বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে- শিল্পমন্ত্রী

আপডেট: জুলাই ১০, ২০২৪
0

ঢাকা (১০ জুলাই, ২০২৪ খ্রি.):

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং ভাষার দৃঢ় বন্ধনের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্ক হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফরের মধ্য দিয়ে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। সফরে উভয় দেশের নেতারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার করার উপর জোর দেন এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) লক্ষ্যে শীঘ্রই আলোচনা শুরু করার জন্য লেটার অফ ইনটেন্ট (LOI) স্বাক্ষরের প্রশংসা করেন। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে।

মন্ত্রী আজ রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে ঢাকাস্থ রয়্যাল থাই দূতাবাস এবং থাই ট্রেড সেন্টারের যৌথ আয়োজনে চার দিনব্যাপী (১০-১৩ জুলাই) “শীর্ষ থাই ব্র্যান্ড” ট্রেড ফেয়ার ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত Makawadee SUMITMOR এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন থাই দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অভ মিশন ও মিনিস্টার কাউন্সেলর Phanom Thongprayum এবং মিনিস্টার কাউন্সেলর (কমার্শিয়াল) Khemathat Archawathamrong।

মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া (আসিয়ান) অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে থাইল্যান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বছরের পর বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আরো বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়াতে পারি; অবকাঠামো এবং কানেক্টিভিটি উন্নত করতে কাজ করতে পারি; বিশেষ করে থাইল্যান্ডের রানং (Ranong) বন্দর এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি শিপিং রুট স্থাপন করা যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড বৃহত্তর সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য এখানে ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান। মন্ত্রী বলেন, আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ) তৈরি করছি এবং সেখানে থাই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার আহবান জানাই। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে তৈরি পোশাক (আরএমজি), ওষুধ, হিমায়িত খাদ্য, ক্যাবল, চাল, কৃষিপণ্য, হস্তশিল্প, পাট, আলু এবং সিরামিক ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি সম্প্রসারণ করতে চায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থাইল্যান্ড থেকে খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, ক্যানিং, প্যাকেজিং, আইটি, পর্যটন, চিকিৎসা পর্যটন এবং চিকিৎসা কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন দক্ষতা আমদানি করতে চায়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মনোমুগ্ধকর থাই নৃত্য পরিবেশিত হয়।

উল্লেখ্য, আকর্ষণীয় থাই পণ্যের এই মেলায় ৬৪টি থাই প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে থাই পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসমূহ অংশগ্রহণ করছে। মেলায় খাদ্যপণ্য, জুয়েলারি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রসাধনী, বেডিং, স্পা, ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি, টেক্সটাইল, অন্তর্বাস, স্টেশনারি, গৃহস্থালি পণ্যসহ নানা ধরনের বিশ্বমানের থাই পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।