পদ্মাসেতু নির্মাণের হিসাব চেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

আপডেট: মে ২৩, ২০২২
0

পদ্মাসেতু নির্মাণের হিসাব চেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘‘ জনগন জানতে চায় যে, পদ্মাসেতুর অর্থের জন্য জনগনের কাছ থেকে কত টাকা কেটেছেন? তাতে কত টাকা আপনারা এই পদ্মাসেতুতে ব্যয় করেছেন আর কত টাকা দুর্নীতি করে পকেটে ভরেছেন।”

‘‘ জনগন জানতে চায় যে, পদ্মা সেতু নির্মানে যে সমস্ত টাকা নিয়েছেন, কত টাকা নিয়েছেন তার জন্য এদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে কত টাকা গুনতে হবে ঋণ শোধ করার জন্য।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে শেখ হাসিনা তিনি পদ্মাসেতু করার বড়াই করছেন।”

‘‘ আমরা বলতে চাই, পদ্মাসেতু আপনার একার না, আওয়ামী লীগের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। জনগনের পকেটের টাকা থেকে যে ট্যাক্স কেটে নিয়েছেন সেই জনগনের টাকা দিয়ে পদ্মাসেতু নির্মিত হয়েছে এবং এখানে(পদ্মা সেতু) যে দুর্নীতি করেছে তা সমস্ত দুর্নীতির মাত্রা ছেড়ে গেছে।”

ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিনের যৌথ উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কটুক্তির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এই বিক্ষোভ সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে অসংখ্য নেতা-কর্মী ব্যানার-ফেষ্টুন নিয়ে অংশ নেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ শেখ হাসিনার এই উক্তিকে-তাকে(বেগম খালেদা জিয়া) টুস করে পদ্মা সেতুর ওপর থেকে ফেলে দেয়ার এই উক্তির ধিক্কার জানাই, নিন্দা জানাই, প্রতিবাদ জানাই। আজকে সমস্ত দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ধিক্কার জানাচ্ছে, তাকে আজকে সম্পূর্ণভাবে নিন্দা জানাচ্ছে।”

‘‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আপনারা হত্যার হুমকি দেন। আমরা ভাবতেও পারি না যে, একটি দেশের যেমন করে হোক, জোর করে হোক ক্ষমতা দখল করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন তার মুখ থেকে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন, এই ধরনের সন্ত্রাসী বক্তব্য কিভাবে আসে? কোনো সভ্য সমাজে, গণতান্ত্রিক সমাজে এই ভাষা ব্যবহার করার চিন্তাই করা যায় না।”

তিনি বলেন, ‘‘ আমরা খুব পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, আপনারা আপনাদের এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান জনগনের কাছে। অন্যথায় জনগন আপনাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেবে না। জনগন টেনে হেঁচড়ে নামাবে আপনাকে ক্ষমতার তখতে তাউস থেকে।”

‘‘ আমি পরিস্কার করে বলছি, এখনো সময় আছে, পদত্যাগ করুন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনে জনগনের যে সরকার গঠন হবে সেই সরকারই হবে জনগনের সরকার। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। তরুন-যুবকদের বলতে চাই- এগিয়ে আসুন, সময় এখন আপনাদের, তারুণ্যের সময়। আপনাদেরকে আজকে এদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে, সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে, জনাব তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।”

‘ক্ষমতা টলমল হয়ে গেছে’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এসব কথা(খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কটুক্তি) কেনো করেছে তিনি(শেখ হাসিনা)? তিনি করেছেন এই জন্য যে, তিনি এখন নার্ভাস হয়ে গেছেন। তিনি দেখতে পারছে যে, তার ক্ষমতার দিন শেষ, তিনি দেখতে পারছেন যে এখন আর তিনি সামনে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। তার ক্ষমতার তখতে-তাউস টলমল হয়েছে গেছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে আওয়ামী লীগ উন্নয়ন উন্নয়ন করে চিতকার করে। কিসের উন্নয়ন, কার উন্নয়ন করেছেন? উন্নয়ন করেছেন পিকে হালদারের, উন্নয়ন করেছেন আপনাদের শিক্ষা মন্ত্রীর ভাইয়ের, উন্নয়ন করেছেন আপনাদের ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের(সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী) ভাইয়ের এবং উন্নয়ন করেছেন আপনাদের নিজেদের প্রত্যেকের যারা আজকে ক্ষমতায় আছেন তারা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছেন।”

‘‘ জনগনের কোনো উন্নয়ন হয়নি।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ দ্রব্যমূল্যের চাপে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে গেছে। আমাদের কৃষক-শ্রমিক, যারা দিন আনে দিন খায় তারা আজকে হিমসিম খাচ্ছেন না শুধু, তাদের আজকে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তারা জীবন-যাপন করতে পারছে না।”

‘‘ আপনাদের(সরকার) কোনো অসুবিধা হয় না। কারণ আপনি(শেখ হাসিনা) তো আজকে একটা দুর্গের মধ্যে নিজেকে বন্দি করে রেখেছেন, নিজেই করেছেন। নিজেই বলেছেন সেদিন আমি তো আমার ঘরেই বন্দি। আপনি স্বেচ্ছায় বন্দি হয়েছেন। কারণ আপনি জনগনকে ভয় পান। তাই জনগনের সামনে আপনি আসেন না। জনগনের সামনে আসলে আপনি জনগনের ভাষা বুঝতে পারতেন, জনগন কি বলতে চায় তা বুঝতে পারতেন।”

মহানগর দক্ষিনের আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিনের রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলী, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্র দলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ মহানগরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে শিরিন সুলতানা, হেলেন জেরিন খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম,ইশরাক হোসেন, সুলতান, সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর,হাসান জাফির তুহিন, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ইয়াসীন আলী, ওয়াহিদ বিন ইতিয়াজ বকুল, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, নজরুল ইসলাম তালুকদার, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।