পরকীয়ার জেরে গৃহবধূ খুন, স্বামী পলাতক

আপডেট: মে ৪, ২০২৩
0

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : গাজীপুরে পরকীয়ার সন্দেহে দাম্পত্য কলহের জেরে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে খুন করেছে তার স্বামী। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছে। বৃহষ্পতিবার মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন কুদ্দুস নগর এলাকার একটি বাড়ির ৭তলার তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জিএমপি’র কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার দিদারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত আসমা আক্তার (৩৬) চট্রগ্রামের হালিশহর থানার খাজার দিঘির পাড় গ্রামের মোস্তফা মিয়ার মেয়ে এবং একই গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে নুরু মিয়ার স্ত্রী।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন কুদ্দুস নগর এলাকার কামাল হোসেনের বাড়ির ৭তলার ভাড়া বাসায় স্বামী ও এক সন্তানকে নিয়ে থাকতেন আসমা আক্তার। তার স্বামী নুরু মিয়া স্থানীয় এক পোশাক কারখানায় চাকুরি করেন। বেশ কিছুদিন ধরে স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল।

সহকারী কমিশনার দিদারুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভিকটিমের স্বামী নুরু মিয়া ঘরের দরজা খুলে দেয়ার জন্য বাড়ির কেয়ার টেকারকে মোবাইল ফোনে জানায়। এরপ্রেক্ষিতে বাড়ির কেয়ার টেকার ও মালিকের স্ত্রী ৭তলায় গিয়ে ঘরের দরজা বাহির থেকে তালা বদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তারা দরজার পাশে ফেলে রাখা চাবি দিয়ে তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে খাটের উপর কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখা আসমার লাশ দেখতে পান। এসময় পাশের কক্ষে এ দম্পতির পাঁচ বছরের শিশু মোবাইল ফোন নিয়ে খেলা করছিল। তারা বিষয়টি জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে জানান। পরে খবর পেয়ে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে বৃহষ্পতিবার ভোর রাতের দিকে আসমাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরের দরজা বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে চাবি ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তার স্বামী নুরু মিয়া। নিহতের মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল, তবে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরো জানান, গত কয়েকদিন আগে আসমা স্বামী সন্তানকে রেখে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এব্যাপারে গত সোমবার (০১ মে) কোনাবাড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন তার স্বামী নুরু মিয়া। ভিকটিমের স্বামী জানায়, পরকীয়ার জেরে প্রেমিকের হাত ধরে আসমা বাসা থেকে পালিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকায় চলে যায়। এরপ্রেক্ষিতে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসমাকে উদ্ধার করে।

জিএমপি’র কোনাবাড়ী থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন জানান, সুরতহাল রিপোর্টে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।