বানারীপাড়ায় নৌকার প্রার্থীদের গলার কাঁটা বিদ্রোহী প্রার্থীরা

আপডেট: মার্চ ১৯, ২০২১
0

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥
বরিশালের বানারীপাড়ায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিপরীতে স্বতন্ত্র ব্যানারে ২১জন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়াও জাসদের একজন ও এনপিপির দু’জন প্রার্থী রয়েছেন। ফলে বিদ্রোহী প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছেন। বিএনপি প্রার্থী না থাকার পরেও স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারনে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার মোক্ষম সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে গেছে।

এছাড়া দলীয় নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বানারীপাড়া উপজেলায় নৌকার বিপরীতে সর্বোচ্চ প্রার্থী হয়েছেন উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদে। এ ইউনিয়নে নৌকার বিরুদ্ধে ৬ জন প্রার্থী হয়েছেন।

তারা হলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজেম আলী হাওলাদার, মো. আবুল কালাম হাওলাদার, মো. সালাউদ্দিন মিন্টু, মো. খায়রুল আলম, খোকন সিকদার ও এ কে আজাদ। তবে এদের মধ্যে একে আজাদ জাসদ মনোনীত প্রার্থী। বাইশারী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল চক্রবর্তী। বিশারকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক, আওয়ামী লীগ নেতা মো. জাকির হোসেন বাহাদুর, আলাউদ্দিন বাবুল ও মোয়াজ্জেম হোসেন প্রার্থী হয়েছেন ।

এখানে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শান্ত। চাখারে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খিজির সরদার,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান মিলন ও আইয়ুব সিকদার। এনপিপির প্রার্থী হয়েছেন মো. মামুন সিকদার। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ,ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। উপজেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ হুমায়ুন কবির হত্যা মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামী উপজেলা আওয়ামী লেিগর সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকুকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় নিজ দলের পাশাপাশি জাসদ নেতা-কর্মীদের মাঝেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি মনোনয়ন পত্র জমাদানের সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. মালেক হাওলাদারসহ সহযোগী সংগঠনের উল্লেখযোগ্য কোন নেতাকে তার সঙ্গে দেখা যায়নি। উদয়কাঠি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক দু’চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ও মামুন-উর-রশিদ স্বপন এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান মিলন মুন্সী। এ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মোস্তফা তালুকদার দলীয় প্রার্থীর পাশে নেই। তিনি অবস্থান নিয়েছেন তার দুই ভাই বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক দু’চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ও মামুন উর-রশিদ স্বপনের।

এ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান মিলন মুন্সী নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী। উদয়কাঠি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক রাহাদ আহম্মেদ ননী। ইলুহারে ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুস ছালাম ও শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বাদশা। এখানে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম দুলাল তালুকদার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এখানে এনপিপির প্রার্থী হয়েছেন কাজী হাফিজুর রহমান।

এ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান মাষ্টার। বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মু মুনতাকিম লস্কর কায়েস। এখানে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আ. জলিল ঘরামী। এদিকে ৭ ইউনিয়নে সাধারণ সদস্য পদে ২৫৫ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৫ জন তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাগেছে। প্রসঙ্গত উপজেলার অপর ইউনিয়ন সৈয়দকাঠিতে ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপে নির্বাচন হচ্ছে না।
রাহাদ সুমন,
বানারীপাড়া প্রতিনিধি