দেশ চালাচ্ছে জগৎশেঠ আর আমলারা : ঘরে বসে মীর্জা ফখরুল ওবায়দুল কাদেররা পালাগান করছেন– সংসদে এমপিরা

আপডেট: জুন ২৮, ২০২১
0

দেশ চালাচ্ছে কারা-এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংসদে। যিনি প্রশ্ন তুলেছেন তিনিই আবার উত্তর দিয়ে বলেছেন, রাজনীতির মঞ্চগুলো আস্তে আস্তে ব্যবসায়ীরা দখল করছেন। দেশ চালাচ্ছেন জগৎ শেঠ ও আমলারা। রাজনীতিবিদরা এখন তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে। এই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য। অথচ এই দেশ স্বাধীন করেছেন রাজনীতিবিদরা।

সোমবার (২৮ জুন) সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এ কথা বলেন। পরে প্রায় একই সুরে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ দলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ। টানা ৯ দিনপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনের মূলতবি বৈঠক শুরু হয় এদিন।

জাতীয় পার্টির সিনিয়র এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। কারণ দেশে কোনো রাজনীতি নেই। রাজনীতির নামে এখন পালাগানের অনুষ্ঠান হয়। সন্ধ্যার সময় ওবায়দুল কাদের একদিকে পালাগান করেন, একটু পর টিভিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরেকটা পালাগান করেন। রাজনীতিবিদরা ঘরে বসে টেলিভিশনে পালাগানের রাজনীতি দেখি। এই পালাগান চলছে ১০ বছর। রাজনীতি শূন্য, কোথাও রাজনীতি নেই।

জাতীয় পার্টির এই এমপি বলেন অভিযোগ করে বলেন, এখন রাজনীতিবিদদের চেয়ে আমলাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিসিদের সঙ্গে কথা বলেন। আর এমপিরা পাশাপাশি বসে থাকেন, দূরে। তারপর বলে ডিসি সাব, আমি একটু কথা বলব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। এই হচ্ছে রাজনীতিবিদদের অবস্থা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিসিদের সঙ্গে যখন কথা বলেন, তখন এমপিদের কোনো দাম থাকে না।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, পদ্মাসেতু, পায়রা বন্দর, মেট্রোরেল- যাই করা হোক, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছাড়া জনগণ এটার সুফল পাবে না। রাজনীতিবিদ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই প্রতিশ্রুতি থাকে না। বাতাস যেদিকে, তারা সেদিকে ছাতা ধরেন।
জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় ছিল, সে তিক্ত অভিজ্ঞতা তাদের আছে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী এমপিরা সচিবদের ওপরে। এটা খেয়াল রাখতে হবে। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন। তখন মন্ত্রীরা জেলার দায়িত্ব পালন করতেন। সেখানে গেলে কর্মীরা আসতো।
মন্ত্রীরা গ্রামে-গঞ্জে যেতেন। কোথায় যেন সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন আমি যে কথাটা বলব, সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত জানি না; বর্তমানে জেলায় জেলায় দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা। মানুষ মনে করে আমরা যা দিই, এটা প্রশাসনিক কর্মকর্তারাই দেয়। অথচ প্রশাসনিক যারা কর্মকর্তা, তারা কিন্তু ওই এলাকায় যাননি। এটা কিন্তু ঠিক না। একটা রাজনৈতিক সরকার এবং রাজনীতিবিদদের যে কর্তৃত্ব, সেটা কিন্তু ম্লান হয়ে যায়।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ফেরাউনের সময়ও আমলা ছিল। এসব কথাবার্তা মানুষ পছন্দ করে না।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যারা রাজনীতিবিদ, যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি, তাদের জন্য নির্ধারিত স্থান থাকা উচিত। এছাড়া আমাদের জেলায় একজন সচিব যাবেন, আমরা তাকে বরণ করে নেব, ঠিক আছে। কিন্তু তারা যান না।