বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব’র মুক্তিযুদ্ধের ডকুড্রামা কথা’৭১ নাটক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২১
0

স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ০১থেকে ১২অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিনব্যাপী গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২১ এর একাদশতম দিনে আগামী ১১ অক্টোবর ২০২১ শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে ঢাকা পদাতিক এর প্রযোজনা মুক্তিযুদ্ধের ডকুড্রামা কথা’৭১ নাটকের ৮১তম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

‘কথা’৭১ নাটকটি রচনা করেছেন কুমার প্রীতীশ বল। নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ। কথা’৭১নাটকের মূলভাবনা গোলাম মোস্তফা, কথা’৭১ নাটকের মাধ্যমেই মুক্তিযোদ্ধারা বার বার ইতিহাসের সত্যের মুখোমুখি হন। মুক্তিযোদ্ধাদের এই সত্য ইতিহাস যথার্থভাবে উপস্থাপন হয়নি বলেই তরুণদের একটি অংশ আজও বিভ্রান্ত, কথা’৭১ ইতিহাসের সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করারই একটি উদ্যোগ মাত্র।

নাটকের গল্পে উঠে এসেছে একজন মুক্তিযোদ্ধা এখনও আত্ম যন্ত্রণায় ভুগছেন। কারণ যুদ্ধাপরাধীরা রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে। ওই মুক্তিযোদ্ধা এ জন্য সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। এ ব্যাপারে তিনি কোন দলের ব্যানারে কাজটি করেন না। একেবারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামেন। তাঁর বিশ্বাস, এ কাজে অনেকেই অতঃপর এগিয়ে আসবে। এই মুক্তিযোদ্ধা একটি সফল সমাবেশ সম্পন্ন করে বাসায় ফিরে দেখেন তাঁর সন্তান ঘরে উচ্চ শব্দে ইংরেজী গান শুনছে। মুক্তিযোদ্ধা পিতা এ জন্য বিরক্ত বোধ করেন।

তিনি গান বন্ধ করে দেন। এতে ছেলে ক্ষুব্ধ হয়ে পিতার সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। পিতা-পুত্রের এই বিতর্কের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বেরিয়ে আসে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই অপারেশন সার্চ লাইট নিয়ে পাকিস্তানী আর্মিরা পর্যলোচনার মাধ্যমে গণহত্যার রূপরেখা চূড়ান্ত করে। এ সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বর্বর হামলা পরিচালনার দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। শুরু হয় গণহত্যা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সেই গণহত্যা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটের) অধ্যাপক নূরুউল্লা নিজের ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করার মধ্যমে ’৭১-এ গণহত্যার প্রামাণ্য দলিল তৈরি করেন। জগন্নাথ হলের নিহতের লাশ সরায় ডোমরা। এরই মধ্যে চুন্নু ডোম এবং পরদেশী ডোম কথা বলে ঢাকা শহরের নির্মম গণহত্যা নিয়ে।

নাটকের ভেতরেই জানা যায়, সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং মর্মান্তিক ধর্মান্তরের কথা। অধ্যাপক যতীন সরকারের স্ত্রী কানন সরকারের ধর্মান্তরের প্রতিবাদ করায় মাওলানা সাহেবকে মসজিদে খুন করে পাকিস্তানী সৈন্য বাহিনী। স্বাধীনতাবিরোধীদের শান্তি কমিটি রাজাকার-আলবদর বাহিনী গঠন, তাদের এবং পাকিস্তানী আর্মিদের অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ, গণহত্যায় দিশেহারা বাঙালী রুখে দাঁড়ায়। গঠিত হয়, মুক্তি বাহিনী, মুজিবনগর সরকার, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে পরিবেশিত অনুষ্ঠান সেদিনের বিধ্বস্ত বাঙালী জাতির মনে বিরাট আশার সঞ্চার করে।