নবীজি (সা.)-এর বাণিজ্য কাফেলার জর্ডানের সেই জায়গা এখন ‘জারকা’ নদী

আপডেট: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
0

ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক

জারাশ বর্তমান জর্ডানের রাজধানী ‘আম্মান’ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ শহর। রোমান শাসনাধীন হওয়ায় তা ঐতিহাসিকরা তাকে প্রাচীন শামের অন্তর্ভুক্ত করেন। আম্মান ও ইরবিদ নগরীর মধ্যস্থলে রোমান শাসনের স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জারাশ। শহরটি ডেকাপলিশের (Decapolis) ১০ নগরীর একেবারে দক্ষিণের নগরী।

থিয়েটার, ওভাল গেইট, কোলান্ড স্ট্রিটসহ প্রায় ১২টির মতো রোমান স্থাপত্য আছে এখানে।

আল-হামাভি নগরীটির বর্ণনা এভাবে দিয়েছেন, ‘জারাশ একটি বড় নগরী; অথচ এখন তা পরিত্যক্ত! একজন প্রত্যক্ষকারী আমাকে বলেছে যে তা এখন বিধ্বস্ত নগরী! তাতে পুরনো অনেক কূপ আছে; তার বুকচিরে বিভিন্ন দিকে বিস্তৃত হয়েছে নদীর প্রবাহ। বালাকা ও হাওরান এলাকার কালো পাহাড়ের পূর্ব পাশে শহরটির অবস্থান। এখানে অনেক পাহাড় ও গ্রাম আছে, সবটিকে ‘জাবালু জারাশ’ বলা হয়। (মুজামুল বুলদান)

বর্তমান জারাশ ও বালাকা প্রদেশের মাঝখান দিয়ে ‘জারকা’ নদী প্রবাহিত। আসলে তা নদী নয়; বরং পাহাড়ি নালা। যা মৃত সাগরে গিয়ে মিশে গেছে। জারাশ থেকে পশ্চিম দিকে খুব কম দূরত্বে-ই আছে জর্ডান নদী। মক্কা থেকে নবীজি (সা.)-এর বাণিজ্যিক কাফেলা দুুবার গিয়েছে জারাশে এবং আবার ফিরে এসেছে মক্কায়। নবীজি (সা.)-এর সে দুটি সফর ছিল সফল ও সার্থক। খাদিজা (রা.)-এর পক্ষ থেকে তিনি উত্তম বিনিময় লাভ করেছিলেন। জাবির (রা.) বলেন, ‘খাদিজা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জারাশের উদ্দেশে দুটি বাণিজ্যিক সফরে নিয়োজিত করেছিলেন; প্রত্যেক সফরে-ই তিনি তাকে একটি করে উট দিয়েছিলেন। ’ (সুনানে কুবরা লিল-বাইহাকি, হাদিস : ১০৭৫২)

অপর বর্ণনায় এসেছে, ‘খাদিজা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জারাশের উদ্দেশ্যে পরিচালিত দুটি বাণিজ্যিক সফরে নিয়োগ করেছিলেন। ’ (মুসতাদরাক, হাদিস : ৪৭৮১)

তবে আরবে কাছাকাছি উচ্চারণে আরেকটি প্রাচীন নগরী আছে। তা হলো জুরাশ। জুরাশ ছিল ইয়েমেনের একটি পুরনো নগর। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)

কুরাইশদের দক্ষিণমুখী বাণিজ্যিক কাফেলার শেষ সীমানা ছিল জুরাশ। নবীজি (সা.)-এর দাদা আবদুল মুত্তালিবের সহোদর ‘মুত্তালিব’ এখানে ব্যাবসায়িক কারবার পরিচালনার সুযোগ উম্মুক্ত করেন। তিনি জুরাশে মারা গেলে এখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। এখানকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় ‘কাশার’ নামক একটি পাহাড়ের নাম ‘শাকার’ নামে রূপান্তর করে দিয়েছিলেন নবীজি (সা.)।


উম্মাহ থেকে নেয়া