বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ও এরদোগানের শান্তির বার্তা’

আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২
0

ডা.জাকারিয়া চৌধুরী :

দ্বি-কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার মুল সমস্যাকে বুঝাতে আপনারা যতই ডান কিংবা বাম বলুন না কেন, এর পেছনে অসুরের মত দাঁড়িয়ে রয়েছে ধর্ম আর অর্থনীতির একক আধিপত্য। ভ্লাদিমির পুতিন সেই একত্ববাদের হিংস্র থাবাকে মেনে নেননি। তিনি সেটা ভাঙ্গার চেষ্টা করেছিলেন। ব্যাক্তি পুতিনের সাহস ও যোগ্যতাকে আমি প্রচন্ড সম্মান করি। তিনি এ ব্যাবস্থার ডি-সেন্ট্রালাইজেশন চেয়েছেন। অনেকটা কমিউনিস্টদের ত্বাত্তিক থিমের মত যেখানে সবাই ইকুয়েল স্ট্যান্ডার্ডে কথা বলবে, চলবে ফিরবে। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের সবচে বেশি সময় দিয়েছেন এসপিউনাজ হিসেবে ইউরোপিয়ান কান্ট্রিগুলোতে। তার ভুল হয়েছে একটা-ই। তিনি হয়তো জীবনে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন, দিন শেষে যুদ্ধটা নিজেকে-ই করতে হয়। তিনি অল্প বন্ধুতে তুষ্ট থেকেছেন। তিনি হয়তো জানেন না যখন এ লেখাটা লিখছি তাঁর চারদিন আগে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা পালটে গেছে। এখানে দুনিয়ার সবচে বিশ্বস্ত বন্ধুকেও পায়ে শেকল পরিয়ে রাখতে হয়। আর এই কাজটা ইউ এস করে এসেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে-ই। জাতিসংঘ নামক কিছু চাকরবাকরদের দিয়ে কিভাবে অন্য দেশগুলোকে নিজের গ্রীপে রাখা। কখনো রাশিয়া, কখনো চীনকে শায়েস্তা করতে। আর মুসলিম জাতিকে গনহত্যা করতে কাউকে বলারও প্রয়োজন নেই। পুতিন শেকলে বাধা বন্ধু রাখেননি, রেখেছেন বিশ্বাস। এজন্য দিন শেষে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পুরো রাশিয়ার মালিক হয়ে যাবে আমেরিকা। তারা সেখান থেকে ফোটায় ফোটায় তেল দান করবে যারা তাদেরকে সেজদা করবে। এটা ইউ এস পলিসি অব বিজনেস। দিস ইজ নট এ ক্রাইম। আবার খুনীদের ব্যাক্তিগত তালিকা করলে দেখা যাবে পুতিন-ই হবেন দুনিয়ার এক নাম্বারের খুনী। তো যা বলছিলাম কমরেডস……

বিশ্ব শক্তির মহামানবেরা যে যত স্যাকুলারই হোক না কেন, তলে তলে ধর্মীয় আশির্বাদ ছাড়া বর্তমান জমানায় কেউ ক্ষমতায় আসলেও থাকতে পারেনা। ক্ষমতায় থাকতে চাইলে হয় ধর্মানুসারী হতে হবে নয়তো ধর্ম বিদ্বেষী হতে হবে। নো অলটারনেটিভ ইজ দেয়ার। ক্ষমতাকে সু-সংহত করতে হলে কিছু একটা তো হতে হবে ! সব গনতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্রের স্থায়িত্ব চলে ধর্মের আশির্বাদ কত দিন আছে তাঁর উপরে। মুখে গনতন্ত্র নিয়ে আজ রাতে শফি হুজুরের বিছানায় গেলে, কাল যেতে হয় মুদি দোকান্দারের ঘরে। চলে ধর্মের খেলা। রাশা-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের মধ্যেই শুনি দ্বিতীয় নিরাপদ একটা ইসরাইল রাষ্ট্র তৈরী হবে। ভাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ করেছে কারা আর এর খেসারত দিয়েছে কারা মনে আছে ? প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রটা চুরি হয়ে গেল মাঝখান থেকে। জন্ম নিল ইসরায়েল। তো সেই ইসরাইল ইরানের পাশে খোলা ময়দানে দাঁড়িয়ে তার জনগনকে যুদ্ধের ঝুকিতে ফেলবে না। কারন পিকচার আভি বাকি। এখন আগে তৈরী হবে ইসরায়েল দ্যা সেকেন্ড স্টেট, মুল যুদ্ধ শুরু হবে পরে। অনেকেই দেখি বলতে চায় এই নিউ ইসরাইলের সেকেন্ড হোম হবে ইউক্রেনে। এ ত্বত্ত্ব আমি ব্যাক্তিগতভাবে বিশ্বাস করিনা। এটা নিজের পায়ে নিজের কুড়াল মারার মত। নতুন ইসরাইল হলে, রাষ্ট্রটি ইউক্রেনের পোড়ামাটিতে কি করবে ? তাছাড়া রাশা যতদিন নিঃশ্বাস আছে তারা ততদিন এদেরকে গুলি চালিয়েই যাবে। বরং, মিজোরামকে রাজধানী ধরে তার চারপাশের বন জংগল এবং পাহাড় বেষ্টিত এরিয়া গুলোকে একটা কাল্পনিক রাষ্ট্র কল্পনা করুন। এর সুবিধা অসুবিধা ও বাস্তবতাকে কল্পনা করুন। এখানে আছে নিরাপদ আকাশ পথ, চিনে’র বেল্ট এন্ড রোডের বিশাল সুবিধা ( চিন সেটা এলাও করবে কিনা সে ভাবনা পরে ভাবুন ) এবং সবচে জরুরী সিকিউর্ড পানি পথ। আছে ইরাবতী নদী ও নদীবন্দর। আরাকান, চট্রগাম সমুদ্রবন্দর সুবিধা। আছে সাবমেরিন ঘাটি। পড়শি হিসেবে পাশে আছে উড়িষ্যা বন্দর ও ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা। আছে টেকনাফ থেকে চট্রগ্রামের মত বিশ্বের সবচে বড় কোস্টাল লাইন। এখানে দ্বিতীয় ইসরাইল জন্ম দিতে গিয়ে ইউ এসে’র সব গুলো ফ্লিট যদি জড়ো করতে হয়, আছে সে পরিমান স্থানও। কে না জানে, ইজরাইলের জন্ম হয়েছে ফিলিস্তিনি ভুমিপুত্রদের তাড়িয়ে মাড়িয়ে। যে সুবিধা তেল আবিব কিংবা হাইফাতে নেই তাঁর একশ’গুন বেশি সুবিধা আছে এ অঞ্চলে।। মনে রাখতে হবে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইহুদি জনগোষ্ঠীর বাস মিজোরামে যেখানে ভারতীয় আইন চলে না। মিজোরামের ইহুদিদের লিভিং স্ট্যান্ডার্ড ইউরোপ আমেরিকার মতই সমান। অথচ পাশের স্টেট ত্রিপুরা’র অর্থনীতি এখনো কাঠাল, আনারস, লাকড়ি, গাজা বিক্রির টাকা আর রাষ্ট্রের থোক বরাদ্ধতেই সীমাবদ্ধ।

ভাবছেন ভারত কেন ইজরাইলকে মিজোরাম দিয়ে রেখেছে বা তারা কিছু কয় না কেন ? বলি কইবে কেন ? ১৯৯৮ সালের কারগিল যুদ্ধে হেরে যাওয়া ভারতকে বাচিয়ে দিয়েছে ইসরাইলি ইন্টেলিজেন্স, ড্রোন, এবং ভারতীয় ট্যাগ লাগানো ইসরাইলি বিমান ও তাদের অফিসারেরা। সেদিন ভারতের জন্য ইসরাইল ছাড়া আর কেউ ছিল না। ইহুদি মেয়েরা মা হতে চায় না, অথচ তাদের জনসংখ্যা বাড়ছে নিয়মিত। বলেন- ক্যামনে ? বলি, ভারতীয় নারীরা গড়ে দেড় থেকে দুই লক্ষ রুপির বিনিময়ে ইহুদি সন্তান জন্ম দেয়। শুরু থেকেই তাদের চিকিৎসা ও খাওয়া থাকার পুরো ব্যাবস্থা করে ইসরাইল সরকার। ইহুদি বাচ্চারা আমাদের মত কানা খোড়া পদ্মলোচন হয় না। কেন হয়না ? কারন ডিফেক্টেড ভ্রুন তারা শুরুতেই নষ্ট করে দেয়। তারা তাদের প্রতিটা সন্তান জন্ম দেয় রাষ্ট্রীয় জিডিপি বাড়াতে। আর আমরা একজনে কামাই করি বারোজনে বইয়া বইয়া খাই। ইসরাইলে বাসা বাড়িতে ঝিয়ে’র কাজ করে ভারতীয়রা। এতে অল্প খরচে বাসায় একজন ঝি রেখে তারা নিশ্চিন্তে কাজ করে। তাদের আয় বাড়ে, জিডিপি লাফায় মিনিটে মিনিটে। সে তুলনায় এসব ঝিয়ে’র বেতন দিতে হয় তাদের জনপ্রতি আয়ের এক শতাংশেরও কম ডলার।

কেন ইউক্রেনে তাদের দ্বিতীয় বসতি হবে না, আসেন আরেকটু ভাবি ! ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলোনস্কি নিজে একজন ইহুদি। যুদ্ধ শুরুর প্রথম সপ্তাহে-ই সে ইউক্রেনের ইহুদিদের পাঠিয়ে দিয়েছে জেরুজালেমের হাতে। পুরো যুদ্ধে একজন ইহুদিও কি মরেছে ? মরেনি অথবা আমি জানিনা। ইউক্রেনকে তাদের সেকেন্ড হোম কল্পনায় রাখলে এ যুদ্ধ শুরুই হত না। হলেও যুদ্ধটা এতোদিনে থেমে যেত। কিন্তু এটা কখনো-ই আর থামনে না। কারন ইউক্রেন যুদ্ধের নিয়ন্ত্রন এখন জেলোনস্কির হাতেও নেই। থাকলে সে জনগনের চাপে হলেও একটা আলোচনার চেষ্টা অন্ততঃ করত। আমেরিকা-ইসরাইল-ব্রিটেন যুদ্ধটা বাধিয়ে রেখেছে । তারা দুইশ কোটি মানুষের একটা পৃথিবী দেখতে চায়। এক সরকার এক রাষ্ট্র ব্যাবস্থা চায়। গতকাল রাত থেকে সিরিয়া আবার অশান্ত হয়ে উঠেছে। মানে যুদ্ধের পরিধি বাড়ছে । তো যা বলছিলাম, ইংগ-মার্কিন জোট অপেক্ষায় আছে চায়নাকেও যুদ্ধে নামানোর জন্য। সেজন্য অবিরাম চেষ্টা চলছে। ন্যান্সি প্যালোসি যে দেশ সফর করে সে দেশ ধ্বংস হয়ে যায়- এ কথাটা আমেরিকানরাই বলে। সে তাইওয়ান ভিজিট করার পরেও অবিরাম সেখানে ইউএস অফিশিয়ালদের ভিজিট চলছে। ইউক্রেন আক্রান্ত হবার এক যুগ আগে থেকেই সি আই এ ইউক্রেনকে আজকের চলমান এই যুদ্ধের প্রশিক্ষন দিয়ে আসছিল। মানে তারা জানতো, এখানে রাশিয়াকে একদিন না একদিন আসতেই হবে। ঠিক একই কারনে চায়নাও যাবে তাইওয়ানে। তারা চায় প্রতিযোগীতাহীন একটা বিশ্ব ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে । সেজন্য যতদিন চায়না তাইওয়ানে না নামবে ততদিন আমেরিকা যুদ্ধ ময়দানে আসবে না। কিন্তু তাইওয়ানকে অস্ত্র দিয়ে দিয়ে নাদুস নুদুস করতে-ই থাকবে। এক সময় নিজ অস্তিত্ব বাঁচাতে হলেও চায়না তাইওয়ানে প্রবেশ করবে যেমনটা করেছে রাশিয়া। একইভাবে তাইওয়ান স্ট্র্যাইটে যুদ্ধ শুরু হলে ইউ এস তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি করতে থাকবে। ইউক্রেনের সাথে যা করল তাঁর প্রেক্ষিতে কল্পনাকে বড় করছি। এভাবে তাইওয়ানের সর্বশেষ টাকাটাও যখন ব্যায় হয়ে যাবে তখনও যুক্তরাষ্ট্র আজ আসছি, কাল আসছি বলে কাল ক্ষেপন করতে থাকবে যা এখন চলছে ইউক্রেনের সাথে। গত দুইটা বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যতদিনে যুদ্ধে জড়িয়েছে ততদিনে অন্যেরা ঠাপাইতে ঠাপাইতে হয়রান হয়ে গেছে। ইউ এস প্রথমে একজন দানব সাদ্দাম বানায় তারপর সেই দেশটাকেই তারা ধ্বংস করে। আবার নতুন করে অস্ত্র বিক্রি শুরু করে। এক ইরাক থেকে ২০০৩ সাল থেকে আজতক প্রতিদিন যুদ্ধ ব্যায় বাবদ ১১ লাখ ব্যারেল ক্রুড ওয়েল চুরি করছে ইউএস সরকার। ইউক্রেন যুদ্ধ আরও ছয়মাস বা এই শীতের সময়টাও যদি লিংগার করা যায় তবে ইউক্রেনের সাধারন মানুষ মরবে তীব্র ঠান্ডায় এবং একই সাথে রাশানরাও হয়রান হবে। চীনকে তাইওয়ান প্রনালীতে যে কোনো উপায়ে তারা হয়রান করবে এবং যুদ্ধে নামিয়ে ছাড়বে। আমার মনে হয়, ইহুদিদের জন্য দ্বিতীয় নিরাপদ ভুমি নির্মান এবং তাদের মাইগ্রেশন নিশ্চিত করার পর আমেরিকা ওয়ার ফিল্ডে আসবে বলে । ইসরাইল জানে ভারত তাদের মিজোরামের পর আর বাড়তি জায়গা চাইলেও দিতে পারবে না। কিন্তু এটুকু জমি তো তাদের জন্য যথেষ্ট নয় ! তাদের চাই নিরাপদ ও আয়েশী জীবন। আরও ভুমি প্রয়োজন। তাহলে, বাকি জমি আসবে কোত্থেকে ? ইস আরাকান, বর্মার চীন রাজ্য এন্ড আওয়ার হিল ট্র‍্যাক্টস যদি পাওয়া যেত তাহলে কতই না ভালো হতো ! চলুন কল্পনার জগৎ আরেকটু লম্বা করি। ধরে নিলাম, এর অংশ হিসেবে আমাদের পার্বত্য অঞ্চলে শুরু করা হল খ্রিস্টানাইজেশন। কাজটা তারা শুরু করে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে। হতদরিদ্র অশিক্ষিতরা খাবার চায়, ধর্ম নয়। ধর্মে পেট ভরে না। এনজিও গুলো তাদেরকে স্বচ্ছল করে তুলছে। পাদ্রীরা তাদেরকে খ্রিস্টান বানাচ্ছে। গত কিছু বছরে এসব এনজিওদের কাজে যারা-ই বাধা দিয়েছে, সুলতানা কামালেরা দলবল নিয়ে ছুটে গেছে বারবার। মনে পড়ে কিছু ?

বার্মার সুচী’র নোবেল পাওয়া, পশ্চিমা নাগরিক খুব সম্ভব ইহুদি বিয়ে করা, ক্ষমতায় আসার পেছনে পশ্চিমাদের বিরাট অবদান আছে। দে মেইড হার সুচী……খুব সম্ভব এই কারনে বর্মার সেনাবাহিনী সুচিতে আস্থা রাখতে পারেনি। ৮৬ শতাংশ ভোট পাওয়া কোন নেতাকে ছুড়ে ফেলার ইতিহাস বিশ্বে দুইটি নেই। আবার পশ্চিমাদের কর্মকান্ডের দিকে নজর রাখছে এমন লোকও তো আছে, নাকি নাই ? সুচী ওদের স্বার্থ দেখবে বিনিময়ে ক্ষমতায় থাকবে। হতে পারে এই আশংকা থেকেই বার্মা বাহিনী চেষ্টা করেছে ইঙ্গ- ইসরাইলের পাতা ফাদে পা না দিতে। প্রয়োজনে দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতে যেতে চেয়েছে বাংলাদেশের সাথে। এতে পুরো পরিস্থিতি উলটে যাবার ভয়ে আমেরিকা সর্বোচ্য দ্রুত গতিতে বার্মার যুদ্ধকে আরাকান থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। প্রয়োজনে বার্মার সাথে যুদ্ধের হুমকি দিয়েছে।। যদি কখনো এ প্রশ্ন আসে, এ সংঘাতের প্রয়োজন ছিল কি না তার উত্তর পাওয়া যাবে ভবিষ্যৎ ইতিহাসে। এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি এমন যে চাইলেই মাটির ৩০০ ফিট নিচ থেকে নিচের দিকে ৪০ তলা ভবন নির্মান করা যায়। এসব বিল্ডিং পারমাণবিক বুম্বা কিংবা বাংকার ব্লাস্টার বুম্বা দিয়েও কিছু করা যাবে না।

মিশনারীদের পাশাপাশি এতে ভারত জড়িয়ে পড়ল কেন ও কিভাবে ? এতে ভারতের কি লাভ ? কি লাভ মানে ? বিরাট লাভ। যে দেশে এখনো ১০০ জনে ৬০ জন খোলা আকাশের নিচে মল ত্যাগ করে তাদের উন্নতির জন্য সবচে আগে দরকার টাকা। ইজরাইলকে এ অঞ্চলে ভুমি পাইয়ে দিলে নিজেদের ভুমি হারানোর ঝুকি থাকবে না কিন্তু টাকার পাহাড় পাওয়া যাবে। মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রের পার্বত্য সীমানাটা-ই তাদের সবচে অরক্ষিত এবং ভয়ের অঞ্চল। এখানে ইসরাইল থাকলে একটা মাছিও তাদের ধারেকাছে আসতে পারবে না। আবার পাকিস্তান, চায়নার মত শত্রু থেকে বাচার জন্য দরকার টাকা। আধুনিক ওয়ার লজিস্টিকস, ওয়ার নলেজ, প্র‍্যাক্টিস, ড্রিলিং, সারভাইভাল টেকনিক আয়ত্ব করা যা ভারত পেয়ে আসছে ১৯৯৮ সাল থেকে। ভারতের বিমান বাহিনী যথেষ্ট উন্নত নয়। যা কিছু আছে তার বেশিরভাগই সিনেমার ট্রেইলর ছাড়া বাস্তবে এক একটা উড়ন্ত কফিন। এই অবস্থা থেকে পশ্চিমা স্ট্যান্ডার্ডে যেতে তাদের লাগবে কমপক্ষে ৫০ বছর। এত বিরাট সময় অপেক্ষা করার মত ঝুকি ভারত নিবেনা। কিন্তু ইসরাইলের সাথে থাকলে লাল গাভী না পাক দোয়ানি ত পাওয়া যাবে ! নাকি ? ভারত যেমন রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা এস-৪০০ নিয়েছে তেমনি নিচ্ছে ইসরাইলের আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সহ বহু আইটেম। আরও পাচ্ছে সেসব চালানোর প্রশিক্ষন, স্পেয়ার পার্টস, মেনটেইনেন্স সহায়তা। অন্যদিকে সেই একই এস-৪০০ কেনার অপরাধে তুরস্ক অগ্রিম ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেও এফ-৩৫ বিমান প্রোগ্রাম থেকে বহিস্কার হল। বাড়তি হিসেবে পেল আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে এবং পরে ইউক্রেনকে নিরবিচ্ছিন্ন বায়েরাক্তার টিবি টু ড্রোন সরবরাহ করেছে তুরস্ক। আমারিকার মন পেতে হলে এটা তাদের করতেই হবে। বিনিময়ে আমেরিকা এফ-১৬ দেবার সবুজ সংকেত দিয়েছে। তারপরেও আমেরিকা দেম দিচ্ছি বলেও বিমান বা টাকা কোনোটাই দিচ্ছে না। দেবেও না। কেন দেবেনা ? কারন, তাদের ঈশ্বর থাকে ইসরাইলে। ইসরাইলের সবুজ সংকেত ছাড়া টার্কিরা এটা পাবে না।

Zakaria
Zakaria Chowdhury
শেষ চেষ্টা হিসেবে এরডোয়ান কয়েক হপ্তা আগে ইসরাইলের সাথে পুর্বের ঘনিষ্ঠতা ফিরিয়ে আনে। দুতাবাসগুলো খুলে দেয়। তুরস্কের পর্যটন ইসরাইলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। তাতেও লাভ নেই। এরডোয়ান মরা পর্যন্ত কিছু পাবেও না। অন্যদিকে আয়রন ডোম এবং এস-৪০০ উভয় সিস্টেম কেনার অপরাধে ভারত কি কোনো শাস্তি পেয়েছে ? পায়নি। কেন পায়নি ? ইসরায়েল আমেরিকা চায়নি। বরং রাশা – ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ৩০% রিডাকশন রেটে রাশিয়া থেকে ভারত অবিরাম তেল কিনেছে ইউ এসকে পাত্তা না দিয়ে। সেই তেল পরিশুদ্ধ করে তা গোপনে কেবল আমেরিকার কাছেই বিক্রি করেছে। আমেরিকা দুনিয়ার অন্য কাউকেই এই আকামের সুযোগ দেয়নি। চিন করতে পেরেছে কেবল নিজেদের জন্যে। তেল কেলেঙ্কারির এইসব কথা শুরুতে কোনো পক্ষই কাউকে জানাতে চায়নি। কিন্তু জানাজানি হয়ে যাবার পর এ নিয়ে অসন্তোষের ভান ধরেছে আম্রিকা। তারা নাকি জানতো না ভারত রাশিয়ার তেল বিক্রি করছে। মনে হল, ভারতকে – রাশিয়ার সাথে সংগম সুযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করছে খোদ আমেরিকা -ইসরাইল। বার্মার বাহিনী বুঝে গেছে তাদের আর করনীয় কিছু নেই। রাজ্য হারাতেই হবে। আমরা খুশিতে বগল বাজাচ্ছি। খোদ আম্রিকা আমাদের সাথে আছে এই ভেবে। ওরা একদিন বার্মায় ফিরে যাবে আমেরিকার চাপে-আমরা এ কথা বিশ্বাস করে বসে আছি। আচ্ছা রোহিংগাদের হাতে এম – ১৬ এসল্ট রাইফেল কারা সরবরাহ করছে ? এত দারুন অস্ত্র পেয়েও তারা নিজ ভুমিতে ফেরায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কেন দেখাচ্ছে না ? কারন দাতারা চায় রাইফেলের ব্যাবহার তাদের পছন্দের স্থানে হোক। সেই পছন্দের স্থানে খুনোখুনি শুরু হলে, সেখানকার সাধারন নাগরিকেরা প্রান বাচানোর তাগিদে হিলি এরিয়া ছেড়ে ডিপ এরিয়ায় চলে আসবে।
সন্তু লারমা সুখ পাবে এই ভেবে যে, যাক অবশেষে আমরা স্বাধীন হতে যাচ্ছি। এই স্বপ্নও গুড়িয়ে যাবে যখন দেখবে লারমার দল চার পাচ খন্ডে বিভক্ত হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এরা এখনই এক পক্ষ অন্য পক্ষকে সরাসরি শত্রু মনে করে। হাতের কাছে পাইলে খাইয়া দেয়। রোহিংগারা বিভিন্ন গ্রুপের হয়ে প্রক্সি যুদ্ধ করে যাবে। আফগান সাবেক ইউ এস সেনারা এখন ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে রাশিয়ার প্রক্সি হয়ে। এই রকম আকাশ কুসুম কল্পনা করেও একটা সেকেন্ড হোম অব ইসরাইল কল্পনা করা যায়। ধর্মগত কারনে ইহুদিরা এশিয়ার বাইরে যাবেনা। জিও লোকেশন হিসেবে এটাই দুনিয়ার সেরা নিরাপদ ছোট একটা দেশ হতে পারে। বিশ্ব পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা পুরো দুনিয়া শাসন করবে। এতো সুবিধা আর সবিতা ভাবী ছেড়ে কেউ যেতে চাইবে না রাশিয়ার পোড়া মাটিতে সেকেন্ড স্টেট বানাতে। সো অভিনন্দন ইসরাইল। আপনেরা সেরা। আপনেরা আজ যা করেন, আমরা তা কল্পনা করব ১০০ বছর পরে। কেন জানেন? আপনেরা তাবৎ দুনিয়ায় দুই হাজার বছর যাযাবরের মত সীমাহীন দুঃখ, দুর্দশা কাটিয়ে এসেছেন। আপনারা জানেন, কোন পরিবেশে কিভাবে জাতিকে রক্ষা করতে হয়। আমরা জানি, কিভাবে জাতিকে টেনে হিচড়ে অন্যের বউ বানাতে হয়। ক্ষমতায় থাকার জন্য যা যা করা দরকার তাঁর টেন্ডার ঠিক কাদের হাতে দিয়ে দিতে হয়।