বাংলাদেশের শহরে বসবাসকারী অর্ধেক পরিবারই দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে: বিশ্বব্যাংক

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
0

দেশের শহরাঞ্চলে বসবাসকারী অর্ধেক পরিবারই, দরিদ্র হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। আর, শহরের আট শতাংশ দরিদ্র মানুষ, কোনো ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের সুবিধা পান না।

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গ্রাম ও শহরের দরিদ্রদের জন্য দেওয়া বিভিন্ন বরাদ্দের সুফল, অনেক সচ্ছল ব্যক্তি পাচ্ছেন জানিয়ে বিশ্বব্যাংক বলছে, এই খাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নজরদারি বাড়ানো জরুরি।

সামাজিক সুরক্ষাখাতে সরকারি ব্যয় বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দগুলো সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছাতে সময় লাগছে অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে শহরের ১৯ শতাংশ মানুষ দরিদ্র হলেও, বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আসছে মাত্র ১১ শতাংশ মানুষ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তদের ২০ শতাংশ এবং অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে ৩৮ শতাংশ মানুষ দরিদ্র না হয়েও সুবিধা নিচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালাইন কোডুয়েল বলেন, ‘দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশে সুপরিকল্পিতভাবে দীর্ঘমেয়াদি বড় প্রকল্প হাতে নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা যাতে এসব প্রকল্পের সুফল পায়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। সর্বোপরি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।’

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন প্রকাশের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, শহরে বসবাসরত শ্রমিক ও পথশিশুদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তার আওতায়, প্রকৃত দরিদ্ররাই যাতে থাকে, সেটি নিশ্চিতের তাগিদ দেন তাঁরা।

ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা দেখছি, করোনার সময়ে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়ছে। কিন্তু, এসব প্রকল্পের আওতায় নামমাত্র সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দ বাড়িয়ে এই জায়গায় আরও উন্নতি করতে হবে আমাদের।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলোর কার্যকর বিকেন্দ্রীকরণ করে পুরো দেশের মানুষকে এর সুবিধার আওতায় আনতে হবে। সেইসঙ্গে প্রকল্পগুলো সমন্বয়ের জন্য একটি জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কাউন্সিল গঠন করা উচিত।’

দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি আট জনের এক জন শিশু জানিয়ে বিশ্বব্যাংক বলছে, এসব শিশুদের ওপর বিনিয়োগ, দীর্ঘ মেয়াদে দেশের দারিদ্র্য নিরসনে সহায়ক হবে।