নদী, বায়ু ও শব্দদূষণ প্রতিরোধে শেখ জামাল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শপথ গ্রহণ

আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১
0

নদী, বায়ু ও শব্দদূষণ প্রতিরোধে শেখ জামাল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শপথ গ্রহণ করেছে।

অদ্য ১১ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, কামরাঙ্গীরচর ভেঁড়িবাধ নিকটবর্তী শেখ জামাল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের উদ্যোগে আয়োজিত বিদ্যালয় কর্মশালায় বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ পরিবেশ রক্ষায় নদী, বায়ু ও শব্দদূষণ রোধের লক্ষ্যে শপথ গ্রহণ করেন। কর্মশালায় বিদ্যালয়টির শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকবৃন্দ অংশ নিয়ে পরিবেশ, পরিবেশ দূষণের কারণ ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন এবং কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।

কর্মশালায় মোট চল্লিশ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদেরকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ এবং শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ কামরুজ্জামান প্রকল্প সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন এবং সহায়ক হিসেবে কর্মশালাটি পরিচালনা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের কর্মকর্তা এম এম কবীর মামুন।

কর্মশালাটির উদ্বোধন করেন শেখ জামাল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন। কনসোর্টিয়ামের উদ্যোগে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আবদুস সালাম এর সভাপতিত্বে এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের কর্মকর্তা এম এম কবীর মামুন এর সঞ্চালনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দের সাথে পরিবেশ রক্ষায় পানি, বায়ু এবং শব্দদূষণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সচেতন নাগরিক সমাজ সংস্থার সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আদেল, নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সায়িদ রানা, যুব বাপা কর্মসূচীর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রাওমান স্মিতা, যুব বাপার কেন্দ্রীয় সদস্য দেওয়ান নূরতাজ আলম এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস প্রকল্পের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট মেহেদী হাসান।

মূল বক্তব্যে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, শীতকালে দূষিত পানিতে কোন দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকেনা। ফলে মাছও পাওয়া যায়না। নদী রক্ষার্থে অভিভাবকদের তাদের সন্তানদেরকে সচেতন করে তুলতে হবে। তিনি নদীকে জীবন্ত সত্ত্বার সাথে তুলনা করেন। তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গাকে আমরা অর্ধেক মেরে ফেলেছি। এটি শেষ হয়ে গেলে আমরা আর পানি পাবোনা। নদী রক্ষার জন্য আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩ মাস পরপর নদী রক্ষার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, নদীকে এমনভাবে রক্ষা করতে হবে যেন নদী আমাদের বিনোদনের কেন্দ্র হয়ে ওঠে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচেতন নাগরিক সমাজ সংস্থার সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আদেল বলেন, প্রতিদিন কোন না কোন নদী মরে যাচ্ছে এবং আমাদের নদীগুলোকে আমাদের রক্ষা করতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে আমাদের।

নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সায়িদ রানা বলেন, আমাদের নদীর মালিকানা আমাদের। নদীর গায়ে ময়লা পড়লে তা আমাদের গায়েই পড়ে। তাই আমাদের নদীকে আমাদেরকেই দূষণমুক্ত রাখতে হবে।

যুব বাপা কর্মসূচীর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রাওমান স্মিতা বলেন, আমাদের নদীকে আমাদের নিজেদের জন্যই দূষণমুক্ত রাখতে হবে।

কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস প্রকল্পের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট মেহেদী হাসান বলেন, বুড়িগঙ্গা আমাদের অক্সিজেন। তাই আমাদের এই অক্সিজেনকে আমাদেরই ধরে রাখতে হবে।

ইউএসএআইডি, এফসিডিও এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় দূষণবিরোধী শক্তিশালী নাগরিক প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) -এর সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম নদী পাড়ে অবস্থিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদেরকে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়ে এই বিদ্যালয় কর্মশালাটির আয়োজন করেছে।