প্রতিহিংসার কারনেই খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দেয়া হচ্ছে না — মীর্জা ফখরুল

আপডেট: জুন ২, ২০২১
0

‘প্রতিহিংসার কারণে’ই সরকার উন্নত চিকিসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে এখনো অসুস্থ অবস্থায় আছেন। এই সরকার কত বড় প্রতিহিংসা পরায়ন এবং তাদের যে পায়ের নিচে মাটি নেই। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিতসার জন্য হাসপাতালের ডাক্তাররা পরামর্শ দিচ্ছেন যে, বাইরে নিয়ে যাও। তারা(সরকার) বাইরে যেতে দিচ্ছে না।”

‘‘ এটা হচ্ছে তাদের দূবর্লতা, তাদের রাজনীতির যে দেউ্লিয়াপনা এবং জনগন থেকে যে বিচ্ছন্নতা তারই প্রমাণ। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা দুর্নীতিপরায়ন সরকারে পরিণত হয়েছে, এ সরকার জনগনের উপরে অত্যাচারি একটা সরকারে পরিণত হয়েছে, ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়েছে।”

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নানা দিক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পরে সবাই ভেবেছিলো যে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে, বিএনপিকে আর দেখা যাবে না। কারণ আসল নেতাই চলে গেছেন। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি একজন গৃহবধু ছিলেন তিনি পতাকাকে তু্লে ধরছেন। কিসের পতাকা? স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকা, গণতন্ত্রের পতাকা যেটাকে ধারণ করে এদেশের মানুষ বেঁচে আছে।”

‘‘ তার যে মূলমন্ত্র, তার যে আত্মা বাংলাদেশের যে আত্মা সেটা হচ্ছে ওইটা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, সেই আত্মা হচ্ছে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের আকাংখা, সেই আত্মা হচ্ছে গণতন্ত্রের আকাংখা। দীর্ঘ ৯ বছর পতাকাকে তুলে ধরে স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন। এখন অবধি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমি তো মনে করি যে, এই দেশে জীবিত আছেন যেসমস্ত রাজনীতিবিদ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মহিয়শী নেত্রী হচ্ছে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার অবদার আমি মনে করি কারো চেয়ে খাটো নয়।”

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়।

‘বিএনপিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন কারাগারে। উনি কারাগারে বলেই গণতন্ত্র এখন কারাগারে, গণতন্ত্র বন্দি হয়ে আছে।”‘‘ আমাদের অসংখ্য নেতা প্রাণ হারিয়েছেন, গুম হয়ে গেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা, ৩৫ লক্ষের বিরুদ্ধে মামলা। তারপরে কিন্তু বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিএনপি আছে, চলছে এবং অত্যন্ত সোচ্চার হয়েই আছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আসুন আমরা সমস্ত প্রতিকুলতাকে অতিক্রম করে আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের যে আদর্শ তাকে সামনে নিয়ে, তার সেই যুদ্ধ করার যে মানসিকতা তাকে সমানে নিয়ে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে আপোষহীন মনোভাব গণতন্ত্রকে রক্ষা করবার জন্য। তাকে পূঁজি করে তার নেতৃত্বে এবং ১৩ হাজার মাইল দূরে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যাকে আমরা সবাই তারণ্যে অহংকার বলি, যার নেতৃত্বে আমরা আন্দোলন করছি, সংগ্রাম করছি তাকে নিয়েই আমাদের হারিয়ে যাওয়া যে গণতন্ত্র তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো।”

‘‘ আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে পারবো এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌ্মত্বকে রক্ষা করতে পারবো-এই আহবান আমি জানাচ্ছি।”আন্দোলন. আন্দোলন, আন্দোলন’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ কখনো পিছু ফিরে তাঁকাবেন না। আর কখনো এই কথা মনে করবেন না যে, আমরা পারবো না। আমরাই পারবো এবং অবশ্যই ইনশাল্লাহ আমরা জয়ী হবো।”

‘‘ যে দানব আমাদের অধিকারগুলো হরণ করে নিয়েছে, যে দানব শুধুমাত্র লুন্ঠনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়েছে। সেই দানবকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগনের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি সরকার আমাদের প্রতিষ্ঠান করতে হবে আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।”শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বর্নাঢ্য জীবন-কর্মের ওপর প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ লেখা গ্রন্থ দুইটি সকল নেতা-কর্মীকে পড়ার পরামর্শ দেন বিএনপি মহাসচিব।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিথীকা বিনতে হোসাইন, ইয়াসীন আলীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।