পটুয়াখালীতে শালীশ বৈঠকের নাটক সাজিয়ে নারীর হাত ভেঙ্গে দেয় স্থানীয় মেম্বার সরোয়ার

আপডেট: আগস্ট ১, ২০২২
0


মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালী’র মির্জাগঞ্জে ভাই ভাই বিরোধকে কেন্দ্র করে সালিশ ব্যবস্থার নাটক সাজিয়ে সুমনা আক্তার (৪০) নামের এক নারীর হাত ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার সরোয়ারের বিরুদ্ধে।

গত ৩০( জুলাই) শনিবার সন্ধা ৬ টার দিকে মির্জাগঞ্জ থানার ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ঘটকের আন্দুয়া নামক স্থানে এ ঘটনাটি ঘটে।

এবিষয় ভুক্তভোগী সুমনা আক্তারের স্বামী নয়ন মাঝি বলেন, গত ২৮ জুলাই আমার মেয়ে সুরমাকে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য ঘটকসহ ছেলে পক্ষের দু’একজন আমার বাড়ি আসে। বাড়িতে ঢুকার পথে আমার চাচাতো ভাই সোরাপের স্ত্রী সালমা বেগম আমার মেয়েকে গরু দেখতে এসেছে বলে কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে আগত অতিথিদের সাথে। বিষয়টি নিয়ে পরের দিন আমি আমার ভাই সোরাপের ঘরে কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহারের উদ্দেশ্য জানতে গেলে তাকে ঘরে না পেয়ে আমি ঐ স্থান থেকে চলে যাই। এদিকে ভাই সোরাপের ঘরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে অহেতুক উত্তেজিত হয়ে সোরাপ ও তার ছেলে ফয়সালসহ বেশ কয়েকজন আমি ও আমার মেয়ে সুরমাকে মারার উদ্দেশ্য বাড়ির সামনে দেশিও অস্ত্রসহ বেড়ি কেট দেয় এসময় স্থানীয় লোকজন আসলে আর কিছু হয়না। আমাদের চিৎকার চেচামেচিতে তার স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। পরেরদিন গত ২৯ (জুলাই) আমাদের ইউনিয়ন মির্জাগঞ্জের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সরোয়ারের কাছে সালিশ ব্যবস্থার জন্য গেলে তিনি পরে দেখবেন বলে জানান।

ঘটনার দিন গত ৩০ (জুলাই) সন্ধা ৬ টায়
মেম্বার সরোয়ার হঠাৎ আমাদের বাড়িতে আসেন। এবং এখন সালিশ ব্যবস্থা করবেন বলে আমাদের উভয় পক্ষকে ডাকেন। সালিশীর এক পর্যায় পূর্বের ন্যায় ভালো সরোয়ার মেম্বারের সম্মুখে আমার কন্যা ও স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালমন্দ দেয়। এবং আমাকে মারতে চলে আসে।

আমরা এর প্রতিবাদ জানালে উল্টো মেম্বার সরোয়ার আমাদের শাসাতে থাকে। এবং দরাজ কন্ঠে বলেন ভোটের সময় তোরা আমার বিরোধিতা করেছিস্ এখন তোদের কিসের শালীশি। তোর মেয়ের কিসের বিয়ে। আরো বলেন, তোর মেয়ের বিয়ে দেয়ার আগে আমরা সবাই লাইন দিয়ে… করবো। একথা বলার পর আমার স্ত্রী সুমনা আক্তার মেম্বারের কুরুচিপূর্ণ ভাষার প্রতিবাদ করলে একপর্যায়ে মেম্বার আমার স্ত্রীকে ব্যপক মারধর করে ঘরের মেজ থেকে হাত মুচরিয়ে পাশে দেয়ালে ফেলে দিয়ে হাত ভেঙে দেয়। ওই রাতে আমার স্ত্রীকে নিয়ে মির্জাগঞ্জ ৫০ সয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। এখবর পেয়ে মেম্বার উল্টো প্রতিপক্ষকে দিয়ে নিয়ে স্বাক্ষী হয়ে মির্জগঞ্জ থানায় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

এবিষয় মেম্বার সরোয়ারের মুখোমুখি হলে তিনি দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠ ও দৈনিক বরিশাল সমাচারকে জানান,আমি কারো গায়ে হাত তুলিনি এটা আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। এব্যপারে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব এরিয়ে যায় তিনি।

এছাড়াও স্থানীয় শালীশ বৈঠকে একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তিদের ঘটনাস্থলে পেলে তারা বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার যা বলেছেন সত্যি বলেছেন,তবে একজন ইউপি সদস্য এমন জঘন্য কাজ করবে আমরা এরকমটা আশা করিনি। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক আমরা এটা চাই।

সর্বিক বিষয় জানাতে মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এ্যাড. নাসির হাওলাদারকে জানালে তিনি বলেন, বিষয়টি আপনাদের কাছে এই মাত্র জানতে পারলাম তবে মেম্বার ও চেয়ারম্যান সালিশ ব্যবস্থা করার এক্তিয়ার রাখেন। কিন্তু কারো গায়ে হাত তোলা বে-আইনি। এবং এবিষয় তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান।

ভুক্তভোগী সুমনা আক্তার বলেন, এখন আমার মেয়েটিকে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় রয়েছি। যেকোনো মুহূর্তে মেম্বার ও তার পেটোয়া বাহিনী আমার মেয়ের সর্বনাশ করতে পারে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, মারামারির এই ঘটনাটি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তারা।