বানভাসী মানুষের ত্রাণের অর্থ সংগ্রহ করবে বিএনপি

আপডেট: জুন ২১, ২০২২
0

বানভাসী মানুষের ত্রাণের অর্থ সংগ্রহ করতে সাধারণ জনগনের সহযোগিতা নেবে বিএনপি। আগামী ২৩ জুন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে এই কার্য্ক্রম শুরু করবে তারা।

মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের ত্রাণ কমিটির আহবায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

তিনি বলেন, ‘‘ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী ২৩ তারিখ থেকে প্রথমে আমরা জনগনের কাছে লিফলেট বিতরণ করবো। লিফলেটে তাদের(জনগনের) কাছে আমরা ভিক্ষা চাইব। জনগনের কাছ থেকে যে যা দেয়- এক টাকা দেন, ৫০ পয়সা দেন- সবার কাছ থেকে আমরা ভিক্ষা চাইব। পরের দিন আমরা যাবো, ভিক্ষা চাইব- তারা যা দেবেন এটা আমরা গচ্ছিত করব, গচ্ছিত করে এটা আমরা বন্যার্তদের কাছে পাঠিয়ে দেবো।”

‘‘ এটা করার মূল কারণটা হচ্ছে, আমরা জনগনের দল। ডোনেশনে ১০ জনের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার চাইতে কোটি জনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে করা যাতে জনগন জানল যে, আমি পার্টিসিপেশট করছি। আমরা সেটা বাহক হিসেবে দিয়ে আসলাম। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এই কার্য্ক্রম অনুমোদন দিয়েছেন।চেয়ারম্যানের নির্দেশ বন্যার্তদের জন্য ঝাপিয়ে পড়তে হবে।”

বিএনপির ত্রাণ কমিটির আহবায়ক বলেন, ‘‘ জনগনকে সম্পৃক্ত করার এই কাজটি সুন্দরভাবে আপনাদের করতে হবে। আগে আমরা ছোটবেলায়্ এখনো মনে আছে ঢাকায় আমরা তখন ধানমন্ডির মধ্যে ছোট ছোট একতলা-দোতলা বাড়ি ছিলো। আমরা বাড়ির গেইটের সামনে গিয়ে লাল সালু কাপড় নিয়ে দাঁড়াতাম যে, বন্যার্তদের জন্য সাহায্য দেন। বাড়ি থেকে মা-বোনেরা যা দিতো ওইগুলো নিয়ে একজায়গায় জমা করে পরে আমরা নৌ্কা ভাড়া করে চলে যেতাম বন্যার্তদের কাছে। এতে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ে।”

‘‘ কিছু বড় লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিয়ে আসলাম কেউ বুঝলো না-কিভাবে কি হয়েছে। আর যখন মানুষের কাছে যাবেন, ঢাকার জনগনের যাবেন তারা কিছু না কিছু দেবেন-এর মাধ্যমে আপনারা মানুষকে সম্পৃক্ত করছেন। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে কাফেলা বের হয় মানুষের কাছ থেকে সাহায্যের চাইতে হবে। বন্যার গাইন বেধে এই কাজে নামতে হবে- এটাই গণসংগঠনের কাজ।”

টুকু বলেন, ‘‘বন্যার পর থেকে বিএনপি মাঠ পর্যায়ে পানিবন্দি মানুষের পাশে আছে, তারা দিনরাত কাজ করছেন। আমাদের নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ হাজার লোককে রান্না করে খাবার খাওয়াচ্ছে। প্রতিদিন নৌকা ভাড়া করে প্রায় ৫‘শ পানিবন্দি লোককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ এক সিলেটের বন্যা দিয়ে বন্যা শেষ হবে না। আমরা ভাটির দেশের লোক। উজানে আসামে যতই বৃষ্টি হবে ততই বাংলাদেশে প্রত্যেকটা জেলায় পানি আস্তে আস্তে ঢুকতে শুরু করবে। গতকাল যেমন আমার জেলা সিরাজগঞ্জ শহরে পানি ঢুকে গেছে, গাইবান্ধায় পানি ঢুকেছে, বগুড়ার একটা অংশে পানি ঢুকে গেছে, সরিষা বাড়ি দিয়েও পানি ঢুকেছে।”

‘‘ পানি সারাদেশে ঢুকেছে। সেজন্য বলছি, আমাদের এই কাজটা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কাজ। আমরা তিনটা কাজ করবো। আমরা তিনটা পর্যায়ে কাজ করবো। একটা হচ্ছে- মানুষের জীবন বাঁচানো। পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে এনে তাদের খাবার সরবারহ করা। তারপরে যখন বন্যার পানি নেমে যাবে তখন তাদের পূর্ণবাসনের কাজ শুরু করা, বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষজনের রোগ-বালাই হবে তাদের চিকিতসা সেবা দেয়া-ইত্যাদি কাজগুলো করতে হবে। আমরা একটা কম্প্রিহেনসিভ একটা প্রোগ্রাম নিয়েছি।”

মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় এই সভায় উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানও বক্তব্য রাখেন।