পিপিপি-সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্পনির্ভর কার্যক্রম পরিকল্পিত নগরী গড়তে বাধাঃ ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস

আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২
0

পিপিপি প্রকল্পসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্পনির্ভর কার্যক্রম পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলায় বাধা সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

নিয়মিত সাপ্তাহিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর গুদারাঘাটস্থ ত্রিমোহনী ব্রিজ সংলগ্ন জিরানী খালের বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা অপরিকল্পিত এই শহরকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি, পরিকল্পিত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু অযাচিতভাবে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিভিন্ন সংস্থা এখনো আগ্রাসন করে যাচ্ছে। বিআইডব্লিটিএ বলেন কিংবা পিপিপি প্রকল্পের নামে ঢাকা শহরে বিভিন্ন সংস্থা প্রকল্পনির্ভর কাজ করে আমাদের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করছে।”

গত বছর ঢাকাবাসী খাল হতে বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রমের সুফল পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে গত বছর থেকে আমরা খালগুলো হতে বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রম আরম্ভ করেছি। এ বছরও যথারীতি আমরা সময়মত শুরু করেছি । আপনারা জানেন, ইতোমধ্যে এ বছরও জিরানী খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছি। সেটাই আমি আজকে পরিদর্শনে এসেছি। গত বছর এই কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পেয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, চার মাস বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও শুধু প্রথম দিকে কিছু জলাবদ্ধতা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা ১ ঘন্টার মধ্যেই সেই জলাবদ্ধতা নিরসন করতে সক্ষম হয়েছি।”

গত বছর কোথায় কোথায় জলাবদ্ধতা হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যক্রম চলমান রয়েছে উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে পোস্তগোলায় আমরা ৬ ফুট ব্যাসার্ধের পাইপ বসিয়েছি। সেটা হয়ে গেলে পোস্তগোলা, জুরাইন কবরস্থান পর্যন্ত পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের এসব অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে। সুতরাং, ধীরে ধীরে অবশ্যই ঢাকাবাসী এর সুফল পাওয়া আরম্ভ করেছে। তবে খাল নিয়ে আমরা যে প্রকল্পটা নিয়েছিলাম, সেটা এখনও আলোর মুখ দেখেনি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা আবারও মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর জন্য আমরা কাজ করছি।”

দখলমুক্ত করা খাল আবারও দখল হচ্ছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আজকে আমরা এসে দেখলাম যে, আবারও দখল হচ্ছে। এই দখল, আগ্রাসন থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমি অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখলাম – – আবারও (জিরানী খালের উপর) কয়েকটা সেতু করা হয়েছে, দেয়াল করা হয়েছে। খালের জমির উপরে এগুলো করা হয়েছে। আপনারা নিশ্চয় লক্ষ করেছেন, পানির উপরেই আবার দোকান করা হয়েছে। এগুলো আমরা আবারও অপসারণ করবো।”

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “দায়িত্ব পাওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমরা যেমনি খালগুলো দখলমুক্ত এবং সেগুলো হতে বর্জ্য অপসারণ করেছি তেমনি স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছি। কিন্তু সেই প্রকল্প পাস না হওয়া পর্যন্ত, প্রকল্পের কাজ আরম্ভ না করা পর্যন্ত আমরা কিন্তু স্থায়ী সমাধানে যেতে পারছিনা। আমাদের কিন্তু প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। এ বছর আমরা যে আবারও পরিষ্কার করবো, এটা কিন্তু আমাদের জন্য বাড়তি ব্যয়। এজন্যই এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা স্থায়ী ব্যবস্থা করতে চাই । আমরা আশাবাদী, সরকার এ প্রকল্পটি দ্রুত পাস করে দেবে। এর মাধ্যমে আমরা খালগুলোর পূর্ণ সংরক্ষণ এবং সেগুলো ঘিরে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবো। তাহলে আর এ অযাচিত দখল করতে পারবে না। না হলে প্রত্যেক বছরই আমাদেরকে এটা বার বার করতে হচ্ছে এবং এই দখলের আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে।”

এ সময় করপোরেশনের কাজ দখলমুক্ত করা এবং সেটা নিয়মিতভাবেই করা হচ্ছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “কিন্তু দখলদার, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রশাসনের দায়িত্ব।”

এর আগে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস পোস্তগোলা এলাকায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) উদ্বোধন, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান কার্যক্রম, বাসাবো বালুরমাঠ পুকুরে হাঁস অবমুক্ত করেন।

পরে তিনি ধানমন্ডি হাই স্কুল মাঠে
‘ধানমন্ডি প্রগতি সংঘ’ এর ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

এ সময় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডঃ ফজলে শামসুল কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, সাধারণ আসন ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরবৃন্দ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।