নোয়াখালীতে ভেঙে পড়ল নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের ছাদ

আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২২
0

স্টাফ রিপোর্টার :

নোয়াখালীর কবিরহাটে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়ল সৌদিয়া বাজার নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ি কক্ষের ছাদ । ঘটনার পরপরই তাড়াতাড়ি করে সরিয়ে ফেলা হয় ভেঙে পড়া ভবনের নির্মাণ সামগ্রী।ছাদে ওঠার সিঁড়িতেও ফাটল দেখা দিয়েছে।

গতকাল সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের সৌদিয়া বাজার নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কয়েক মাস আগে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয়তলার নির্মাণকাজ শুরু হয়। ফাতেমা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজের ঠিকাদারি পায়। ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার মো. মুকুল নির্মাণকাজটির ঠিকাদার। ১৭ দিন আগে দ্বিতীয় তলার মূল ভবনের কাজ শেষ করে সিঁড়িকক্ষের ছাদের ঢালাই দেওয়া হয়।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করে বলেন, ছাদের ঢালাইয়ে নামমাত্র রডের ব্যবহার করা হয়। ছাদে পাঁচ ইঞ্চির মাথায় একটি রড দেওয়ার নিয়ম থাকলেও প্রতিটি রডের দূরত্ব রাখা হয়েছে এক ফুটের বেশি। এ ছাড়া অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। তদারকি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারের লোকজন নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করেছেন। এ অবস্থায় ভবনের দ্বিতীয় তলা কখন ভেঙে পড়ে, তা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন স্থানীয় লোকজন। কয়েক দিন আগে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠার সিঁড়ির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জানালেও তাঁরা আমলে নেননি। সর্বশেষ নির্মাণের ১৭ দিনের মাথায় সোমবার সকাল ৯টার দিকে বিকট শব্দে সিঁড়ির কক্ষের ছাদ ভেঙে পড়ে। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ভেঙে পড়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় অসন্তোষ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভবনের নির্মাণ কাজ বেশির ভাগ সময় রাতে করা হয় বলেও স্থানীয়রা জানায়। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ছাদ ঢালাই করার ফলে ওই ছাদ ভেঙে পড়েছে।

এ ঘটনায় কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঢালাই দেওয়ার কারণে ছাদটি ভেঙে পড়েছে বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন।

সৌদিয়া বাজার নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শরফুদ্দিন ওরফে সবুজ বলেন, দ্বিতীয় তলার কাজ শুরু হওয়ার পর নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করতে দেখে তিনি প্রতিবাদ করেন। কাজের তদারকি করতে আসা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। কেউ তাঁর কথা শোনেননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মো. মুকুলের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, ছাদটি নিয়মানুযায়ী করা হয়নি তাই একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। পরবর্তীতে পুরো অংশ ভাঙতে গেলে এলাকার মানুষ বাঁধা দেয়। আমরা এখন নিয়ম অনুযায়ী এটি নতুন করে করব।

এ ঘটনায় নোয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপঙ্কর খীসা সাংবাদিকদের বলেন, কেউ তাকে এ বিষয়ে অবহিত করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।