বাংলাদেশ-পাকিস্তানের বাণিজ্য বেড়েছে ৩৮%

আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২১
0

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বেড়েছে ৩৮ দশমিক ১২ শতাংশ। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে পণ্য ও সেবা রফতানি বাবদ পাকিস্তানের প্রাপ্ত অর্থমূল্য ছিল ১৭ কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার ডলার।

চলতি বছরের শুরুতে ঢাকায় বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পাকিস্তানি কূটনীতিকদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে জোর দেয়।

সভায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য চলমান। বাংলাদেশ থেকে চা, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, তৈরি পোশাক, সিরামিক পণ্য, পাদুকা, চামড়াজাত ও পাটজাত পণ্য পাকিস্তানে রফতানি হয়। এ রফতানি আরো বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রফতানিতে অ্যান্টিডাম্পিং কর আরোপের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। উভয় দেশের মধ্যে গঠিত জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের (জেইসি) সভায় সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা সম্ভব বলে জানায় বাংলাদেশ।

অন্যদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশটির সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সুসম্পর্ক বজায় রেখে ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে আগ্রহী পাকিস্তান। পাকিস্তানিদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশ সফরের ভিসা সহজীকরণ এবং পণ্য পরিবহনে ঢাকা-করাচি সরাসরি যোগাযোগ চালুর তাগিদও জানানো হয় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। এছাড়া পাকিস্তানে বাংলাদেশী পণ্যের একক বাণিজ্যমেলা করার আহ্বান জানিয়ে জেইসির নবম সভার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য ও সেবা আমদানি বাবদ পাকিস্তানের পরিশোধ করা অর্থমূল্য ছিল ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪৬ হাজার ডলার। এ হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দুই দেশের বাণিজ্য হয়েছে ১৯ কোটি ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ডলারের। আর পাকিস্তানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ১৫ কোটি ৭৯ লাখ ৪৩ হাজার ডলার।

এদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে পণ্য ও সেবা রফতানি বাবদ পাকিস্তানের প্রাপ্ত অর্থমূল্য ছিল ১২ কোটি ৭৪ লাখ ৮৭ হাজার ডলার। একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য ও সেবা আমদানি বাবদ পাকিস্তানের পরিশোধ করা অর্থমূল্য ছিল ১ কোটি ২১ লাখ ১৮ হাজার ডলার। এ হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দুই দেশের বাণিজ্য হয়েছে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ৫ হাজার ডলারের। আর পাকিস্তানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ১১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৯ হাজার ডলার।

বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অধীন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে রফতানি হওয়া পণ্যের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো ওভেন ও নিট পোশাক, হোমটেক্সটাইল, কৃষিপণ্য, চামড়াজাত পাদুকা, কাঁচাপাট ও পাটজাত পণ্য। এদিকে পাকিস্তানের বাণিজ্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য বেশি আমদানি করে তার মধ্যে আছে তুলা, সুতা, কাপড়, গম, কেমিক্যাল, প্লাস্টিক উপকরণ, ফল, চামড়া, মূলধনি যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক পাখা, চাল, মশলা, মাছ, পেট্রোলিয়াম পণ্য, পোশাক ও আসবাব। এছাড়া পাকিস্তানি শিশুখাদ্য, জুস, কাটলেরি ও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামেরও বড় বাজার রয়েছে বাংলাদেশে।