বাঁশখালিতে পুলিশের গুলিতে নিহত ৫ : সভ্যতা বিধ্বংসী দু:শাসন চালাচ্ছে সরকার -মীর্জা ফখরুল

আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২১
0

আজ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিবর্ষণে পাঁচজন শ্রমিক নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের বর্বরোচিত গুলিবর্ষণ এবং পাঁচজন শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা ও ৩০ জনকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভরত বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে পুলিশের গুলিবর্ষণ এবং শ্রমিকদের প্রাণ কেড়ে নেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। শ্রমিকদের বুকে গুলি চালিয়ে হঠকারীমূলকভাবে শ্রমিক বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে পাঁচটি প্রাণ ঝরিয়েছে পুলিশ। এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। যেকোন ইস্যুতে আইন শৃঙ্খলাকে বাহিনীকে অপব্যবহারের ফলে বারবার এধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে।

গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করা যেন বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সরকারের এহেন কর্মকান্ড ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। দেশে এখন এমন এক কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে যেখানে মানুষের কোন অধিকার নেই, যেখানে দাবি আদায়ের জন্য কোন আন্দোলন করা যাবে না কিংবা প্রতিবাদ করা যাবে না। এই সরকারের কাছে মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই, বরং বিপন্ন হয়েছে। জনগণের প্রতি গণবিচ্ছিন্ন সরকারের কোন দায়-দায়িত্ব নাই।

সরকারের সকল আচরণই নিষ্ঠুর, অমানবিক ও গণবিরোধী। সরকারের ব্যর্থতা ও ভুল নীতির কারণেই সমাজে চরম নৈরাজ্য, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। ভোটারবিহীন সরকারের জবাবদিহিতা থাকেনা বলেই গোটা সরকারই আজ বেপরোয়া রুপ ধারণ করেছে।
যে শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সেই শ্রমিকদের বুকে গুলি চালানো কেবলমাত্র আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসকদের পক্ষেই সম্ভব। যার বিকৃত প্রতিক্রিয়া সারাদেশে ফুটে উঠতে শুরু করেছে। আজ বাঁশখালীতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ করে পাঁচজন শ্রমিককে হত্যা ও কমপক্ষে ৩০ জনকে গুরুতর আহত করার ঘটনা নিঃসন্দেহে দেশে বিরাজমান দু:শাসনেরই বহি:প্রকাশ। দেশে এখন সভ্যতা বিধ্বংসী অমানবিক শক্তির উত্থান ঘটেছে।

এর আগে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল একই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকে ঘিরে স্থানীয় জনসাধারণের ডাকা সমাবেশের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল। আজ আবারও একই স্থানে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও পাঁচজন শ্রমিক হত্যার ঘটনা কলঙ্কজনক ইতিহাস হয়ে থাকবে। ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি ও পবিত্র রমজান মাসে বর্তমান নিষ্ঠুর সরকার মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে।

আজ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে পাঁচজন শ্রমিককে হত্যা ও ৩০ জনকে গুরুতর আহত করার নির্দয় ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানাচ্ছি। নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও আহবান জানাচ্ছি।”