পরিকল্পিতভাবে পন্যমূল্যে বাড়ানো ও লকডাউনে মানুষের জীবন শাটডাউন হয়ে যাচ্ছে – মীর্জা ফখরুল

আপডেট: এপ্রিল ১৩, ২০২১
0

রোজায় সরকারী মদতে পরিকল্পিতভাবে পণ্যমূল্য ২০শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন , এখন রমজান মাস আসার ১-২ মাস আগেই কৌশলে দাম বাড়ানো হয়। আবার রোজার সপ্তাহ খানেক আগে একটু কমানো হয়। পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়ানো হয় ২০ শতাংশ আর সপ্তাহ খানেক আগে কমানো হয় ৫ শতাংশ। যাতে করে এই চক্র বলতে পারে,পণ্যের দাম তা কমেছে। এই ধরনের অপকৌশল ভোক্তাদের সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণার শামিল । সবচেয়ে,ভয়ংকর বিষয় মুল্যবৃদ্ধির এই প্রতারক ও দুর্নীতিবাজ চক্রের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সরকারের চালিকাশক্তিরাই।

আজ দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সন কার্যালয়ে ‘ আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে
নিত্যপণ্যের মুল্যবৃদ্ধি ও বিপর্যস্ত জনজীবন ‘ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

মীর্জা ফখরুল বর্তমানে এবং অতীতের অর্থনেতিক অবস্থার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বলেন , ”সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত ১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ বাংলাদেশ: জীবিকার ওপর অভিঘাত ধারণা জরিপ’ করে। এতে দেখা যায়, মহামারী করোনাকালে মানুষের আয় কমেছে ২০ শতাংশ। বৈশ্বিক মহামারী করোনা আঘাত হানার প্রাথমিক পর্যায়ে ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রতি পরিবারের মাসিক গড় আয় ছিল ১৯ হাজার ৪২৫ টাকা। আগস্টে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৪৯২ টাকায়। অর্থাৎ পাঁচ মাসের ব্যবধানে পরিবারপ্রতি আয় কমেছে প্রায় চার হাজার টাকা। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মাসিক গড় আয় আরো কতটা কমেছে সেটা আমরা নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারছি। ”

মীর্জা ফখরুল বলেন, ”মানুষের জীবনে হাহাকার আর ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষ করে মধ্য ও নিম্নবিত্তের খাবারের সংস্থান কঠিন হয়ে পড়েছে। এক জরিপে দেখা গেছে যে জরিপে অংশ নেয়া ৩৪.৮ শতাংশ পরিবারেরর কমপক্ষে একজন সদস্য চাকরি হারিয়েছে। ২০২০ সনের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে গড়ে পারিবারিক উপার্জন কমেছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। মধ্য ও নিম্ন বিত্তের হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। নয়ত বেতন পাচ্ছে না, নয়ত বেতন কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। জীবনযুদ্ধে টিকতে না পেরে শহর ছেড়ে গ্রামে ছুটছেন অনেকে। এর সঙ্গে অনেক স্বপ্ন নিঃশেষ হয়ে গেছে।”

মহাসচিব এ সময় করোনাকালীন সংকট নিয়ে বলেছেন যে , ”আর আমরা এমন সময় কথা বলছি, যখন করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বর্তমান ভোটারবিহীন গণবিচ্ছিন্ন সরকার লকডাউনের নামে আবার একটি অকার্যকর শাটডাউন জাতির উপর চাপিয়ে দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেশের কোটি কোটি “দিন আনে দিন খায়” এ শ্রেণীর শ্রমজীবী ও Informal Sector এ কর্মরত ভাই ও বোনদের জীবনে ভয়ংকর এক দুঃসময় নেমে এসেছে।

লক-ডাউনে দিন আনে দিন খায়- এ শ্রেণির দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে সরকার পুনরায় অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর আগে এ শ্রেণির মানুষের জন্য প্রদত্ত রিলিফ ও টেলিফোনে প্রদত্ত সামান্য নগদ টাকাও কিভাবে লুট হয়ে গেছে তা আপনারা সবাই জানেন। এই পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের বর্তমান লাগামহীন ঊধ্বর্গতি পরিস্থিতি কোন শোচনীয় পর্যায়ে নিয়ে ঠেকাবে তা কল্পনাও করা যায় না। ”