নিজের বার্ধক্যতার ভার ও শারীরিক অসুস্থতা আল্লামা শফী পদত্যাগ করেছিলেন — বাবুনগরী

আপডেট: জুলাই ১, ২০২১
0

গত বুধবার (৩০ জুন) চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণে ‘শফীকে সরাতে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছিলেন বাবুনগরী’ শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঈমান-আকীদাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

আজ (১ জুলাই) বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক যৌথ প্রতিবাদ লিপিতে হেফাজত আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম বলেন, গত ৩০ মে এনামুল হাসান ফারুকীর আদালতে দেয়া জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণ কর্তৃক ৩০ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদন নির্জলা মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পত্রিকাটি শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম ও হেফাজত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করতে ষড়যন্ত্রমূলক এমন উদ্ভট ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে।

হেফাজত শীর্ষ নেতৃদ্বয় বলেন, আল্লামা আহমদ শফী (রহ.) ছিলেন আমাদের সকলের মুরুব্বী। দীর্ঘদিন তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে হাটহাজারী মাদরাসা পরিচালনা করেছেন এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি হাটহাজারী মাদরাসার সর্বোচ্চ পদে সমাসীন ছিলেন। তাঁকে সরাতে নিজস্ব বলয় তৈরি করা হয়েছিল মর্মে পত্রিকাটি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে যে গল্প ফেঁদেছে, তার সবই সুস্পষ্ট মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রমূলক। বাস্তবতার সাথে এসব কাল্পকাহিনীর দূরতমও সম্পর্ক নেই।

প্রতিবাদপত্রে তারা আরো বলেন, হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম পদ কিংবা হেফাজতের আমীর পদ থেকে আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)কে সরাতে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে কোথাও কোন ধরনের বৈঠক, পরামর্শ বা পরিকল্পনা কিছুই হয়নি। এমনকি চট্টগ্রামের বাইরের যে সকল ওলামায়ে কেরামকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা কেউই আল্লামা শাহ আহমদ শফী ( রহ.)এর ইন্তিকালের আগে হাটহাজারী কিংবা চট্টগ্রাম আসেননি। আমরা দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার এই মিথ্যা প্রচারণার তীব্র নিন্দা ও জোরালো প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

হেফাজত আমীর ও মহাসচিব আরো বলেন, কারো চাপে বাধ্য হয়ে নয়, বরং নিজের বার্ধক্যতার ভার ও শারীরিক অসুস্থতাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইন্তিকালের দুই দিন আগে স্বেচ্ছায় স্ব-জ্ঞানে মুহতামিমের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মজলিসে শূরার কাছে আবেদন করেছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)। আবেদনের প্রেক্ষিতে মজলিসে শূরা তাঁকে মুহতামিমের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সর্বোচ্চ সম্মানজনক সদরে মুহতামিম পদে সমাসীন করেছিলেন। এ ছাড়া মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকের উপর নিয়মবহির্ভুত প্রভাব বিস্তার, ক্ষমতার অপব্যবহার, বহুবিদ দূর্নীতিসহ নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের কারণে স্বয়ং আল্লামা শাহ আহমদ শাহ শফী (রহ.) ও মজলিশে শূরার সদস্যগণ সর্বসম্মতিক্রমে আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন। সুতরাং এই নিয়ে সুযোগ সন্ধানীদের অপপ্রচারে হেফাজতের নেতাকর্মী ও তৌহিদী জনতা কখনোই বিভ্রান্ত হবে না।

হেফাজত শীর্ষ নেতৃদ্বয় বলেন, দৈনিক পূর্বকোণ এর আগেও হেফাজত নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আমরা তার সুস্পষ্ট প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু পত্রিকাটি মিথ্যাপ্রচারণা থেকে নিবৃত্ত না হয়ে শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম ও হেফাজতে ইসলামের সুনামহানী ও বিভ্রান্তি তৈরিতে এখনো লিপ্ত। আমরা দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি দু:খপ্রকাশ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন প্রত্যাহার পূর্বক এহেন মিথ্যা প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে জোর আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় ইসলাম ও উলামাবিদ্বেষী চক্রের ক্রীড়নক হিসেবে চিহ্নিত করে পাঠকমহল এই পত্রিকা প্রত্যাখ্যান করবে।