দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন বাতিলের ঘোষণায় মির্জা ফখরুলের নিন্দা ও প্রতিবাদ

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
0

বিএনপির মুখপাত্র ও জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন ও মুদ্রণের ঘোষনাপত্র বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বর্তমান নিশিরাতের সরকারের অধীনে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা নেই তা আবারো প্রমাণিত হলো। দৈনিক দিনকাল পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলের মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বিরোধী দলের একমাত্র পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল সরকারের মারাত্মক হিংসা চরিতার্থ করার বহিঃপ্রকাশ। সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী কাজ, চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, মারাত্মক দলীয়করণ, নির্বাচনের নামে প্রহসন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী অসম চুক্তি, বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ন, হত্যা, গুম, খুন, প্রহসনের সত্য সংবাদ দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ করায় দৈনিক দিনকাল সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের কণ্ঠস্বর দৈনিক দিনকাল বন্ধের ফলে পত্রিকাটিতে কর্মরত হাজারো সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশাসক পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলও পত্রিকাটির আপিল খারিজ করে দিয়েছে। এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক আঘাত।

তিনি আরো বলেন, মাত্র কয়েক দিন আগেই ১৯১টি অনলাইন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। তথ্যমন্ত্রী ভোটারবিহীন সরকারের সংসদে কয়েক দিন আগে বক্তব্য দিয়েছেন, গতমাসে ১০০টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে এবং আরো শতাধিক বাতিল করা হতে পারে। এরই মধ্যে আজ বিরোধী দলের মুখপাত্র দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধ করা তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেরই প্রতিফলন।

মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হয়। ১৯৭৫ সালের আওয়ামী লীগ সরকার চারটি সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ছাড়া বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। বর্তমান নিশিরাতের আওয়ামী সরকার তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করছে নতুন আঙ্গিকে। এ কারণে তারা সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালাচ্ছে এবং হুমকির সর্বগ্রাসী কর্তৃত্ব কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, বর্তমান দুঃসময়ে সব গণমাধ্যমের কর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের মারাত্মকভাবে নিগৃহীত করা হচ্ছে। একই সাথে সরকারের সমালোচনা করায় বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন। আমি দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন ও মুদ্রণের ঘোষনাপত্র বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য, সরকারের নির্দেশে গত ২৬ ডিসেম্বর দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন ও পত্রিকা মুদ্রণের ঘোষনাপত্র বাতিল করে ডিসি। দৈনিক দিনকালের পক্ষ থেকে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন ও মুদ্রণ বাতিলের আদেশের স্থগিতাদেশ চেয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সেলে আবেদন করলে গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত ছিল। আজ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলও পত্রিকাটির আপিল খারিজ করে দিয়েছে।