে।”

‘‘ প্রশ্ন হলো সঞ্চালন লাইনের কাজটি সম্পন্ন করা হলো না কেন? বিদ্যুত না কিনেও পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রটিকে ৫ হাজার কোটি টাকা কেন পরিশোধ করা হলো? অনেকেই মনে করেন ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্যুত না কিনেও যোগসাজশে অর্থ লুটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।”

বিএনপির শাসনামলে স্বচ্ছ ক্রয় প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে সরকারি ক্রয়নীতি মালা প্রনয়ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

সাবেক বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘‘ বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের সময়ে আমরা যে প্রিপেইড মিটার আমদানি করেছিলাম সিমেন্সে কাছ থেকে এবং বুয়েট থেকে বানিয়েছিলাম। সেখানে ১০% রেয়াত সুবিধা দেয়া হয়েছিলো।”

‘‘ ওরা (বর্তমান সরকার) এসে ওইসব ফেলে দিয়েছে। ওই মিটারগুলো এখন নাই। এখন ওরা যে প্রোগা্মিং করে মিটারগুলো এনেছে, সেই মিটারগুলো লাগানো হয়েছে। আমার মিটারে ১১৫ টাকা ছিলো আমি ১০০০ টাকা ভরেছি। তাহলে ১১৫০ টাকা থাকার কথা। কিন্তু আমি দেখলাম আমার মিটারে আমি= বিদ্যুত কিনতে পারব ৯৩০ টাকা।এভাবে ওরা লুট করছে, প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের অর্থ লুট করছে।”

এই সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।