নীলফামারীতে প্রধানমন্ত্রী’র উপহারের ঘর নির্মানে অনিয়ম ও টাকার বিনিময়ে হস্তান্তর

আপডেট: জুলাই ৭, ২০২১
0

আব্দুর রাজ্জাক, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মানে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায় অনিয়ম ও টাকার বিনিময়ে হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে। উপকারভোগীদের দিয়ে ঘরের মেঝের মাটি ভরানো, ঘরের বাশ, কাঠ লাগানো বাধ্য করা, বাবা ছেলে ও মেয়েকে জমি দান করে ঘর বরাদ্ধ নেওয়া সহ এমনি বিস্তর অভিযোগও রয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ফাঁটল ধরায় গোপনে তা সংস্কার করে দেওয়া হয়েছেও বলে অভিযোগে প্রকাশ। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনর বিষয়ে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগসহ এলাকাবাসী।

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দায়ের করা অভিযোগে জানা যায়, জেলার ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নে ১০ বিঘা জমি রয়েছে, এমন ব্যক্তিকেও অর্থের বিনিময়ে ঘর দেওয়া হয়েছে। পিতা পুত্রকে জমি দান করেছে, তাকেও ঘর বরাদ্ধ দেওয়া। উপজেলার বাইরের বাসিন্দাদেরও ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘরগুলো নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে।

পাঙ্গামটুকপুর ইউনিয়নের হাফিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমার জমি থাকায় আমাকে ঘর দেওয়া যাবে না। তাই আমি দুই শতক জমি আমার মেয়ে হাবিবা বেগমকে দান করি। তার নামে একটি ঘর বরাদ্ধ হয়। আমার মেয়ের নীলফামারী সদর উপজেলার ঘাটপাড়া এলাকায় বিয়ে হয়েছে। তবে আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়ি নীলফামারীতেও থাকে আবার ডোমারেও থাকে। একই এলাকার সুবিধাভোগী রশিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরের মেঝের মাটি আমাকে ভরাতে হয়েছে। ঘরের দুইটি কাঠের সড় বা তির নিজেকে লাগাতে হয়েছে। একটি ফুঁটো টিন দিয়েছে।

এ ব্যাপারে পাঙ্গামটুকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, যাদের বাড়ি ডোমারে নয়, তাদেরকেও অর্থের বিনিময়ে ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। দুই নম্বর ইট দিয়ে সকল ঘরের কাজ করছে। অভিযোগ করার পরেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে তিনি দাবী করেন। একই ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি দুলাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, প্রকৃত ভূমিহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর না দিয়ে, যাদের জমি রয়েছে তাদের ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অর্থের বিনিময়ে ঘরগুলো বরাদ্ধ দিয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে কিছু জানায় নাই। ইউএনও নিজেই সব কিছু করেছেন। তিনি বলেন, আমার কাছেও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের অনিয়ম বিষয়ে অনেক অভিযোগ এসেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম সাংবাদিকদের জানা, অর্থের বিনিময়ে ঘর বরাদ্ধ দেওয়ার প্রশ্নেই উঠে না। নিম্ন-মানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মানের অভিযোগকে তিনি ভিত্তিহীন দাবী করেন।
আব্দুর রাজ্জাক/নীলফামারী প্রতিনিধি/তারিখঃ ০৭/০৭/২০২১ইং/