পরিবহন মালিকদের কাছে নারায়ণগঞ্জবাসী জিম্মি

আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২২
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : জ্বালানি তেল বৃদ্ধির অজুহাতে নারায়ণগঞ্জের বাস মালিকরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রী অধিকার সংরক্ষন ফোরাম নারায়ণগঞ্জ। গতকাল রবিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেন।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষন ফোরাম আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, বিশ্ব বাজারে যখন জ্বালানী তেলের দাম কমে আসছে সে সময় আমাদের দেশে এর দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করেছে সরকার। এখন ডিজেল ও পেট্রোলের দাম এখানে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়েও বেশী। ডিজেলের দাম ভারতে এখন বাংলাদেশী টাকায় ১০৬ টাকা ৫৯ পয়সা এবং পাকিস্তানে ১০৩ টাকা হলেও বাংলাদেশে তা ১১৪ টাকা করা হয়েছে। পেট্রোলের দাম ভারতে ১১৫ টাকা এবং পাকিস্তানে ৯৬ টাকা কিন্তু বাংলাদেশে তা করা হয়েছে ১৩০ টাকা। এর সুযোগে সরকারের সুবিধাভোগী পরিবহন সিন্ডিকেট এবং সরকারি সংস্থা বিআরটিসিও তাদের ইচ্ছে মতো পরিবহন ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছে। গত রাতে বিআরটিএ দূরপাল্লায় গণপরিবহনের জন্য কিলোমিটার প্রতি ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ২ টাকা ২০ পয়সা এবং মহানগরে ৩৫ পয়সা বাড়িয়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে পরিবহন মালিকরা সিন্ডিকেট করে দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। তারা ঢাকা নারায়ণগঞ্জের দুরত্ব নিয়ে প্রথম কারসাজি করে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার যা তারা ২০ কিলোমিটার বলে দাবি করে আসেছে। গত বছর নভেম্বরেও তারা সরকারের জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগে নারায়ণগঞ্জে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করেছিল। তখন সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অধিক টাকা তারা জনগণকে জিম্মি করে আদায় করেছে। এখন বিআরটিএর নতুন নির্ধারিত ভাড়ায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের ভাড়া আসে ৪১ টাকা ৮০ পয়সা। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে ১৮ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে সানারপাড় হয়ে নারায়ণগঞ্জ আসতে এক কিলোমিটার বাড়ার কারণে ১৯ কিলোমিটার হয়েছে। গড়ে সাড়ে ১৮ কিলোমিটার। যদি ১৯ কিলোমিটার দুরত্বেও হিসাব করা হয় তবে বিআরটিএর নতুন নির্ধারিত হারে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাস ভাড়া কোন ভাবেই ৪১ টাকা ৮০ পয়সার বেশী হবে না।
আমরা লক্ষ করছি নারায়ণগঞ্জে পরিবহন সিন্ডিকেট কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে অনৈতিক আর্থিক সম্পর্ক তৈরী করে বছরের পর বছর নারায়ণগঞ্জবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই। আমরা দাবি করছি স্থানীয় বিআরটিএর চেয়ারম্যান হিসেবে জেলা প্রশাসক অতি দ্রুত এ সংকটের সমাধান করে নারায়ণগঞ্জবাসীর পাশে দাঁড়াবেন। আমরা কোন ভাবেই এ অন্যায় মেনে নেবো না। দ্রুত এর সমাধান না হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য সরকার ও প্রশাসনকে দায়ি থাকতে হবে।