গাজীপুর প্রতিনিধিঃ জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির অবক্ষেপন ও অবক্ষয় এবং ভূমিরূপ পরিবর্তন নিয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট রিসার্চ অধ্যাপক মাইকেল এস. স্টেকলারের এক সেমিনার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) শিক্ষক সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়। বাউবি’র প্রায় শতাধিক শিক্ষক এ সেমিনারে অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মেজবাহ উদ্দিন তুহিন বৃহষ্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
অধ্যাপক স্টেকলার বলেন, বিগত বছর গুলোতে বাংলাদেশের ভূমিরূপ পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ, জনজীবন এবং অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন এসেছে তা সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারনীদের গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত। বিশেষ করে, বামার্ থেকে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন ও পরিবর্তিত রূপ নিয়ে অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার ও লিওনার্দো সিবার যে গবেষণা পত্র তৈরি করেছিলেন তার নানা দিক বুধবারের সেমিনারে তুলে ধরেন তিনি।
ধারাবাহিক গবেষণায় প্যালিওজিন কালপর্ব থেকে হিমালয় পর্বতের যে অবক্ষয় তার সঙ্গে এই অঞ্চলের মানব বসতি স্থাপন ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের উপর যে প্রভাব তার বিশদ আলোচনা করেন তিনি। ইনসার মেজারমেন্ট মডেলিং, জিপিএস ও জিআইএসের পাশাপাশি ফটোগ্রামেটির মতো ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞানের গবেষণা পদ্ধতি এখানে তুলে ধরা হয়।
তিনি বলেন, উজানের গুরুত্বপূর্ণ স্রোতস্বিনী হিসেবে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় অবক্ষেপন, পললায়ন, ভাঙ্গন ও জেগে উঠা চর জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি অবলম্বনের দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ ও নিবিড় বিশ্লেষণ এই অশনি সংকেতের পূর্বাভাস দিয়ে আসছে। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন ও সম্বৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর গতিপথ বদল জনিত কারণে ভূমিরূপের রূপান্তর ও তার সঙ্গে সম্পর্কিত অঞ্চলের মানব জীবনধারার প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেন অধ্যাপক স্টেকলার। আর্থ-সামাজিক সংগঠন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদি নীতি নির্ধারণে এই গবেষণা নবীনদের উৎসাহিত করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২০ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক ও বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতারের সঙ্গে প্রাকৃতিক দূযোর্গ নিয়ে যৌথ গবেষণা করছেন অধ্যাপক মাইকেল এস. স্টেকলার।