নিউমার্কেটকাণ্ড: নাহিদকে পেটায় সিয়াম, কোপায় ইমন

আপডেট: মে ৬, ২০২২
0

নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালীন ইটের আঘাতে চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে লুটিয়ে পড়েন কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ। পড়ে যাওয়া নাহিদকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সিয়াম। নাহিদকে সিয়াম আঘাত করার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপান ইমন।

বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

সিসিটিভি ফুটেজ, মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও ও ছবি দেখে নাহিদ হত্যায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন সিয়াম। তাকে শরীয়তপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

এছাড়া ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- মোয়াজ্জেম হোসেন সজীব (২৩), মেহেদী হাসান বাপ্পি (২১)। তবে ইমন পলাতক রয়েছেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ইটের আঘাতে নাহিদ মাটিতে পড়ে যান। এরপর তাকে রড দিয়ে বেধড়ক আঘাত করেন সিয়াম। ফুটেজে আরেকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়। তার নাম ইমন। কোন পাশ থেকে বা কার ইটের আঘাতে নাহিদ পড়ে যান তা চিহ্নিত করা যায়নি। নাহিদ হত্যায় সংশ্লিষ্ট ইমন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

উসকানি ও গুজবে সাড়া দিয়ে সিয়াম সংঘর্ষে জড়ান বলে জানিয়েছেন খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, সিয়াম হলে থাকতেন না। তিনি ঢাকা কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাইরে থেকে এসে কলেজ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংঘর্ষে জড়ান সিয়াম।

১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষে দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী।

নিউমার্কেটের ভেতরে থাকা ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামের দুই দোকানের কর্মচারীর দ্বন্দ্ব থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দোকান দুটি সিটি করপোরেশন থেকে মকবুলের নামে বরাদ্দ রয়েছে। তবে কোনো দোকানই নিজে চালাতেন না মকবুল। তিনি দোকান দুটি রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুইজনকে ভাড়া দিয়েছেন। রফিকুল ও শহিদুল পরস্পর আত্মীয়।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটিতে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়। দুই মামলায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়।