বর্ষা কখনো প্রেম-বিরহ ডাকে কখনো মঙ্গলরূপে

আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২১
0

ডেস্ক রিপোর্ট:

রবীন্দ্রনাথের প্রথম বর্ষার গান ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা। গানটি প্রথম প্রকাশিত ভারতী পত্রিকায় ১২৮৪ সালে আশ্বিনে। আর তার শেষ বর্ষার গান শ্রাবণের বারিধারা বহিছে বিরামহারা। বর্ষার গানে কবি নানান ভাবনা নানান মুড ব্যবহ রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গানে প্রায় প্রেম-বিরহ ঘুরে ফিরে আসে।


বিরহ প্রেমেরই অনুসঙ্গ আর বিরহ ছাড়া প্রেম একেবারে অসম্ভব। প্রেমের অনেকখানি জায়গাজুড়ে থাকে পেয়ে হারাবার ভয়, না পাওয়ার ভয়, বিচ্ছেদের ভয়।
উদাহরন হিসেবে কয়েকটা গান রয়েছে যেমন –আজি বরিষণ মুখরিত/ আমার প্রিয়ার ছায়া আকাশে আজ ভাসে/বাদল দিনের প্রথম কদম ফুলগোনগুলোতে রবীন্দ্রনাথ নিয়ে এসেছেন অমোঘভাবে বর্ষার আবহ। বর্ষা যতই তার এসব গানের নিসর্গভূমি বা পটভূমি রচনা করুন না কেন , তার এই বর্ষার গানগুলো জীবনের অনুভবগুলোকে স্পর্শ করেছে বার বার যুগের পর যুগ ধরে ।

কবির কল্পনায় তখন আকাশের ঘন কালো মেঘে শুধুই যেন বিরহ । একরত্তি কোনো শিশু হয়তোবা বাড়ির সামনে রাস্তায় বর্ষার জমা জলে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে এক অনাস্বাদিত আনন্দ অনুভব করতে ব্যস্ত । আর বর্ষার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কটা আজও নিবিড় । আজও হয়তো সেই উঠতি যুবক তার প্রেয়সীকে কাছে পেতে মরীয়া । আজও হয়তো তার প্রেমের অনুভূতি টা কাব্য হয়ে ঝরে পড়ে প্রেমপত্রে ভ বাস্তবে বর্ষাকাল মানেই যেন এক নস্টালজিয়া


বর্ষাকাল মানেই যেন আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা, কখনও ঝেঁপে তো আবার কখনও মেপে বৃষ্টি । অষ্টাদশী কোনো সুন্দরীর মতো ও পল্লীপ্রকৃতিও যেন এক নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে ওঠে । দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের পাশেই যেন সবুজের সমারোহ আমাদের মনকে পুলকিত করে । খাল বিল জলে টইটম্বুর । শহরের আনাচে কানাচে দামাল ছেলেরা বর্ষায় জলকাদা মেখে দাপিয়ে ফুটবল খেলে । তবে বর্ষার বৃষ্টিতে সিক্ত মাটির সোঁদা গন্ধ শুকতে কার না ভাল লাগে । বর্ষার সঙ্গে কবি মনের সম্পর্কটা আজও সম্পৃক্ত ।

কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে বর্ষার সম্পর্ক যেন অন্য অঞ্চলগুলোর চেয়ে একটু বেশি নিবিড়। বর্ষা কৃষকের জন্য নিয়ে আসে মঙ্গলের বারতা। কালের বিবর্তনে চাষাবাদ এখন অনেকখানি আধুনিক যন্ত্রপাতির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লেও বর্ষার বিকল্প নেই। বর্ষার এ মঙ্গলরূপের বন্দনার মধ্য দিয়ে প্রতিবছর ঠাকুরগাঁওয়ের জাদুঘর লোকায়ণের উদ্যোগে ইকো পাঠশালা চত্বরে বর্ষামঙ্গল উৎসব হয়।কিন্তু গত দুই বছর ধরে মহামারী করোনায় সেগুলো বন্ধ রয়েছে।